আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম - শালা বলে কি ? কবিতার বই দরকার ? তাও আবার রোমান্টিক কবিতার বই। ডাকাতের ছেলে কবি হয়েছে শুনলেও মানা যায় কিন্তু - ও কবিতার বই খোজে ? অবিশ্বাস্য একটা ব্যাপার । ভার্সিটির লাইফে যে পোলা সাইন্সের এর রোমান্টিক বই থেকে শুরু করে আজ কালকার হুমায়ুন এর ধারে কাছে ঘেষে নাই সে কিনা খোজে-------
আমিতো আকাশ থেকে পড়লাম- সমস্যা কোথায় ? ও কবিতার বই খোজে কেন ? চেপে ধরতেই বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। বন্ধু আমার প্রেমে পড়েছে, যে সে প্রেম নয় - একেবারে লাইলি-মজনু টাইপের। মেয়ে আবার ফেলনা নয়, হাল আমলের আর-জে(রেডিও জকি)। মিনিটি খানেক সময় লাগলো ধাতস্ত হতে। নির্বিশ স্টুডেন্ট লাইফ পার করে চাকরির চার বছরের মাথায় কি না প্রথম বারের মত প্রেমে পড়ল ? তাও আবার আরজের- পোলার সাহস আছে !
আপনারা হয়েতো বলবেন - প্রেমের কোন বয়স নাই। আমিও বলবো বয়স নাই, তাই বলে এত ভদ্র একটা ছেলে প্রেমে পড়বে, তাও আবার (ফটকা=বাচাল) আরজের ! আপানারা হয়তো ভৈরবের সেই চাচার কথা মনে করিয়ে দেবেন- কাকে আর ভালো বলি ? হুজুর ছেলে দেখে মেয়েটারে বিয়ে দিলাম, তারও দেখি ছেলে মেয়ে হয় ! হুজুরের ছেলে মেয়ে হতে পারে কিন্তু ওর প্রেমে পড়া অস্বাভাবিক, অন্তত্য আমি তাই বলবো! যদিও বড়রা বলেন- ফাদ পাতা ছিল বাসার খুব কাছে, উড়তে না উড়তেই ধরা পড়ে গেলাম !!!
ও জিপিতে চাকরি করে, চাকরির শুবাদে একটি ফ্রি মোবাইল হাতে থাকে। আর অবসরকে বিনেদনে ভরিয়ে দেওয়ার জন্য জিপির ২৮২৮টাকে বেছে নেয় ও। কথা বলতে থাকে অপরিচিত অনেক বঙ্গ ললনার সাথে । এর মাঝে এক আরজের সাথে কথা বলে ভালো লেগে যায়। আরজেরও ভালো লাগে তার মতো একটা োদাই ছেলেকে, কারন এরকম োদাই এখন বিরল। যাই হোক মোবাইল নাম্বার বিনিময় হয় আর শুরু হয় রাত জেগে প্যান প্যানানি ।
আরজে হওয়ায় মেয়েটার কন্ঠ স্বর আর কথা বলার স্টাইল স্বভবতই ভালো । ও গলতে শুরু করে মেয়ের স্বরচিত কবিতা শুনে । দুনিয়ার সব কবিতাই ওর কাছে আরজের মনে হয় । একদিন আড্ডায় কোন এক প্রসঙ্গে আমি গুরুর দুই লাইন আওড়াতে না আওড়াতেই সে আমাকে চেপে ধরে- এই কবিতা তুই কোথায় পেলি, এটাতো ওর লেখা কবিতা, ও আমাকে শুনিয়েছে ? আমি দুদিকে মাথা ঝাকিয়ে মুচকি হাসলাম(হে হে হে) ।
মাঝে মাঝে ওর কাছ থেকে ফোন পাই - অমুক এফ এম শোন ওর অনুষ্ঠান চলে, শুনতেছি বলে ওকে আশ্বস্থ করি। আমার আর বুঝতে বাকি থাকে না- জল অনেক দুর গড়িয়েছে। ফেস-বুকের অনিন্দ সুন্দর (ফটো ইডিটিং সফট এর কল্যানে) ছবি দেখে দুই জনে বোঝে - আমি ঠকি নাই।
যদিও কেউ কাউকেই দেখেনি তার পরও প্রেম আর শুধু কবিতা শোনানোর মধ্যে সীমাদ্ধ থাকেনা। প্রেম যে এখন হৃদয় থেকে শরীর মুখি বুঝতে পারি ওর কথা শুনে । “ আচ্ছা আমি যদি তোমার ওটা ধরি তোমার কেমন লাগবে ?” মেয়ে নাকি তাকে এটা বলেছে - এর মানে কি ? ও বুঝতে চায় আমার কাছ থেকে । আমি মনে মনে বলি োদাই থেকে গেলি ! মুখে বলি আরে গাধা তোর হাত ধরতে চাইছে- এটাও বুঝিস না ? দেখা করে ফেল । ওবলে দেখা যখন তখনই করা যায়, দিনের বেলায় ওদের বাসায় কেউ থাকে না, আমাকে যেতে বলে, আমার ভয় করে । আমি তাকে সাহস দিই। যদিও আমি কনফিউজড ।
অবশেষে তারা দেখা করে প্রিন্স প্লাজার সামনে- আমি দুরে দাড়িয়ে ওকে সাহস জোগায়। ফেসবুকে দেখা ছবির সাথে মেয়ের মিল খুজে পাইনা, বুঝতে পারি। ওরা নাস্তা করে আর আমি দুরে দাড়িয়ে আঙ্গুল চুশি। পরদিন সকালে ওর ফোন পাই। উদ্ভ্রান্তের মত আমাকে অনেক কথা বলে যায়। যার সারমর্ম হচ্ছে, মেয়ের যে সব কথা সে বুঝতে পারিনি এত দিন , গত রাতে সে সব কথা মেয়েয় বুঝিয়ে দিয়েছে। আর বাসায় যেতে বলার কারনটাও তার কাছে পরিস্কার । সাথে বোনাস হিসাবে মেয়ের পূর্বের প্রেমের (বিছানা পর্বের) বর্ননা শুনে সে অসুস্থ। ফলা ফল দুইদিনের লিভ এ্যাপ্লিকেশন সাথে মোবাইল নাম্বার পরিবর্তনের দরখাস্ত।
বিঃদ্রঃ সকল চরিত্র ঘটনা কাল্পনিক, কারো সাথে মিলে গেলে সেটা নিতান্তই দুর্ঘটনা।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:৪১