somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু শৈশব

১৩ ই মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্লাস ফোরে আমার এক বন্ধুর পকেটে একটা ছোট্ট নোটপ্যাডের মতো জিনিস থাকতো৷ টিফিন ব্রেকে ওকে দেখতাম, সেটার ভেতর থেকে ছোট কাগজের পাতা ছিড়ে হাতে ঘষছে। খুব অবাক হয়ে একদিন জানতে চেয়েছিলাম, জিনিসটা আসলে কী? মুসান্না ওর স্বভাবসুলভ হাসি হেসে বলেছিল, এই ছোট ছোট কাগজের মতো দেখতে পাতাগুলো আসলে সাবান। পানির নিচে হাতে ঘষলে রীতিমতো বুদবুদ উঠে ফ্যাঁনা হয়। আমার অবিশ্বাসী চোখ দেখেই বোধহয় সেই অদ্ভুত নোটপ্যাড থেকে দুটো পাতা ছিঁড়ে হাতে দিয়েছিল ও। দেরি না করে নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেছিলাম; হ্যাঁ, সত্যিই সাবান ছিল ওগুলো! করোনা ভাইরাসের কারণে যখন চারদিকে সাবান/স্যানিটাইজার নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে, তখন প্রথমেই আমার মাথায় এসেছিল, আচ্ছা, মুসান্নার ওই সাবান এখন পাওয়া যায় না?

ক্লাস থ্রিতে থাকতে আরেক বন্ধু, নিপুণ একটা খেলনা গাড়ির ভেতরের মোটর নিয়ে এসেছিল ক্লাসে। খুব যত্ন করে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে প্লাস্টিক বডি খুলে জিনিসটা বের করে ফেলা। সবাই খুব অবাক হয়ে হাতে নিয়ে দেখেছিলাম। আরও অবাক হয়েছিলাম, যখন সেই মোটরের সাথে তার দিয়ে দুটো পেন্সিল ব্যাটারি জুড়ে দিয়ে নিপুন একটা ছোট্ট প্লাস্টিকের ফ্যান ঘুরাতো। সন্দেহ হতো, নিউটন বড় বিজ্ঞানী নাকি নিপুণ? ওর কাছে অবশ্য এমন বিস্ময়কর যন্ত্রপাতির অভাব ছিল না কখনোই। একবার একটা হুকের মতো যন্ত্র ক্লাসে এনে নিপুণ দাবী করেছিল, যেকোন বই/খাতার বাইন্ডিং এর সুতোর সাথে যেই যন্ত্রটার মাথা স্পর্শ করালে মুহূর্তের ভেতর সুতো ছিড়ে যাবে। তা সে যত মোটা সুতোই হোক। আমার তিনটা বোর্ড বই আর কয়েকটা খাতার বাইন্ডিং এর দফারফা করে বাসায় ফিরেছিলাম সেদিন!

আমাদের স্কুল ক্যান্টিনে দুই টাকা করে বিশেষ এক ধরণের ডালপুরি পাওয়া যেতো। এখনকার মতো নামেমাত্র ডালপুরি না, ভেতরে মোটা ডালের পুর দেয়া বড়সড় সাইজের মচমচে পুরি। ক্যান্টিনে সিঙ্গাড়া ছিল, সমুচা ছিল, এমনকি বার্গার, হটডগ, প্যাটিস, পিজা সবই ছিল; তবুও বেস্টসেলিং আইটেম ছিল সেই ডালপুরি। টিফিনের আগে দু'হাতে গরম গরম ভেজেও ঠিকমতো সাপ্লাই দিতে পারতো না ক্যান্টিনের মামারা। সেই বিখ্যাত ডালপুরি চিবোতে চিবোতে একদিন আমার বন্ধু শাহরিয়ার ঘোষণা করেছিল, বড় হলে যখন ওর অনেক টাকা হবে, তখন একটা গোডাউন বোঝাই করে এই ডালপুরি জমিয়ে রাখবে ও। ইচ্ছেমতো খাবে সকাল-বিকাল।

