বাহারুলের মতন একটা পোংটা পোলা হজ্বে যাবো শুনতেই কেমন যেন লাগে। ইতরামি ফাজলামি থেকে শুরু করে বাদরামি সবকিছুতেই এক নম্বর। বছর খানেক হলো ছেলে আবার বিয়ে করেছে। বউ চাকরি করে সরকারি ব্যাংকে পোস্টিং ঢাকার বাইরে। সে হিসাবে ঢাকায় সে মোটামুটি একটা ব্যাচেলর জীবন যাপন করে।
পনেরো দিন পরপর সে বউএর সাথে ডেটিং-এ যায়। যদিও আমরা বলি রাত্রি যাপন সে এটা মানতে নারাজ কারন আর কিছুই না - ডেটিং এর মধ্যে একটা নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ গন্ধ আছে। যাই হোক সে ডেটিং বলুক বা অন্য কিছু সেটা আমাদের বিবেচ্য না। কথা হলো পনেরো দিনের এক শুক্র ও শনিবার তার সাথে আমাদের সিটিং বা আড্ডা হয় না। তার উপস্থিতি যে মিস করি ব্যাপার সেটা না ব্যাপার হলো তার বাসায় ঢুকে ইচ্ছা মতো আড্ডানোটা হয় না।
আগেই বলেছি আমাদের বাহারুল একটু পোংটা টাইপের। মাঝে মাঝে আড্ডার নামে সে হালকা পেয়াজের(পেয়াজের দোষ গল্প দ্রষ্টব্য) আয়োজন করে। আর আমরা যারা পেয়াজ খাইনা তাদের জন্য কোন ব্যবস্থা থাকেনা। কারন এটা নাকি সাপ্তাহিক পেয়াজ দিবস !!
মাঝে মাঝে পেয়াজ খাওয়া কিংবা তাসের নামে ঘুস খোর আমলাদের সাথে জুয়া খেলা খুব একটা দোষের কিছু না। এরম একটু আধটু পেয়াজ কিংবা জুয়ার দোষ কিংবা হালকা অন্য দোষ না থাকলে পুরুষ আবার পুরুষ হয় নাকি, এটা বাহারুলের কথা।
যাই হোক এরম টুক-টাক দোষ নিয়ে আমাদের হাফ ব্যাচেলর এর সঙ্গ ভালোই কাটতে ছিলো। কিন্তু ঝামেলা হইলো তার বউ যহন হেরে হজ্বে যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিতে বললো। বউ যেহেতু হোম মিনিস্টার হের কথাতো ফেলাই দেওয়া যায় না। আমাদের বল্লে আমরাও বল্লাম মাত্র একটা মাস কাটাই আয় এর পর আবার আগের মত হয়ে যাবে... ব্যাপারস না।
অনেকদিন বাহারুলের কোন খবর নাই। ফোন দিলে সুললিত কন্ঠের এক ভদ্র মহিলা মুলায়েম কন্ঠে অপরাগতা প্র্র্রকাশ করেন। ধরেই নিছি সে হজ্বে। হঠাৎ একদিন দেখি +৯৬ কোডের নাম্বার থেকে ফোন...
...হ্যালো
... দোস্ত আমি বাহারুল
.... কি ব্যাপার কোন খবর নাই কেন ??
.... বলছিলাম না হজ্বে যাচ্ছি।
..... ও, কেমন চলেতেছে
... ভালো, তবে একটা সমস্যা হয়ে গেছে। কান্না কান্না কন্ঠে বলে বাহারুল।
আমি জানতে চাই কি সমস্যা সে কাদো কাদো কন্ঠে যা বল্লো তার মমার্থ হলো ...
তার হজ্ব খুব ভালেই চলতেছিলো কোন সমস্যা নেই। থাকা খাওয়া কিংবা অন্য কোন সমস্যা। কিন্তু সমস্যা একটা শয়তানরে পাথর মারার সময়। সে কোন ভাবেই শয়তানের দিকে পাথর ছুড়তে পারেনা। যতবার পাথর ছুড়তে যায় তত বার মনে হয়; " আমি নিজেইতো বড় শয়তান এর দিকে কিভাবে আমি পাথর মারব ?" যত বার হাত উঠায় ততবার কে যেন তার হাত টেনে ধরে । কোন ভাবেই সে পাথর মারতে পারেনা। নিজেকে তার খুব অপরাধি মনে হয়। তার হজ্ব কাফেলার অনেকরে বলছে কিন্তু কোন সমাধান হইনি। অগত্যা আমারে ফোন দিছে।
সব কিছু শুনে আমি হেরে কইলাম
..... দেখ, এরশাদ কয়েকবার শয়তানরে পাথর মারছে আর তুইতো এরশাদের চ্যালা হওয়ারও অযোগ্য । এরশাদ পারলে তুই পারবি না ক্যান ??
বইলা আমি ফোন কেটে দিলাম। পরে সে আমারে এসএমএস কইরা জানাইছে ............ আমি পারছি !!!!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:৪৭