somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজনীতিতে অন্যরকম নজির

২৯ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রাজনীতিতে অন্যরকম নজির
বিশ্বের দেশে দেশে রাজনীতিবিদরা অবসরে গিয়ে নিজ নিজ পেশায় ফিরে যান। কেউ কেউ নতুন করে পেশা বেছে নেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন বক্তৃতা দেয়াকে। আর বক্তৃতা দিয়ে তিনি কামাচ্ছেন শত শত ডলার। অতি সম্প্রতি সাবেক হওয়া প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বর্তমানে অবকাশ জীবন কাটাচ্ছেন। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা না জানা গেলেও অবসরে বই লিখছেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ অবসরের পর শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডিধারী আহমাদিনেজাদ তেহরানের নারমাকের ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে অধ্যাপনা করতে যান পাবলিক বাসে চড়ে। আবার সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ব্যবসায় মনোযোগ দেন। পাশাপাশি বিভিন্ন
বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাজে যুক্ত থেকে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট এপিজে আবদুল কালামও অবসরে গিয়ে শিক্ষকতা পেশায় ফিরে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ ২২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ৭৭ বছর বয়সে অবসরে যান আধুনিক মালয়েশিয়ার জনক ড. মহাথির বিন মোহাম্মদ। চিকিৎসা পেশা থেকে রাজনীতিতে এলেও অবসরে গিয়েই তিনি আর সে পেশায় ফিরে যাননি। তবে মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে তার প্রচ্ছন্ন প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন বিশ্ব। আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুর রহমান বিশ্বাসকে বঙ্গভবন ত্যাগ করার পর মনে করা হচ্ছিল তিনি অবসরে যাবেন। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপি দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ করেন। বরিশাল সদর আসনে দলীয় মনোনয়নও কেনেন। যদিও তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়নি। আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এক অনাকাক্সিক্ষতভাবে বঙ্গভবন ছাড়েন। নিজ দলের তোপের মুখে তিনি প্রেসিডেন্ট পদ ত্যাগ করেন। এ এক অন্যরকম নজির। এ ঘটনার নেপথ্যে নানা কথা বাজারে চাউর রয়েছে। সেদিন সংসদ ভবনে সংসদীয় দলের সভায় দলীয় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে একাধিক এমপি নানা অভিযোগ আনেন। ওই সভায় প্রেসিডেন্ট পুত্র মাহী বি. চৌধুরীও ছিলেন। সভা থেকে বেরিয়েই মাহী তার পিতা প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরীকে ফোন করেন। সংসদীয় দলের সভায় আলোচনার আদ্যোপান্ত জানান। সেখানে বলা হয়, পদত্যাগ না করলে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সংসদে অভিশংসন আনা হবে। ঘটনা শুনে বি. চৌধুরী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বি. চৌধুরী বলেছিলেন এ জন্য বিএনপিকে পস্তাতে হবে। মনে করা হয়েছিল এরপর বি. চৌধুরী রাজনীতি ছেড়ে অবসরে যাবেন। অবশ্য কিছুদিন তিনি তার পুরনো পেশা ডাক্তারিকেই বেছে নিয়েছিলেন। এ অবস্থা বেশি দিন ছিল না। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিনি নতুন দল গঠনের ঘোষণা দেন। সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন তার পুত্র মাহী বি. চৌধুরী ও মেজর (অব.) আবদুল মান্নান। সে সময় সরকার তরফে বি. চৌধুরীর সমাবেশ প- করার প্রাণপণ চেষ্টা জাতি দেখেছে। আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদ। স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়ে এরশাদকে হটাতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন করতে হয়েছে। আর এ আন্দোলন ঠেকাতে রাজপথে চলেছে গুলির লড়াই। জীবন দিতে হয়েছে নূর হোসেন, ডাক্তার মিলনসহ অনেককে। দুই নেত্রীকে গ্রেপ্তারে এরশাদের কত যে কৌশল জাতি দেখেছে এর ইয়ত্তা নেই। ১৯৯০ সালে এসে গণআন্দোলনের মুখে তাকে পদত্যাগ করতে হয়। সেদিন গোটা জাতি নেমে এসেছিল রাজপথে। জাতিকে শান্ত থাকতে রেডিওতে মিনিটে মিনিটে দুই নেত্রী আহ্বান জানিয়েছেন। এরপর জেলেই ছিল তার বাস। জেলে বসেই দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। ১৯৯৬ সালের পর মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেন তিনি। এরপর তাকে নিয়ে কত যে ঘটনা তার ইতিহাস অনেক। বিদিশাকে নিয়ে সংসার। তালাক। নিজ বাসা থেকে লাফ দিয়ে বিদিশার আত্মহত্যার হুমকি। রওশন এরশাদের সঙ্গে দূরত্ব। রাজনীতির মঞ্চে তার নানা রঙ্গ জাতিকে হাসিয়েছে অনেক। তার জন্য ভেঙেছে কারও কারও সংসারও। অবসরে যাওয়ার ঘোষণার বদলে তার মুখ থেকে শোনা গেল আজীবন তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন। তার আশা তিনি আবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। শুধু তাই নয়, তার মৃত্যুর পর দলের দায়িত্ব কে নেবেন তা নিয়েও হয়েছে নানা কেলেঙ্কারি। এ জন্য দলে সৃষ্টি করেন কো-চেয়ারম্যান পদ। এ পদে বসান তার ভাই সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদেরকে। কিন্তু হায়! তার এ ঘোষণার পর জাপায় বিদ্রোহ দেখা দেয়। তারই স্ত্রী সাবেক ফার্স্টলেডি, বর্তমানে সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ বেঁকে বসেন। এ অবস্থায় এরশাদ তার চির নিয়ম অনুযায়ী আগের ঘোষণা থেকে সরে আসেন। দলে প্রথম কো-চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি করে রওশনকে বসান। ফের ঘোষণা দেন তার মৃত্যুর পর রওশন আর কাদের মিলে দল চালাবে। দেশে অবসরের রাজনীতির কালচার শুরু হয়নি বলেই এমন অবস্থা। এমনটাই মনে করেন সচেতন মহল।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৫
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×