এই প্রসঙ্গে 'টিফিন ক্যাপ্টেন' সম্পর্কে একটু বলে নেয়া দরকার। রোটেশনাল ভাবে প্রতিদিন আমাদের ক্লাসের দুজন ছাত্র টিফিন ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পেতো। তাদের কাজ ছিল খাতায় ছক কেটে পুরো এক পিরিয়ড ধরে বেঞ্চে বেঞ্চে গিয়ে টাকা তুলে সবার টিফিনের অর্ডার নেয়া। তারপর সেই অর্ডারের খাবার আনতে গিয়ে ক্যান্টিনে প্রায় আরেক পিরিয়ডের অর্ধেক সময় কাটিয়ে দেয়া। শুনতে বিরক্তিকর মনে হলেও এই টিফিন ক্যাপ্টেনের "দায়িত্ব" পালন করার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম।

তমালের কাছে একটা খয়েরি রঙের পেন্সিল শার্পনার ছিল, যেটাকে আমরা ডাস্টবিন কাটার বলে ডাকতাম। আগে সবসময় দেখে এসেছি, পেন্সিল শার্প করার সময় যাবতীয় ময়লা বাইরে পড়ে। কিন্তু তমালের সেই বিশাল আকারের শার্পনারে পেন্সিল কাটার সময় অবশিষ্ট অংশগুলো ভেতরেই জমা হতো! পেন্সিল বক্সের ভেতরের ডিজাইন করা অংশ অথবা এক টাকার কয়েনের ওপর কাগজ রেখে সেখানে পেন্সিল ঘষলে পুরোদস্তর স্কেচ ইমপ্রিন্ট হয়, এই বিস্ময়কর প্রযুক্তিও তমালের কাছে শেখা!

Lotte Color Gum নামের এক ধরনের ফ্লেভারড চুইংগাম বার ছিল আমাদের পরম আরাধ্য বস্তু। দীর্ঘসময় চিবানোর পর সেই চুইংগামের আমাদের জিহবায় সব রঙ লেপ্টে দিয়ে নিজে ফ্যাকাশে বর্ণ ধারণ করতো। আমাদের ভেতর কেউ কেউ তখন মুখ দিয়ে চুইংগাম ফুলানোর অদ্ভুত এক প্রক্রিয়া শিখেছে৷ সেই মহান কীর্তি দেখে আমাদের তাক লেগে যেতো, ঘরে ঘরে শুরু হয়েছিল তুখোড় প্র‍্যাক্টিস। নীলয় প্রথমবারের মতো বিগ বাবল নামের এক ইন্ডিয়ান চুইংগামের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল আমাদের৷ গোলাপি রঙের সেই ছোট ছোট চারকোণা চুইংগাম সাধারন গামের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ফুলে উঠতো!

কালার পেন্সিল অথবা মোমরঙ নিয়ে আগ্রহ নেই, এমন বাচ্চা-কাচ্চার অস্তিত্ব সম্ভবত পৃথিবীতে হয় না। আমরাও ছিলাম; স্টেডলার অথবা ফেবার ক্যাসেলের সিক্স কালার/টুয়েলভ কালার অথবা ফিফটিন কালার পেন্সিলের প্যাকেট আমাদের ব্যাগে অথবা টেবিলের ড্রয়ারে রাখা থাকত পরম যত্নে। এই কালার পেন্সিল/প্যাস্টেলের বক্সে যে পয়ষট্টি+ রঙের জিনিস থাকতে পারে, সেটা প্রথমবার জেনেছিলাম বন্ধু জয়ের কাছে ফেবার ক্যাসেলের প্রিমিয়াম একটা সেট দেখে। ওর জন্মদিনে চাচা/মামা কেউ একজন জিনিসটা উপহার দিয়েছিলেন। শুধু গোলাপি রঙেরই যে পাঁচ রকমের শেড হয়, জীবনে প্রথমবারের মতো জেনেছিলাম সেদিন। আমার মতো আর সবারও চোখ কপালে উঠে গিয়েছিল রঙের বাহার দেখে। আর ওদিকে জয়ের মুখে তখন বিজয়ীর হাসি!

