somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আয়কর দেবেন না মন্ত্রী-সাংসদেরা!!!(ফাইজলামির আর সীমা নাইX(X()

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার ঠিক দুই দিন আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়ে দিল প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, সাংসদদের আয়কর দিতে হবে না। অথচ চলতি অর্থবছরের বাজেটে তাঁদের আয়কর দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছিল।
সাধারণ মানুষের জন্য জাতীয় বাজেটে দেওয়া প্রতিটি করপ্রস্তাব দ্রুত আইনে পরিণত হলেও প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী ও সাংসদদের বেতন-সম্মানী ও ভাতা আয়করের আওতায় আনার প্রস্তাব বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়নি এনবিআর। ফলে তাঁদের বেতন-সম্মানী-ভাতা বরাবরের মতো আয়করমুক্তই থাকছে। যদিও বাজেটে একই সময়ে পাস হওয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজেদের আয়কর দেওয়ার বিধান বহাল রাখা হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বাজেটে মানুষের হাততালি পেতে মন্ত্রী-সাংসদেরা আয়কর দেবেন বলা হয়েছিল। আর এখন চুপিচুপি একটি চিঠি দিয়ে আয়কর দেবেন না বলে দেওয়া হলো।’ তিনি আরও বলেন, ‘আসলে তাঁরা যে সাধারণ মানুষের মতো কর দিতে চান না, এনবিআরের এ চিঠি তারই প্রমাণ। সরকার কৌশলে তাঁদের বাধ্য করেছে এ ধরনের চিঠি তৈরি করতে।’
এনবিআর গতকাল বুধবার সংসদ সচিবালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে। এনবিআরের প্রথম সচিব (আয়কর নীতি) অপূর্ব কান্তি দাস স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, অর্থ আইন-২০১১-এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এ সংশোধনী আনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং সাংসদদের বেতন-সম্মানী-ভাতাকে করযোগ্য করা হয়েছে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর (সম্মানী ও ভাতা) অ্যাক্ট ১৯৭৫, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার (সম্মানী ও ভাতা) অ্যাক্ট ১৯৭৪, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী (সম্মানী ও ভাতা) অ্যাক্ট ১৯৭৩ এবং সাংসদ (সম্মানী ও ভাতা) ১৯৭৩—এ চারটি আইনেরই ৩ নম্বর ধারায় সংশোধনী আনা প্রয়োজন। এ জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো এখনো সংশোধিত না হওয়ায় ওই সম্মানিত ব্যক্তিদের বেতন-সম্মানী বা ভাতাদি আয়করমুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। তাঁদের বেতন-সম্মানী বা ভাতাদির ওপর ২০১১-১২ করবর্ষের আয়কর রিটার্নে কোনো আয়কর প্রযোজ্য হবে না। এ চিঠি পাওয়ার পর সংসদ সচিবালয় গতকালই সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিষয়টি অবহিত করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) সৈয়দ আমিনুল করিম গতকাল বুধবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, সাংসদদের বেতন-ভাতা-সম্মানী পৃথক চারটি আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। বাজেটে এসব গুরুত্বপূর্ণ পদের আয়কর দেওয়ার বিধান পাস করা হলেও সংশ্লিষ্ট আইনগুলো এখনো সংশোধন করা হয়নি। এ সংশোধনী না থাকায় তাঁদের আয়কর নেওয়া যাচ্ছে না। তবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়কর নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
গত ৯ জুন জাতীয় সংসদে পেশ করা ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেট উপস্থাপন করে বলেছিলেন, ‘বিভিন্ন মহল থেকে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও সাংসদদের সুবিধা বৈষম্যমূলক বিধায় এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার হিসেবে সবার ক্ষেত্রে আইন সমভাবে প্রয়োগের জন্য তাঁদের বেতন-ভাতাদির ওপর করমুক্ত সুবিধা প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে।’ অর্থমন্ত্রীর এ প্রস্তাব ৩০ জুন সংসদে পাস হয়।
অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ এনবিআরের নতুন চিঠি নিয়ে আরও বলেন, দেশে নাগরিকদের জন্য পৃথক আইন থাকতে পারে না। তাই অন্য আইনে যা-ই থাকুক না কেন, দেশের সব মানুষের আয়ই করযোগ্য হতে হবে। বছরে এক লাখ ৮০ হাজার টাকার বেশি আয় করলেই একজন নাগরিকের আয়কর দিতে হয়। অথচ মন্ত্রী ও সাংসদেরা প্রতি মাসেই প্রায় এ পরিমাণ আয় করেও কর দেবেন না, এটা অন্যায়। এ কারণে নাগরিকদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাবেক উপদেষ্টা ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আকবর আলি খান বলেন, সংসদে বাজেটে পাস হওয়ার পরও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইন না হওয়ায় সরকারের কাজের সমন্বয়হীনতাই প্রকট হয়ে উঠেছে। এটি ভালো নয়। তিনি আরও বলেন, সরকারি কর্মচারীদের আয়কর নিজেদের দিতে হলেও তাঁদের পুরোনো হিসাবেই বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এতে তাঁদের প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে।
সাংসদদের বেতন-ভাতা: একজন সাংসদ বেতন-সম্মানী-ভাতা মিলে মাসে এক লাখ ৫০০ টাকা পেয়ে থাকেন। এর বাইরে সাংসদেরা সরকারি বাসস্থানের আনুষঙ্গিক খরচের জন্য মাসিক চার হাজার টাকা ভাতা পান। সংসদ অধিবেশন চললে প্রতিদিনের জন্য একজন সাংসদ ৫০০ টাকা করে ভাতা পান।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীদের বেতন: রাষ্ট্রপতির মূল বেতন ৬১ হাজার ২০০ টাকা, প্রধানমন্ত্রীর ৫৮ হাজার ৫০০, স্পিকার ৫৭ হাজার, ডেপুটি স্পিকার ৫৩ হাজার ৭০, মন্ত্রীদের ৫৩ হাজার ৭০, সংসদ উপনেতার ৫৩ হাজার ৭০, চিফ হুইপের ৫৩ হাজার, হুইপরা পান ৪৯ হাজার ৪০০, প্রতিমন্ত্রীদের ৪৭ হাজার, উপমন্ত্রীদের ৪৫ হাজার ২০০ টাকা। এর বাইরে তাঁরা বাসাভাড়া, যানবাহন-ভাতা, আপ্যায়ন খরচসহ অন্যান্য ভাতা পেয়ে থাকেন।

*সুত্রঃপ্রথম আলো*
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×