বিজ্ঞানীরা পদার্থের গুনাগুন সম্পর্কে জানতে প্রতিনিয়ত গবেষণা করে চলছেন ।
উদেশ্য একটাই পরমানু (atom)দিয়ে গঠিত এই মহাজগৎ আসলে কি দিয়ে তৈরি তা বের করা।
আর এ উদেশ্য পূরণের জন্য তারা পরমানুকে প্রতিনিয়ত ভেঙে চলেছেন ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর অংশে।
আধুনিক বিজ্ঞানীদের নিত্যনতুন অত্যাধুনিক গবেষনায় এপর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে পরমানু গঠনের মৌলিক উপাদান গুলো নিয়েই আজকের এই পর্ব।
আমরা সবাই জানি বাহ্যিক বস্তু সমূহ অনু দিয়ে তৈরি
অনুকে ভেঙে ফেলে পাওয়া যায় পরমানু
পরমানুকে ভাঙলে পাওয়া যায় ২টি অংশ
ক)ইলেক্ট্রন
খ) নিউক্লিয়াস
নিউক্লিয়াসে থাকে
১)প্রোটন
২) নিউট্রন
৩)অন্যান্য বলবাহী কনিকা(যারা প্রোটন ও নিউট্রনকে একত্রে নিউক্লিয়াসে আবদ্ধ করে রাখে)
এইতো কিছুদিন আগ পর্যন্ত ধারণা করা হত এরাই পদার্থ গঠনের ক্ষুদ্রতম একক।অর্থাৎ এদেরকে আর ভাঙা সম্ভব না।
বিংশশতাব্দির শেষের দিকে এসে আধুনিক গবেষনাতে দেখা গেছে ইলেক্ট্রন মৌলিক কণিকা হলেও প্রোটন ও নিউট্রন মৌলিক কনিকা নয় বরং এরা কোয়ার্ক নামক কিছু সাব-এটমিক কনিকা দিয়ে সৃষ্টি।
কোয়ার্ক আবিস্কারের ফলেও পরমানুর সাধারণ গঠন সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারনা পল্টে যেতে থাকে।বর্তমান ধারনা অনুযায়ি পদার্থ ও প্রতি-পদার্থ নিয়ে আমাদের মহা জগতের সকলকিছু সৃষ্টি।
মুলতঃ সকল পদার্থ ও প্রতি-পদার্থ কে দু ভাগে ভাগ করা যায়
১) হেড্রন (মৌলিক কণিকা দ্বারা তৈরি জটিল যা নিউক্লিয়াস তৈরি করে)
২) লেপ্ট্ন (এরা সবাই মৌলিক কণিকা)
হেড্রন হল মৌলিক কণিকা ( কোয়ার্ক ও এন্টি কোয়ার্ক) এবং বলবাহী বোসন কণিকা গ্লুয়ন দিয়ে
তৈরি সেই সমস্ত কণিকা যারা অনান্য বলের সাথে আন্ত ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় অংশ গ্রহন করে
এরা দু্ই ধরনের
১)ব্যারিয়ন (এরা স্থিতিশিল কনিকা দুইয়ের অধিক কোয়ার্ক ও এন্টিকোয়ার্ক ও অনান্য বোসন দিয়ে তৈরি)
২) মেসন (এরা অস্থিতিশীল কণিকা কোয়ার্ক ও এন্টিকোয়ার্ক দিয়ে তৈরি)
মৌলিক কনিকা দের চার্জের ও ভরের উপর ভিত্তিকরে তাদেরকে দুভাগে ভাগ করা যায়
১)ফার্মিয়ন (সকল কোয়ার্ক এন্টিকোয়ার্ক ও লেপ্টন রা এই গ্রুপের সদস্য)
২)বোসন (সকল বলবাহী কণিকা তথা বোসন কণিকা এই গ্রুপের সদস্য)
আমরা আজকে ব্যারিয়ন ও মেসন নিয়া আলোচনা করব
যেহেতু এরা কোয়ার্ক ও এন্টিকোয়ার্ক দিয়া তৈরি সেহেতু প্রথমে কোয়ার্ক কি তা জেনে নেই
নিচের চিত্রটি খেয়াল করুন
ছবি বড় করে দেখতে ছবিটির উপরে ক্লিক করুন
এখানে কোয়ার্ক ও তার পাশাপাশি তার এন্টিকোয়ার্ক দেখানো হয়েছে
প্রকৃতিতে ছয় ধরনের কোয়ার্ক ও ছয় ধরনের এন্টিকোয়ার্ক আছে যাদের নামে যথাক্রমে
কোয়ার্কঃ এন্টি কোয়ার্ক
১)আপ (u) ১)এন্টিআপ
২)ডাউন (d) ২)এন্টিডাউন
৩)চার্ম (c) ৩)এন্টিচার্ম
৪)স্ট্রেন্জ (s) ৪)এন্টিস্ট্রেন্জ
৫)টপ (t) ৫)এন্টিটপ
৬)বটম (b) ৬)এন্টিবটম
কোয়ার্ক গুলো পদার্থ এবং এন্টি কোয়ার্ক গুলো প্রতি-পদার্থ তৈরি করে
ছবিতে anti-quark বোঝাতে নিয়ম অনুযায়ি সিম্বলের উপর bar চিহ্ন বসানো হয়েছে
যদিও কোয়ার্ক ও এন্টিকোয়ার্ক বোঝাতে বিভিন্ন রন্ঙের গোলক কল্পনা করা হলেও তারা আদতে বর্ণহীন।এখানে কালার গুলো কেবলমাত্র বৈশিষ্ট্য নির্দেশক বর্ণ ।
এরা মিলে মিশে তৈরি করে ব্যারিয়ন( proton and neutron etc.) ও মেসন।
নিছে কোয়ার্ক দিয়ে সৃষ্ট ব্যারিয়ন গুলোর গঠন গুলো দেখা যাক
ছবিটি বড় করে দেখতে এখানে ক্লিক করুন
পরের পর্বে থাকবে বিভিন্ন কোয়ার্কের সমন্বয়ে ব্যারিয়নের মৌলিক গঠন(পর্ব২) সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা।
কষ্ট করে পড়ার জন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ
আমার অনান্য লেখা
এন্টিম্যাটার প্রকৃতির এক আজব সৃষ্টি
কে বলেছে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সম্পুর্ন বিপরীত ধর্ম বিশিষ্ট বিকর্ষণ শক্তি নেই????
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১১ রাত ১:১৭