প্রাণ জ্যুসের প্লাস্টিকের বোতলের সাথে ডিজনির বিভিন্ন কার্টুনের স্টিকার পাওয়া যেতো। যত্ন করে ডায়েরির পাতায় সেগুলো লাগিয়ে স্টিকারের অ্যালবাম বানাতাম আমরা৷ মেরিডিয়ান চিপসের সাথে পাওয়া যেতো ট্যাজো নামের অদ্ভুত সব কাগজের চাকতি। রীতিমতো প্রতিযোগিতা করে সেগুলোর স্তূপ বানিয়ে ফেলেছিলাম সবাই মিলে। ম্যাগি নুডুলসের ফ্যামিলি প্যাকের সাথে পাওয়া যেত কাগজের থ্রিডি পাজল। উড়োজাহাজ, যুদ্ধবিমান, টাইটানিক জাহাজ, পাইরেট শিপ, আইফেল টাওয়ার-আরও কত কিছুর মডেল বানানো যেতো সেসব দিয়ে। আমি বানাতে গিয়ে ভেঙে ফেলতাম, আর অবাক হয়ে দেখতাম তানভীর তন্ময় এর কাঁচের আলমারিতে কী চমৎকারভাবে ওগুলো যত্ন করে সাজানো! হাউজ অফ দ্য ডেড নামের জম্বি কিলিং গেম যে সমানতালে মাউসের পাশাপাশি কিবোর্ড ইউজ করে দু'জন একসাথে খেলা যায়, বাচ্চাকালে সেই মহান সত্য জানতে পেরেছিলাম তন্ময়ের কাছেই৷

আমাদের ছোটবেলায় সবচেয়ে টানটান উত্তেজনার খেলাগুলোর ভেতর একটা ছিল পেনফাইট। স্কুলে, কোচিংয়ে এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে বাসায়ও দেদারসে চলতো পেন ফাইট কনটেস্ট। গেমের নানারকম নিয়ম-কানুন ছিল, ইজি-মিডিয়াম-হার্ড লেভেল ছিল, এলিমিনেশন রাউন্ড ছিল, চ্যাম্পিয়নশিপ ছিল। ম্যাটাডোরের মতো কলম তখনও বাজারে আসেনি। সেলো, মনটেক্স, রেনল্ড, রেডলিফ - এসব কলম দিয়ে তুখোড় পেনফাইটিং চলতো। সেলো গ্রিপারকে এক্ষেত্রে অনারেবল মেনশন দিতেই হবে। কেউ কেউ বাসা থেকে ভারি মেটালিক পেন অথবা পাইলট জেলপেন নিয়ে আসতো; অতঃপর সেদিনের মতো সে হয়ে যেতো অপ্রতিরোধ্য চ্যাম্পিয়ন। সেইসব কলমের সামনে অলিম্পিক ফাইন, মন্টেক্স হাই স্পিড, ইকোনো ডি এক্স পালকের মতো উড়ে যেতো এক ধাক্কায়। কয়েকটা কলম থেকে রাবারের গ্রিপ খুলে একটা কলমে লাগিয়ে বিশেষ ধরণের হার্ড কনসিসটেন্সি ওয়ালা কাস্টম ডিজাইনড কলম বানিয়ে ফেলতাম আমরা। প্রতিদ্বন্দী নানা কৌশল অবলম্বন করলেও, সেই গ্রিপ লাগানো কলম সহজে মাটিতে ফেলা যেতো না!

ম্যাটাডোর কোম্পানির কলম সহজলভ্য হওয়ার পর একটা ঝামেলা হয়েছিল অবশ্য। ওই কলমগুলোর প্লাস্টিকের ক্যাপের সাথে লাগানো হাতলের মতো অংশটাকে বাঁকিয়ে টেনে ধরে কারও হাতে/পায়ে লাগালে প্রচণ্ড ব্যথা লাগতো। ক্লাসে অসতর্ক অবস্থায় ঠুস-ঠাস সেই নিনজা টেকনিকের গুঁতোর সাথে মোটামুটি সবাই পরিচিত। সেই টেকনিককেই গায়ের জোরে এবং গোপনীয় বিশেষ পন্থায় আরও বেশি পেইনফুল করে তুলেছিল আমাদের বন্ধু ওয়াহিদুজ্জামান জাহিদ। এমনকি তার নামেই জিনিসটার নামকরণ করা হয়েছিল 'ওয়াহিদুজ্জামান জাহিদের টেস্টি হজমি।' (স্কুলে জাহিদের একটা নাম ছিল, পাব্লিকলি বলা যাবে না। সরকারি চাকুরীজীবী মানুষ, মাইন্ড করলে বিপদ!)

