গালাগালি নিয়া আলোচনা জমছে। বছর দুই আগে এই বিষয়ে লিখছিলাম। তারপর নদনদীখালবিলড্রেনে অনেক তরল বৈয়া গেছে। এই বছরের শুরুতে কিছু সুসিল তাত্ত্বিক কথাবার্তা দিয়া ছ্যাড়াব্যাড়া কইরা প্রমাণ করতে চাইছে, আসলে তাগো পক্ষে কোনমতেই ভদ্রচোদা মুখোশের বাইরে আসা সম্ভব না, গালি তারা দিতে পারে না, তারা সোমাজের বাঁড়া, সুতরাং তারা যা পারেনা সেই রুল খেলায় চলবো না ইত্যাদি। এই হাস্যকর দাবীর জবাবে আরো রসাইয়া আরো দুইটা গাইল ছাড়া আর কিছু দেওনের থাকে না। তাই দিছিলাম। কিন্তু পুরান ড্রেনের পানি অতিরিক্ত বিষাক্ত হইয়া যাওয়ায় গালি নিয়া নিজে আর কোন আলোচনায় যাই নাই। মধ্যপন্থা অনুসরণের সুবিধাবাদী লাইনরে নর্ম মনে করতে গেলে কোন আলাপই বেশীদুর আগানো যায় না। সেইটা তখন কৃত্রিম মধ্যবিত্তের হাস্যকর শুচিবায়ুর মধ্যে ঘুরতে থাকে।
গালি দেওয়া উচিত কিনা এইটা আসলে একটা অ্যাবসার্ড প্রশ্ন। কারণ গালি বিষয়টা জনসমাজে নিয়মিত অনুশীলিত একটা ক্রিয়া। আমি জনসমাজই কমু, কারণ যারা বুকে কিল মাইরা নিজেগো নাগরিক সমাজের সদইস্য কইতে চায় তাগো প্রতি করুণা হয়। আর তাগো মইধ্যে যদি সত্যি সত্যি কেউ নোয়াবের পুত হইয়া থাকে তাইলে তো গালি খাওয়া তার জন্য আরো ফরজ। কারণ তখন সে পুরাপুরিভাবে জনসমাজ বহির্ভুত। আরো রূঢ়ভাবে কইতে গেলে ঔচিত্য বিষয়টাই ধোঁয়াইট্টা।
জনগন গালি দেয়। সুতরাং গালি গণসংস্কৃতির আওতায় পড়ে। সেই গালির উৎপত্তি হইছে জনগণের সমাজ জীবনের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা থিকা। এই অভিজ্ঞতাই সেইখানে বুৎপত্তিগত তথ্য। ঐ অভিজ্ঞতা হওয়া উচিত কিনা সেইটা দিয়া সমাজতত্ত্ব-নৃতত্ত্ব কোনটারই আসলে কিছু আসে যায় না। উচিতের ফেউ উঠে পাওয়ার প্র্যাক্টিসের প্রশ্নে। তথ্যের উপর ঔচিত্য চাপানোর কাজটা করে রাষ্ট্র। সেইখানে সাধারণ ঔচিত্যবোধ বইলা কোন কিছুরে দাঁড় করানো যায় না। যখন কেউ বলে যে গালি দেওয়া ঠিক না কারন তাতে অমুকভাবে অমুক অপমানিত হয়, তখন বুঝতে হইবো সেই অমুক তার কেউ না কেউ লাগে, তারে গালি দিলে স্পীকার সাহেবেরও লাগে। অবস্থানটা রাজনৈতিক। যারা গালি দেয় তাগো অবস্থান যে রাজনৈতিক সেইটা গালি দাতারা কোনদিনই অস্বীকার করে নাই। নিজেরে নিরপেক্ষ দেখানোর ভঙ ধরে খারাপ শব্দ ব্যবহারের বিরুদ্ধে যারা জিহাদে নামে তারা।
নৃবিজ্ঞানের রেফারেন্সে মেইল শভিনিজমের কথা কইয়া এরা আরো ফাঁসে। “নারী”রে ভক্তিবস্তু বানাইলে তারা যে তাঁদের মানুষ পরিচয় থিকা আরো বেশী কইরা এলিয়েনেটেড হয় এইটা তখন আর তাগো চোখে আসে না। কারণ খারাপ শব্দ নির্ধারণের প্রশ্নে হ্যারা যেই মানদন্ড ব্যবহার করেন সেইটা শতকরা দুইশতভাগ পুরুষতান্ত্রিক। তারা কোন কোন ঐতিহাসিক ফেনোমেনা থিকা ঐ গালাগালি আইছে তার একরকম ডকুমেন্টেশান দিয়া পট কইরা সিদ্ধান্ত দিয়া দেয় সুতরাং এগুলা বলা খারাপ। বাদ পইড়া যায় এই শব্দগুলারে কে ক্যাম্নে ক্যান খারাপ শব্দ বইলা চিহ্নিত করছে, যেইসব ক্রিয়ার ধ্বনিরূপরে খারাপ শব্দ কওয়া হইতেছে সেইসব ক্রিয়ারে টাব্যু বানানোর পিছনে সেইসব রাষ্ট্রের কী উদ্দেশ্য ছিল। আলোচনা সেইদিকে বেশী বাড়াইতে গেলে পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে হাপসী বাইয়া কান্তে থাকাগো নিজেগো লুঙ্গী খইসা পড়বো। সুসিলরা কখনোই চায় না তাগো ছুডু পক্কু কেউ দেইখা ফালাক।