নাসের তাহরির স্কয়ারে এসেছেন গতকাল। লাখো মিশরির মতো তারও আশংকা ছিলো নির্বাচনের ফল ঘোষণা নিয়ে। সামরিক জান্তা আসলে কী চায়? কী আছে ৮ কোটি মানুষের ভাগ্যে? আদৌ গণতন্ত্রের সেই সোনার হরিণ কি ধরা পড়বে তাদের জালে? নাকি সেই পুরোনো ভুত আবার ঘাড়ে চেপে বসবে? বৃথা যাবে সহস্রাধিক শহীদের রক্ত? যারা এই তাহরির স্কয়ারেই প্রাণ দিয়েছিল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে? এক চরম অনিশ্চয়তার দোলাচল! শেষ হবে কখন? সময় থমকে গেছে যেন!
অবশেষে এলো সেই ক্ষণ, যার জন্য অপো শত বছরের! নতুন সুর্য্যের আভা দেখা উঠলো বলে! নির্বাচন কমিশনার ফারুক সুলতান ঘোষণা দিলেন, “নির্বাচনে মোহাম্মাদ মুরসিই বিজয়ী হয়েছেন! তিনিই আগামীকালের মিশরের প্রেসিডেন্ট!!” কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নাসের! এ কান্না তৃপ্তির। এ কান্না প্রাপ্তিরও। স্বাধীনতা প্রাপ্তির, এক রক্তাক্ত বিপ্লবের সুফল প্রাপ্তির। ভেঁজা কন্ঠে নাসের বললেন, “আজ আমরা সত্যিকারের স্বাধীনতা পেলাম।” পাশে থাকা আরেকজন দাবি করলেন, “এ বিজয় শতভাগ আমাদের, এ বিপ্লব শতভাগ আমাদের।” এ এক চরম সত্য। ‘এবসোলিউট ট্রুথ’। এ বিজয় শুধুই তাদের। ঐ লোকগুলোর, যারা সপ্তাহ-মাস ধরে সেনাবাহিনীর বল্পব্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিয়ে দিয়ে রাত-দিন কাটিয়েছে রাজপথে। তাদের প্রতি সালাম, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। আমরাও একদিন এভাবে লড়েছিলাম স্বাধীন একটা দেশের জন্য। পেয়েছিও তা। তবে এখনো বাকি আছে একটি লড়াই। একটি বিপ্লব। সেটি আমাদের অধিকারের অর্জনের লড়াই। তাহরির স্কয়ারের নাসেররা আমাদের শেখালেন কিভাবে সে লড়াইয়ে লড়তে হয়। আমরাও লড়বো তাদের মতো একদিন। স্বপ্ন দেখি, আমরাও সফল হবো।