ইকোনো ডি এক্স কলম চুলায় পুড়িয়ে, সেটার পেছনে ফু দিয়ে যে রঙিন বেলুনের মালা বানানো যায় - এই শিক্ষা পেয়েছিলাম অমিত নামের এক বন্ধুর কাছে। একটা কলম পুড়িয়ে সেখান থেকে এত সুন্দর জিনিস কীভাবে বের করা যায় আমার অথবা অমিত- কারও মাথাতেই আসতো না!

স্টিলের স্কেল দিয়ে মারামারির ঘটনা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। ধরা যাক, তলোয়ারের মতো করে স্টিলের স্কেল ধরে মারামারি করছে দুই বন্ধু, সেখান থেকে অসাবধানতাবশত কারও গায়ে লেগে গেলো; ব্যস, লঙ্কাকাণ্ড শুরু। মারামারি হবেই। এসব কারণে একসময় আমাদের স্কুল থেকে স্টিলের স্কেল ব্যান করা হলো। কাঠের স্কেল আমরা সাধারণত নিতাম না, কারণ স্যারদের প্রিয় অস্ত্র ছিল এই কাঠের স্কেল। বাসা থেকে নিজের একটা জিনিস স্কুলে নিয়ে গেলাম, তারপর কোন আকাম কুকাম করলে সেই স্কেল দিয়েই মার খেতে হলো- কোন মানে হয়?

ক্লাস থ্রিতে থাকতে প্রথমবার এক রকম প্লাস্টিকের স্কেল দেখেছিলাম, সেটার ভেতরে সম্ভবত লিকুইড গ্লিসারিন দেয়া। রঙিন গ্লিটার দিয়ে বানানো অনেক রকমের মাছ, তারা আর ছোট ছোট মুক্তোর মতো অংশ সেই গ্লিসারিনে ভাসতো। দেখে মনে হতো গোটা একটা সমুদ্র। ওই ধরনের স্কেলগুলো আমাদের কাছে খুবই বিস্ময়কর বস্তু হিসেবে ধরা দিয়েছিল। পালা করে সবাই কিনতে শুরু করেছিলাম তখন।

বিশেষ ধরনের কিছু পেন্সিল পাওয়া যেতো তখন। প্লাস্টিকের রঙিন বডির ভেতরে ছোট ছোট প্লাস্টিকের মাথায় শিষ বসানো বারোটা অংশ। ভেতরে একটার পর একটা সাজানো থাকে। ওপরের শিষ শেষ হয়ে গেলে, সেটা খুলে নিচ দিয়ে ঢুকালেই দ্বিতীয় ক্রমে সাজানো শিষ ওপরে উঠে আসতো৷ একই ধরনের রঙিন রাবারও বেরিয়েছিল তখন! এই পেন্সিল/রাবারের সমস্যা ছিল, একটা টুকরো হারিয়ে ফেললে পুরো জিনিসটা বাতিল!

পেন্সিল-ইরেজার-শার্পনার-জ্যামিতি বক্স-পেন্সিল বক্স-কালার পেন্সিল : এইসব জিনিস নিয়ে আমাদের ফ্যাসিনেশন ছিল সবচেয়ে বেশি। আমাদের স্কুলের নিচে ফেনলি লাইব্রেরি নামের একটা স্টেশনারি শপ ছিল, তাদের খুব ভালোভাবেই জানা ছিল কীভাবে আমাদের মাথা আরও খারাপ করা যাবে! সবুজ রঙের কি যেন একটা কোম্পানির Hb/2b পেন্সিল পাওয়া যেতো সেখানে। বিশেষত্ব? পেন্সিলের কাঠ থেকে দারুণ সুঘ্রাণ আসতো ওগুলোর। যতদূর মনে পড়ে, এই বিশেষ পেন্সিলের খোঁজ মিলেছিল নিপুণের কাছ থেকেই। গোল করে ঘিরে ধরে আমরা একে একে শুঁকে দেখেছিলাম, সত্যিই সেন্টেড উড! ফেনলিতে নানানরকম আকৃতির ইরেজার পাওয়া যেতো। বাদাম, লেবুর স্লাইস, মরিচ, বাবল গাম, বিড়াল, ফুটবল - সেগুলোতে ব্যবহার করা হতো আলাদা আলাদা ফ্লেভারড ফ্রেগ্রেন্স। সেই ইরেজার নিয়ে আমাদের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। ব্যবহার করার চেয়ে জমাতাম বেশি, হারালে আবার মুখ কালো করে ঘুরে বেড়াতাম।

