কতদিন এমন খোলা আকাশ দেখিনা।উত্তর পশ্চিম আকাশের কোণে একখন্ড মেঘ ঘোড়ায় চড়া রাজপুত্তুরের মত করে নিরলস দাঁড়িয়ে আছে।দেখতে দেখতে তাও হারিয়ে গেল পিছনপানে।রেললাইনের কোলঘেষে যে রাস্তাটা চলে গেছে তারই উপর দিয়ে ঘোমটা টানা একজন মা তার ছোট্ট ছেলেটির হাত ধরে খুব জোরে পা চালাচ্ছে যেন আধার নামার আগেই সে তার নিরাপদ গন্তব্যে পৌছাতে পারে।রাস্তার পাশে বিস্তৃত ধানি জমি।একটু খেয়াল করতেই দেখলাম,ধানগুলি সব কেটে নিয়ে গেছে আর কর্তিত গোড়ার হলুদের কোল ঘেষে সবুজ আগাছা উকি দিচ্ছে।ফলে মাঠেজোড়া রয়েছে হলুদ আর সবুজের মাখামাখি।তারই মাঝে তিনটে বাধা গরু মনিবের ফেরার পথে উতসুক নয়নে চেয়ে আছে।
এই প্রথম নিজেকে নিয়ে বড্ড আফসোস হচ্ছে।ইশশ কেন যে ফটোগ্রাফার হলামনা!!তাহলে এই অপূর্ব মোহ জাগানিয়া দৃশ্যখানি ফ্রেম বন্দী করে নিতে পারতাম।
আহা যদি শিল্পী হতাম!!!!!!!!তাহলেওতো এই দিগন্তজোড়া মাঠ, এই গাছগাছালির ঘন আবাস, দীঘির কালোজলে ঢেউয়ের বিন্যাস কিংবা হারিয়ে যাওয়া সূর্যের বিরল দৃশ্যপট কল্পণার ক্যানভাসে ঠিক একে নিতাম।
যখন আমি এই না কবি না শিল্পীর দেশে ফেরারী হয় ফিরছি ঠিক তখনই এক অসহ্য বিষাক্ত ধোয়াটে গন্ধ আমাকে আচ্ছন্ন করে নেয়।আমি ছটফট করতে করতে বাস্তবে ফিরে আসি।আমার পাশে বসা ভদ্দরলোকের লেবাস পড়া মানুষটি তার নেশার কাঠিতে আগুন দিয়ে নিশ্চিন্তে তাতে সুখটান দিচ্ছে।আমি হাতে রাখা রুমাল দিয়ে নাকমুখ চেপে ধরি।কিন্তু রুমাল দ্বারা পিউরিফাইডকৃত এই ভয়াল মরণ বিষবাষ্প আমার নাসারন্ধ্রের ভিতর প্রবেশ করে।এত সহজেই এত সুন্দর পৃথিবীর মায়া ছাড়তে চাইনা বলেই দ্রুত জানালা দিয়ে মাথা গলিয়ে দেই।
প্রকৃতি উদার হস্তে তার বুকে আমায় ঠাই দেয়।তাইত এক ঝলকা বাতাস আমায় ছুয়ে যায়।আর তাতে আমি খুজে নেই মুক্তির আঘ্রাণ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




