somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দোয়েল পক্ষিটি উড়িতে লাগিলো

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
সরসিজ আলীম_এর কবিতা





দোয়েল পক্ষিটি উড়িতে লাগিলো

মস্তকের উপর দুপুরটিরে নিয়া একেলা দোয়েল পক্ষি দৌড়াইতেছিলো তাহার একান্ত গ্রামের দিকে, গ্রামের দিকে দিকে পল্লবের তলার ছায়ারা লুকাইয়া ছিলো, লুকানোর বাহিরে যাহা রোদ্দুর ও ধবল বাঁশরি কিংবা পবন ও পুষ্পের পরাগ ওড়াউড়ি করে কিংবা খেলাধুলা করে, তাহারা সকলে জানিয়া গিয়াছিলো Ñ দোয়েল পক্ষিটি আসিতেছে তাহার আপন নিবাসের বক্ষে ঘুমাইতে, ঘুমানোগুলি পত্র লিখিতেছিলো, লিখিতেছিলো Ñ বক্ষে তব মস্তক রাখিয়া ঘুমাইবে আজিকে একটি দূরত্ব ছিলো, দূরত্ব ছিলোর বাহিরে দোল খাইতেছিলো গোলাকার গোলাভর্তি পূর্ণিমার চাঁদ, চাঁদের তলায় কতেক মনুষ্য-প্রাণী ক্ষেত হইতে ফিরিয়া জবান বলাবলি করিতেছিলো পরস্পর, পরস্পরের বাহিরে হাত ধরাধরি করিয়া দাঁড়াইয়া থাকিতে দেখিয়াছো এক ঝাঁক অক্টাভিও পাজ, মাহমুদ দারবিশ, কাহ্লিল জিবরান, রক্তাক্ত লোরকা আর আমাদের হুমায়ুন আজাদকে, আর সকলের মধ্যস্থানে রবীন্দ্রনাথ, এইবার পরস্পর হাত ধরাধরি গীত গাহিলো নানান ভাষায়, তবে তাহার একটাই সূর আর যথার্থতা দাঁড়াইবে... আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি..., গীতগুলি নিদ্রাতে গেলো, নিদ্রার বাহিরে যাহা জাগরণ, তাহাতে চড়িয়া কেবল রক্তাক্ত লোরকা গেলো সংসদ ভবনের মাঠে মাঠে, খড় কাটাকাটি দেখিতে লাগিলো, খড় কাটার বাহিরে কিছু নিদ্রামগ্ন মনুষ্যকে ট্রাক বোঝায় করিয়া ট্রাক ফেলিয়া আসিলো গো-খোয়াড়ে, গো-খোয়াড়ের গো-নিঃশ্বাসের ভাপ পাইয়া ঘুমানোগুলি লম্ফ দিয়া উঠিলো এবং দৌড়াইতে লাগিলো, অতঃপর তাহারা এস,এম সুলতানের দীর্ঘ ক্যানভাসে গিয়া ঢুকিলো, শিল্পী তাহাদের পৃষ্ঠদেশে মস্তকে হস্ত পরশ বুলাইয়া দিলো, মনুষ্যগুলি দুগ্ধ-অন্ন খাইতে পারিলো, পারিলোগুলি হৃরিষ্ট-পুরুষ্ট হইয়া উঠিলো, লোরকা বন্ধু অতিব প্রসন্ন হইলো।