বিরাট আকারের ইংরেজি M লেখা এক ধরনের লাল-সাদা জ্যামিতি বক্স আমাদের সবার কাছেই থাকতো তখন। ওপরে একটা বাচ্চা ছেলের ছায়া অবয়ব, কম্পাস ধরে কিছু একটা আঁকছে। এর বাইরে কার কাছে যেন একটা ইয়াবড় সাইজের জ্যামিতি বক্স দেখেছিলাম, যেটা দেখতে অবিকল একটা ক্যাসেট প্লেয়ারের মতো ছিল। বিভিন্ন সুইচ টিপলে সেটা আবার তিনটা আলাদা ভাগে ভাগ হয়ে যেতো। সেই জ্যামিতি বক্সে লাইট জ্বলতো, মিউজিক হতো; ভেতরে কম্পাসই ছিল চার রকমের। হিংসায় জ্বলেপুড়ে মারা সেই জ্যামিতি বক্সের মালিকের নাম মনে করতে পারছি না, কী আশ্চর্য! আরেকজন কার কাছে যেন একটা রেসিং কার পেন্সিল বক্স ছিল। সেই বক্সের নিচে চারটা চাক লাগানো, পুরোপুরি খেলনা গাড়ির মতো চালানো যেতো!

চার/পাঁচ লিটারের ওয়াটার ফ্লাক্স নিয়ে স্কুলে আসতো তকি। সবুজ রঙের সেই ফ্লাস্কের মাথা খুললে আবার পুরোদস্তর একটা হাতলঅলা চায়ের কাপ। সেই কাপে ঢেলে খুব আগ্রহ সহকারে আমরা পানি খেতাম। ছুটির ঘণ্টা বাজলে দল বেধে সুর করে আওড়াতাম, 'ছুটি ছুটি, গরম গরম রুটি। এক কাপ চা, সবাই মিলে খা!'

সাজি নামে আমার এক বন্ধু ছিল, ক্লাস ওয়ানে পড়ার সময় একটা হলুদ রঙের প্লাস্টিকের ছোট্ট লিপজেলের মতো জিনিস নিয়ে স্কুলে আসতো ও। কাউকে ধরতে দিতো না, মাঝে মাঝে এদিক-সেদিক তাকিয়ে নিজে খুলে দেখতো। অনেক রকম ওয়াদা করিয়ে আমাকে জিনিসটা দেখিয়েছিল ও। নিচের অংশে চাপ দিয়ে কাগজের ওপর চেপে ধরলে নীল রঙের মিকি মাউসের ছবির ছাপ পড়ে। আমরা দুজন বেশ গবেষণা করেও বের করতে পারিনি, সেই অদ্ভুত কালিবিহীন বস্তু এমন জাদুর ছাপ কীভাবে ফেলে?

একটু বড় হয়ে বন্ধু তানভীরের কাছে প্রথমবারের মতো ম্যাকগাইভার নাইফ নামের এক অবাক করা জিনিস দেখেছি। ছোট্ট একটা নেইল কাটারের মতো দেখতে জিনিস, অথচ ভেতরে কয়েক লেয়ারে ভাজ করে রাখা বিভিন্ন শেপের স্ক্রু ড্রাইভার, ছুরি, কাটাচামচ, প্লায়ার্স, ইত্যাদি ইত্যাদি। একটা ছোট্ট জিনিস এত কাজের হতে পারে, আমাদের ধারণাও ছিল না। তখনকার দিনে ওইটুকুই আমাদের কাছে ছিল হাই-টেক গ্যাজেট!

