** পোষ্টটা কপি, শেয়ার, রি-পোষ্ট যা খুশি তা-ই করতে পারেন।
বাচ্চাদের অনেকগুলো রিফ্লেক্স ঠিক আমাদের মত শক্ত-পোক্ত না। তারা হাঁচি,কাশি দিতে পারলেও অনেক সময় তা তাদের শারীরিক গঠনগত নাজুকতার জন্য ঠিক উপযুক্ত পরিমাণ জোড় দিয়ে দিতে না পারায় তাদের উর্ধ্ব-শ্বাসতন্ত্র পুরোপুরিভাবে পরিষ্কার হয় না। অনেক সময় বাচ্চাদের নাকে ঘাম, দুধ, পানি বা অন্য যেকোন খাবার, ধুলোবালি ইত্যাদি জমে যায়। এছাড়া শরীরের স্বাভাবিক সিক্রেশনগুলো তো আছেই। তারা হাঁচি, কাশি দিয়ে কিছুটা পরিষ্কার করতে পারে, কিন্তু আমাদের মত করে তো আর নাক ঝাড়তে পারে না। আর নাকের ভেতরটা আমাদেরও খুব একটা খেয়াল করা হয় না। এসব জিনিস সেখানে থেকে আস্তে আস্তে নিচে নামে, ফুসফুসের ওপরের দিকে। বিশেষ করে বাচ্চা যখন খাবার পর পর শুইয়ে দেয়া হয়, বা অনেকক্ষণ ধরে ঘুমিয়ে থাকে, তখন। এসব সিক্রেশনে জীবানু জন্মানোর মত যথেষ্ট গ্লুকোজ এবং ভাইরাসের জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন থাকে। ফলে আস্তে আস্তে বাচ্চা শ্বাস-তন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়। যা পরবর্তীতে ঘন ঘন হতে থাকে এবং নিউমোনিয়া বা এজমার মত জটিলতার জন্ম দেয়। ঘাবড়ানোর কিছু নেই। প্রতিকার বা প্রতিরোধের পথ খুব সহজ। প্রতিবার খাওয়ানোর পর বাচ্চাকে অন্তত ২০ থেকে ৩০ মিনিট শোওয়াবেন না, খাড়া করে কোলে নিয়ে রাখুন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি বাচ্চার বুক আপনার কাঁধে হেলান দিয়ে পিঠে হালকা চাপড় দিয়ে দিয়ে কিছুক্ষন হাঁটেন। এতে অনেক বাচ্চা ঢেকুর তোলে, আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পড়ে। বাচ্চাকে শুইয়ে দিয়ে খেয়াল রাখুন নাক পরিষ্কার আছে কি না। টর্চ নিয়ে নাক খুঁচিয়ে হাঙ্গামা বাঁধানোর দরকার নেই, রুমের পর্যাপ্ত আলোতেই দেখা সম্ভব। মাঝে মাঝে দেখবেন বাচ্চার নাকে হাল্কা সর্দি বা সিক্রেশন জমে আছে। বাজারে Norsol Nasal Drop পাওয়া যায়। এটা তেমন হাতি-ঘোড়া কিছু না। নরমাল স্যালাইনের এম্প্যুল। এটা নিয়ে বাচ্চার নাকের ফুটোয় কয়েক ফোঁটা করে দিয়ে দেবেন। তখন সর্দিগুলো জমাট বাঁধবে না বরং গলে গিয়ে খাদ্যনালী হয়ে পেটে চলে যাবে, নাকও পরিষ্কার হয়ে যাবে। ৬ মাসের কম বয়সী বাচ্চাদের জন্য ৩/৪ ফোঁটা, এক বছরের নিচের বাচ্চার জন্য ৫/৬ ফোঁটা আর তার চেয়ে বড় থেকে শুরু করে আপনার জন্য ৮/১০ ফোঁটা। নাক পরিষ্কার না রেখে আপনি বাচ্চাকে যতই নেবুলাইজ করেন, এন্টি-বায়োটিক এবং ডাক্তার গুলে খাওয়ান না কেন, কাজ হবে না। আর বাচ্চাদের অযথা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খাওয়াবেন না। বিদেশী ওষুধ যত কম খাওয়াতে পারেন ততই ভালো। কারণ তারা আমাদের বাচ্চাদের গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করে তাদের ওষুধের কার্যকারীতা পরীক্ষা করে। যেমন আজকাল Gripe Water এর খুব চল, সত্যি কথা বলতে কি, থাইল্যান্ডে তারা তাদের বাচ্চাকে বিষ খেতে দিবে কিন্তু তবুও গ্রাইপ ওয়াটার খাওয়াবে না। এটা নিয়ে পরবর্তীতে আরো একটা লেখা লিখবো ইনশাল্লাহ। ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেয।