বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র। যিনি এতো বড় উদার মনে এতো বড় ঘোষণা দিয়ে সবার ছাত্র হতে পারেন এতো বড় মনের পরিচয় দিতে পারেন - তাঁর মন কি এতোটা ছোট হতে পারে যে তিনি সবার কাছে ব্লাকমেইল করে প্রতিনিয়ত স্যার সম্বোধন নিতে চাইবেন? তিনি কি কর্মজীবনে কারো কাছে স্যার সম্বোধন শোনার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন নি? যে কারণে ব্লগারগণ তাঁকে স্যার বলতে হবে? নাকি তাঁর বিশেষ কেউ তাঁকে স্যার বলেন বলে ব্লগের সবাই তাঁকে স্যার বলতে হবে? বিষয়টি ভাবনার বিষয়। এটি নিয়ে ক্রমশ ব্লগে দানা পাঁকানো হচ্ছে তাই এর সমাধান ব্লগেই হওয়া উচিত বলে মনে করি। উক্ত ব্লগার তিনি বয়সে আমাদের অনেক অনেক জুনিয়র ভাই - যদিও আমরা ব্লগে সবাই সমান ও সমতা বলে বিশ্বাস করি। তারপরও ব্লগে তিনি যেই সাংঘর্ষিক উদ্যোগ নিয়েছেন এটি যে একটি ভুল উদ্যোগ তা ব্লগে জানানো প্রয়োজন মনে করছি।
আমার গত পোস্ট রোল নাম্বার ওয়ান লেখা থেকে ঘটনার সূত্রপাত। ব্লগের একটি নিক একটি আইডি ইয়াহু বা জিমেইল এর মতো নয় যে ইচ্ছে হলো নাম নিক পরির্তন করা সম্ভব। ব্লগে নিক পরিবর্তন করতে হলে ব্লগের হেড অব এডমিনের হাত ছাড়া নিক পরিবর্তন করা অসম্ভব। আমার ধারণা ভুল না হলে এটি ব্লগের হেড অব এডমিনের হাতে পরিবর্তন হয়েছে। এবং হেড অব এডমিন অবশ্যই মনে করেছেন এই নিক পরিবর্তন করার পেছনে যুক্তিযুক্ত কারণ আছে তাই তিনি সম্মত হয়েছেন। আমি বলার কারণে তিনি স্যার নিক হারিয়ে সর্বহারা হয়ে যাবেন এটি অবিশ্বাস্য।
ব্লগে এমনও হয়েছে নানান সময়ে আমাকে স্যার বলেছেন কমপক্ষে বিশ জন ব্লগার! - আমি সবার কাছে অনুরোধ করেছি - প্লিজ, আমি আপনাদেরই একজন। আমাকে স্যার বলতে হবে না। কর্মজীবনে আমি একদলকে স্যার বলেছি আরেক দল আমাকে স্যার বলেছেন। ব্লগে স্যার সম্বোধন শোনার জন্য আসিনি। আপনাদের মতোই এখানে লেখালেখি করি মাত্র। আর দশ জনের মতো আমিও আপনাদের একজন।
সকল ইংরেজী থেকে সঠিক বাংলা অনুবাদ হয় না। মিস্টার ও স্যারের অনুবাদগত পার্থক্য ও প্রয়োগ সঠিক শিক্ষিতজনই ধরতে পারেন এর জন্য প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা। অশিক্ষা বা কুশিক্ষা নয়। কর্মজীবনে সেনাবাহিনীর একজন কর্ণেল সাহেবের নেক্সট অব স্যার হচ্ছেন একজন ব্রিগেডিয়ার সাহেব। কোনো কর্ণেল কখনো লেঃ কর্ণেলকেও স্যার বলেন না। স্যার আসলেই এতো বড় বিষয় আন্তজার্তিক ক্ষেত্রে একমাত্র ব্রিটিশ রাণী স্যার পদবি দেওয়ার একচ্ছত্র অধিকার রাখেন। আশা করি স্যারের মর্যাদা ও মূল্য ব্লগারগণ বুঝবেন। আরো মজাদার তথ্য নিজের নামের আগে পরে কেউ মিস্টার বা স্যার লিখতে পারেন না। উদাহরণ: হাসান সাহেব নিজের নাম কখনো মিস্টার হাসান বা হাসান স্যার লিখবেন না। আমরা চিঠি লিখতে প্রাপককে উদ্দেশ্য করে মিস্টার বা নামের শেষে স্যার লিখে থাকি প্রেরকের ক্ষেত্রে কখনো নিজের নামে মিস্টার বা স্যার লিখার মতো ভুল বোকামি মূর্খতা করিনা।
চাঁদগাজী বলেছেন: এই খারাপ সময় আপনার নামের থেকে "স্যার" সরানো ঠিক হয়নি।
লেখক বলেছেন: স্যার শব্দ উচ্চারণে বাঙালীদের ইগুতে লাগে।
ইগু বা ইগো বিষয় নয়। তিনি ব্লগের কারো স্যার নন। ব্লগে অনেক কিছুই দৃষ্টির আড়ালে থাকে তিনিও দৃষ্টির আড়ালে ছিলেন - আজ আড়াই বছর পর তাঁর সমস্যা ধরার পর ইগু বা ইগো হয়ে যায়নি! তিনি বাঙালীর কাছে স্যার ছিলেন না - স্যার ছিলেন ব্লগারদের কাছে। সঠিক হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে যদি তিনি তাঁর কর্মস্থলে স্যার হতে পারেন - তখন আশা করি সকল ব্লগারগণ সত্যি সত্যি সেদিন তাঁর জন্য গর্ব অনুভব করবেন। উক্ত ব্লগারের সাথে আমার কোনো ব্যক্তিগত দ্বন্দ নেই, কখনো সম্ভবও না। তারপরও এই ধরনের কার্যকলাপ সত্যি সত্যি নিন্দনীয়। আমি আগেও বলেছি ব্যক্তিগত দ্বন্দ সহ যে কোনো প্রকার দ্বন্দের জন্য ব্যক্তিগত পরিচয়ে পরিচিত হতে হয়। ব্লগের কেউ কোনোদিন বলতে পারবেন না আমার সাথে কারো ব্যক্তিগত পরিচয় আছে। না পরিচয় নেই। আশা করি স্যার নিক হারিয়ে তাঁর লেখালেখি নিয়ে কোনো গতিহীন হবেন না। তিনি তাঁর মতো লিখে যাবেন। আমরা সকল ব্লগার তাঁর পাশে আছি সব সময়। তাঁকে স্যার বিহীন পুরাতন নিকে ব্লগে স্বাগতম। আশা করি স্যার সংক্রান্ত সকল জটিলাতার অবসান হয়েছে।
সম্প্রতি “আমাকে স্যার ডাকবা” নামে একটি নিক নিরাপদ হয়েছেন। তাঁকে ব্লগে স্বাগতম। তিনি একটি ফানি নাম নিয়েছেন। তিনি হাসান স্যার / স্যার আইডি বা নিক নেননি। আশা করি “হাসান স্যার / স্যার আর আমাকে স্যার ডাকবা” নিকের মাঝে আকাশ পাতাল পার্থক্য ব্লগারগণ বুঝতে পারবেন। আমাকে স্যার ডাকবা নিক একজন শিক্ষিতজন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: মুছে দেওয়া উক্ত পোস্টে যে দুজন দ্বন্দ করার জন্য দ্বন্দ লাগিয়ে তামাশা দেখার জন্য মন্তব্য করেছিলেন। তাঁদের বলবো - আপনাদের দুজনের অসুস্থতা সবাইকে জানানো ঠিক বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আপনাদের সুস্থতা কামনা করছি।
আত্মকথা: ছোট্ট কিন্তু বিশাল একটি মজার ঘটনা লিখে উপসংহার টানছি - ঈদের আগের দিন আনুমানিক রাত ১০:০০ ঘটিকায় একটি ফোন কল আসে আমার অফিসিয়াল সেলফোন নাম্বারে। আমি ফোন রিসিভ করে “স্যার” বলে কখন চেয়ার থেকে দাড়িয়েছি আমি নিজেও জানিনা। ফোন কলটি ডিরেক্ট কল ছিলো না, এটি অটো ভয়েস কল ছিলো। তিনি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ছবি: আঙুর
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: সামহোয়্যারইন ব্লগ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৪১