প্রথম ক্যামেরাঅলা মোবাইল এনে আমাদেরকে হতবাক করে দিয়েছিল সাদ। দেশজুড়ে তখন হলুদ/সবুজ লাইট জ্বলা ফোন, বড়দের কারও কারও হাতে মাত্র কালার ডিসপ্লে ওয়ালা ফোন আসতে শুরু করেছে। আমাদের যুগে ক্লাস এইটে মোবাইলের মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখার দুঃসাহসও কারও ছিল না বোধহয়। ব্যতিক্রম সাকিব, যদ্দূর মনে পড়ে বাংলালিংকের প্যাকেজ অফারের একটা কমলা লাইটঅলা মোবাইল ছিল ওর। রাসনা কোলা নামে যে একটা পাউডারড ড্রিংক পাওয়া যায় এবং সেটাকে পানির সাথে গুলে বাসায় প্রায় কোকাকোলার মতো সফট ড্রিংক বানানো সম্ভব, এই মূল্যবান তথ্য সাকিবের কাছ থেকে পাওয়া।

আমাদের ছোটবেলায় ইন্টারনেট তো সহজলভ্য ছিলই না; এমনকি সেটা কি জিনিস, সেই ব্যাপারে ধারণাও ছিল না অনেকের। যাদের বাসায় ইন্টারনেট ছিল, তেলতুল মেরে অনেক কষ্টে গানের সিডি রাইট করিয়ে নিয়ে আমরা হেভি মেটাল/ র‍্যাপ/ হিপহপ মিউজিক শুনতাম। মৌচাক/টুইনটাওয়ার/নিউমার্কেটে কয়েকটা দোকানে সিলেক্টেড কিছু এমপিথ্রি সিডি পাওয়া যেতো, টাকা জমিয়ে সেগুলো কেনা প্রায় ঈদের আনন্দের শামিল। আমাদের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল শুনে শুনে বিভিন্ন র‍্যাপ অথবা ইংরেজি গানের ভার্স মুখস্থ করা। বিশেষ করে Linkin Park এর গানের কথা বলতেই হয়, খাতার পেছনে গোটা গোটা অক্ষরে লিরিক্স লেখা থাকতো তখন। বাংলা গানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবের কথা বলতে গ্বলে হাবীব ফিচারিং কায়া "কৃষ্ণ" এলবামের কথা বলতে হয়, রিমিক্স কনসেপ্টের সাথে পরিচয় এর মাধ্যমেই। Stoic Bliss এর "আবার জিগায়" আমাদের জেনারেশনকে বাংলা র‍্যাপ মিউজিকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল যখন, মুখে মুখে একই গান। ক্লাসের ফাঁকে খাতায় লিখে লিখেও রাইম প্র‍্যাক্টিস চলতো সমানতালে!

ক্লাস সিক্সে Pokemon Card নামের এক নেশার সাথে পরিচয় ঘটে বন্ধু ঈশানের কল্যাণে। আমি এই বিষয়ে তেমন কিছু জানতাম না, শুধু দেখতাম, গ্রুপ করে পোকেমন কার্ড জমাতো ওরা। সেখানে রেয়ার কার্ড থাকতো, সেগুলোর কী কী যেন আলাদা পারপাজ ছিল- এখনও জানি না। তবে যে পরিমাণ উত্তেজনা আমি পোকেমন কার্ড কালেক্টরদের ভেতর দেখেছি, ভালো কিছু না হয়ে যায়ই না! আরেকটা কথা, পেন ফাইটিং এর জগতে বেশ কিছু নিয়ম নির্ধারক এবং চ্যাম্পিয়নদেরও একজন আমাদের এই ঈশান। (বিঃদ্রঃ ক্লাস সিক্সে থাকতে আমাকে ঘাড় ধরে হ্যারি পটার পড়িয়ে নেশাগ্রস্ত করার পেছনেও ঈশানই দায়ী)।

আমাদের স্কুলের বিশাল মাঠের একপাশজুড়ে লাল রঙের ছোট্ট ছোট্ট ঝোঁকায় ধরা ফুলের গাছ ছিল। কে যেন হঠাৎ আবিষ্কার করেছিল, সেই ফুলের ভেতর সুতোর মতো হলুদ রঙের একটা অংশ থাকে। আর সেই সুতোটাকে টেনে বের করে ফুলের গোড়ায় মুখ লাগিয়ে টানলে মধু বের হয়। অবিশ্বাসী মনে আমরা সেই বিশেষ গাছের ফুল মুখে দিয়ে দেখেছিলাম। একবিন্দু মিথ্যা নয়, সত্যি সত্যি শিশিরবিন্দুর মতো স্বচ্ছ দুই-এক ফোটা মধু বেরিয়ে আসে। এক সপ্তাহের ভেতর সমস্ত ফুল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছিল নাম না জানা সেই ফুলের গাছগুলো!

