ড্রাকুলার কাহিনী লিখে বিখ্যাত হয়েছিলেন ব্রাম স্টোকার। রক্তচোষা বাদুড়কে নায়ক করে পৃথিবীর রহস্য সাহিত্যে তিনি অমর হয়ে আছেন। ১৮৯০ সালে তিনি লিখলেন ড্রাকুলার কাহিনী। আলোড়ন সৃষ্টি হলো সমস্ত পৃথিবীতে। এটা ছিল অস্টিয়ার ট্রানসালভানিয়ার এক গা ছমছমে কাহিনী। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় বইটি অনুবাদ হলো। প্রথম বছরেই বইটির ছয়টি সংস্করণ বের হলো। কথা হলো, ব্রাম স্টোকার শুধুমাত্র একটি গল্প বানিয়ে লিখেছিলেন, নাকি ড্রাকুলার অস্তিত্ব সত্যই ছিল?
এই রহস্যময় ড্রাকুলা কাহিনীর বীজ রয়েছে ইউরোপের স্ল্যাব জাতির কুসংস্কারের মধ্যে। স্ল্যাব জাতি বিশ্বাস করে যে, পাপী ও শয়তান লোকদের আত্মা রক্তচোষার রূপ ধরে পৃথিবীতে ফিরে আসে। রাতের ঘন অন্ধকারের ভেতরে কফিনের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে অশুভ আত্মা। বেরিয়ে এসে বাদুড়ের রূপ নেয়। তারপর উড়ে গিয়ে মানুষের গলায় রগ ফুটিয়ে দেয়। চুষে নেয় রক্ত। ভোরের আলো ফোটার আগেই আবার ঢুকে যায় কফিনের ভিতর।
ইতিহাস বলে, ড্রাকুলার মত এক ভয়ংকর চরিত্রের লোক ছিলেন ভলাদটেপেস।
ভলাদটেপেস।
তার জন্ম হয়েছিল ১৪৩২ সালে। পাহাড়ী অঞ্চল ট্রানসালভানিয়াতে। তার পিতা ছিলেন ওয়াল্লারচিয়ার শাসক। সেই স্থানটি এখন রুমানিয়াতে।
ড্রাকুলার দূর্গ।
রোমান ভাষায় ড্রাগনকে বলে ড্রাকুল। শত্রুর হাতে ভোলাদের পিতা নিহত হন। যুবক ভোলাদ সিংহাসনে বসেই প্রতিশোধ নেওয়া শুরু করেন। অজস্র তুর্কিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করলেন ভোলাদ। মানুষ হত্যা করার নানা ধরনের নিষ্ঠুর পদ্ধতি বের করলেন। তাকে বলা হত যমদূত। তীক্ষ্ণ অস্ত্র দিয়ে মানুষকে এফোঁড় ওফোঁড় ছিঁড়ে ফেলে তিনি আনন্দ পেতেন। এক অত্যাচারি শাসক হিসেবে তার নাম আতঙ্কের সৃষ্টি করেছিল। ১৪৭৬ সালে শত্রুদের হাতে তিনি নিহত হন। বুখারেস্টের কাছে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। কয়েক বছর পর তার কবর খুঁড়ে দেখা গেল, কবর শূন্য। তার কাহিনী ড্রাকুলার উৎস বলে অনেকে মনে করেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১১ দুপুর ১:৩৭