দোয়েল পক্ষির চীৎকারে হুমায়ুন আজাদ মহাশয়ের ঘুম ভাঙ্গিয়া গেলো। তাহার প্রাণে সাধ জাগিলো বন-অরণ্য ঘুরিয়া দেখিবার, অরণ্যের ভেতরকার একটি সর্পকে বৃক্ষের শাখা ভাবিয়া হস্তে তুলিয়া লইলো, হস্তে লওয়া মাত্রই উহা যাদুর ছড়ি-রূপ ধারণ করিলো, ছড়িটি আত্মœপরিচয় দিতে প্রয়াসী হইলো, প্রয়াসী হইলো একদা মকবুল ফিদা হুসেনের হস্তের করতলগত ছিলো, হস্তে হস্তে ঘুরিতো, খেয়ালের বশবর্তী হইয়া হঠাৎ এক বর্ষণকালীন রজনীতে গহীন অরণ্য মাঝে ছুঁড়িয়া মারিয়াছিলো, ছুঁড়িয়া মারিয়াছিলো একটি ডাহুকের ডানায় চড়িয়া উড়িতে উড়িতে সাঁতার করিতে করিতে ভাসিতে ডুবিতে ডুবিতে আসিয়াছিলো বাংলার করুণ ডাঙ্গায়, ডাঙ্গায় উঠিবা মাত্রই একটি ক্ষুধার্ত সর্প ছড়িটিকে মস্তক হইতে পদ অবধি গিলিয়া ভক্ষণ করিলো, ভক্ষণটি সর্পের উদরে উদরে গড়াইতে লাগিলো বনজঙ্গল ব্যাপিয়া, ব্যাপিয়া ধিরে ধিরে সর্পকে আবার গিলিয়া ফেলিলো, গিলিয়া কেবল রাখিল সর্পের খোলসটুকু, খোলসটুকু ছড়িটির শরীরে চড়িয়া মশক ও মক্ষিকা মারিতেছিলো, মারিতেছিলোগুলি হুমায়ুন আজাদ মহাশয়ের হস্তগত হইয়া ঝরিয়া পড়িয়াছিলো, এইবার ছড়িটি দোয়েল পক্ষিকে সখা ডাকিলো, ডাকিলো দোয়েল পক্ষির ডানায় চড়িয়া একটি যাত্রিবাহি চলন্ত গাড়িতে উঠিয়া একটি তরুণীর পুচ্ছদেশ স্পর্শ করিয়া বসিল, আর দোয়েল পক্ষিটি এইবার ছড়িটির কাঁধে বসিল, তরুণীদিদির কেশ হইতে মস্তক হইতে ঘর্ম গড়াইতে দেখিলো, পক্ষিটি ঘর্মের ভেতরে পড়িয়া সটান গ্রীবা হইতে গড়াইতে গড়াইতে দিদির বক্ষের উপর লুটাইয়া পড়িল, পড়িলোর বাহিরে থাকিলো অক্টাভিও পাজ, কাহ্লিল জিবরান, মাহমুদ দারবিশ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, উহাদের নিদ্রা টুটিলো, টুটিলোগুলি তরুণীর বক্ষে বাজিল স্বপ্ন-সাধ, স্বপ-সাধ ঘর্ম ও বক্ষের ভেতর চক্ষের ভেতর উড়িতে লাগিল, মেয়ে গো, তুমি ঘর পাইবে বর পাইবে বলিয়া উহাদের অজর পঙক্তিমালা সারা জামানার সকল পক্ষির ডানায় উড়িতে লাগিলো, দোয়েল পক্ষিটি এইবার উড়িতে লাগিলো বাংলার ক্ষেতে মাঠে মাঠে ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:১৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লাইকা লেন্সে তোলা ক’টি ছবি

লিখেছেন অর্ক, ১৭ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৩০




ঢাকার বিমানবন্দর রেল স্টেশনে ট্রেন ঢোকার সময়, ক্রসিংয়ে তোলা। ফ্ল্যাস ছাড়া তোলায় ছবিটি ঠিক স্থির আসেনি। ব্লার আছে। অবশ্য এরও একরকম আবেদন আছে।




এটাও রেল ক্রসিংয়ে তোলা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কার গল্প জানেন ও কার গল্প শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩১



গতকাল সন্ধ্যায়, আমরা কিছু বাংগালী ঈদের বিকালে একসাথে বসে গল্পগুজব করছিলাম, সাথে খাওয়াদাওয়া চলছিলো; শুরুতে আলোচনা চলছিলো বাইডেন ও ট্রাম্পের পোল পজিশন নিয়ে ও ডিবেইট নিয়ে; আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাবাকে আমার পড়ে মনে!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৭ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২

বাবাকে আমার পড়ে মনে
ঈদের রাতে ঈদের দিনে
কেনা কাটায় চলার পথে
ঈদগাহে প্রার্থনায় ..
বাবা হীন পৃথিবী আমার
নিষ্ঠুর যে লাগে প্রাণে।
কেন চলে গেলো বাবা
কোথায় যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×