শবে বরাতের সময় তারাবাতি, আতশবাজি এবং পটকা ফোটানোর একটা ট্রেডিশন চালু ছিল তখন। সেসব জিনিসপত্র জনসম্মুখে বিক্রি করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা ছিল বোধহয়, স্কুলের সামনে কেউ বিক্রি করতে আসলে দারোয়ান বেশ ঝামেলা করে তাড়িয়ে দিতো। কিন্তু নিষিদ্ধ কাজ না করলে আর মজা হলো কোথায়? আমাদের বেশ কিছু বন্ধুবান্ধবকে দেখা যেতো, শবে বরাতের আগের সপ্তাহে পূর্ণ গাম্ভীর্য বজায় রেখে গোপনে তারাবাতি/আতশবাজির সাপ্লাই দিচ্ছে। এলাকার পরিচিত সাপ্লায়ারের থেকে এসব জিনিস কিনে আলাদা করে বিক্রি করার পর দুই/চার টাকা লাভও থাকতো ওদের। লাভ-ক্ষতি পরের ব্যাপার, এই এডভেঞ্চারের আনন্দটাই মুখ্য।

নাবিস্কো, বিঙ্গো মিল্ক ক্যান্ডি, কোকোলা জেমস,আর লাভ ক্যান্ডির ছড়াছড়ি ছিল তখন। চকলেট বার বলতে ছিল কমলার ছবি দেয়া মিমি আর গরুর ছবি দেয়া আজিজ ডেইরি মিল্ক চকলেট। দুই এক টাকার ট্যাটুঅলা বাবল গামের পাশাপাশি দামি চুইংগাম হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিল ছোট্ট ছোট্ট চারকোণা স্পাউট গামের প্যাকেট। সর্বোচ্চ দামি চকলেট বলতে কিটক্যাট, পার্ক, পিকনিক, সাফারি অথবা মাঝখানে ফুটোঅলা পোলো। চার আনা থেকে দশ টাকার এই প্রাইস রেঞ্জের বাইরে যে অনেক রকমের বিদেশি ক্যান্ডি, চকলেট, চুইংগাম পাওয়া যায়, সেটা বুঝতাম স্কুলের বাইরের নির্দিষ্ট কিছু ফেরিওয়ালাদের বাক্স দেখে। কালার পপ নামে এক বিশেষ ধরণের ফ্লেভার্ড সুগার পাউডারের কথা মনে পড়ছে এই মুহূর্তে। প্যাকেট খুলে জিহবায় ঢাললেই সেটা পটকার মতো ঠাসঠাস করে ফুটতো। কী আশ্চর্য ব্যাপার!

খুব ছোটবেলায় তুষার একবার প্যাকেটে করে বিদেশি গামি বিয়ার জেলো আর কার্টুনে দেখা চ্যাপ্টা স্পাইরাল ডিজাইনের ললিলপ নিয়ে এসেছিল ক্লাসে। সেই বস্তু আমাদের কাছে পুরোপুরি নতুন, অদ্ভুত তার গন্ধ, আরও অদ্ভুত তার স্বাদ। একটু একটু করে ভাগ করে খাওয়া হয়েছিল সবাই মিলে। এরপর অনেকদিন, তুষারকে দেখলেই সেইসব অদ্ভুত ক্যান্ডির গন্ধ পেতাম আমরা!

পোষ্য হিসেবে মুরগির বাচ্চা বিক্রির ট্রেন্ড প্রথম শুরু হয়েছিল আমাদের সময়েই। চার/পাঁচ টাকা করে হলুদ রঙের ফার্মের মুরগির বাচ্চা পাওয়া যেতো, ঝাঁকায় করে বিক্রি হতো স্কুলের সামনে। দশ টাকা করে বিক্রি হতো কালো রঙের দেশি মুরগির বাচ্চা। ঝোঁকের বশে সবাই কিনতো, বাসায় নিয়ে যেতো, যত্ন করে খাঁচায় রাখতো। দু'-একটা বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া, কারো মুরগির বাচ্চাই এক/দুই সপ্তাহের বেশি বাঁচেনি।

স্কুলের গেটের বাইরে এক গোঁফঅলা মামা ভ্যানে করে গোলাপ ফুলের মতো করে আমড়া কেটে বিক্রি করতেন। ছুটির পর সবাই ভিড় করে সেখান থেকে ঝালমরিচ মাখানো আমড়া কিনতো। বিশেষ বিশেষ সময়ে সেখানে সাজানো থাকত আস্ত বেলের ভেতর কাঠি ঢুকিয়ে বানানো টক-ঝাল বেল ভর্তা, বরইয়ের আঁচার। পলিথিনের লম্বা প্যাকেটে করে এক ধরনের ছাই-কয়লার মতো পোড়া পোড়া গন্ধঅলা গুড়ো হজমি পাওয়া যেতো তার কাছে। খেতে ভালো না, কিন্তু অনেকেই দেখতাম খুব শখ করে খাচ্ছে!

আমড়ার ভ্যানের পাশে ছিল বেশ কয়েকজন "ফুচকা মামা"। ছোটবেলার স্মৃতির কারণেই হোক আর সত্যি সত্যি স্বাদের কারণেই হোক- পাতলা পাতলা ফুচকার ভেতর তেতুল আর আলু-মটরের পুর দিয়ে যে ফুচকা আমরা স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে হইহুল্লোড় করে খেতাম, সেই ফুচকার স্বাদ পরবর্তীতে আর কোথাও পেয়েছি বলে মনে পড়ে না। বড় এলুমিনিয়ামের গামলায় সাজিয়ে রাখা তেল, মশলা, লেবু, পেঁয়াজ, চানাচুর, ঘুগনি; বস্তায় ভরা মুড়ি, ম্যাজিশিয়ানের মতো নিমিষেই ঘেটেঘুটে ঝালমুড়ি বানিয়ে ফেলার কারিগর ছিলেন কয়েকজন। তার পাশে ঝাঁকায় ভরা চার রকমের বাদাম বুট, এক কোনায় স্তূপ করে রাখা পাপড়, আরেকদিকে হাওয়াই মিঠাইয়ের মেশিনে চোখের সামনে বানানো গোলাপি রঙের মিষ্টি তুলো। যেই এলাকার যেই স্কুলই হোক, সামনের ফুটপাত জুড়ে এইসব স্ট্রিট ফুডের প্রাচুর্য থাকবে না, তা অসম্ভব। আমার তো মনে হয় শত শত বছর ধরে এই ব্যবসায়ীরা টিকে আছেন; সময় স্থির করে রেখে, শুধু রূপ বদলে হাজির হচ্ছেন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। তা না হলে সেই একই স্বাদ, সেই একই কোলাহল, সেই একই আবেগ এর জন্ম হয় কীভাবে?

আমার ধারণা, ছোটবেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেই জিনিসটা আমরা হারিয়ে এসেছি, তা হলো আমাদের নির্দোষ বিস্ময়, সহজেই অবাক হওয়ার ক্ষমতা! সেই সময়টায় আমাদের তেমন কোন চাওয়া-পাওয়া ছিল না, ছিল শুধু চোখ ভরা কৌতূহল। খুব সহজে আমরা খুশি হতাম, খুব অল্পতেই চিরস্থায়ী আনন্দ দাগ কেটে যেত আমাদের মনের ভেতর।

অথচ এখন আর খোকা ঘুমোলে পাড়া জুড়ায় না, কানাবগির ছাঁয়েরা বাস করে না তালগাছের মাথায়। বাঁশবাগানের মাথার ওপর সেই আগের মতোই চাঁদ ওঠে, কিন্তু শোলক শোনায় না কাজলা দিদি। নোটন নোটন পায়রাগুলো পেখম মেললেও আমরা চোখ মেলে দেখি না, কাকের দল আসে না আর দুধ মাখা ভাত খেতে! মায়ের সোনার নোলকের মতো আমাদের সেই বিস্ময় কোথায় হারালো, বলতে পারেন?
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×