somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বন্ধু এবং আমি:DB-):):P

০২ রা আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এই ছবিতে আমি নেই.......

সেই হাইস্কুলের কাহিনী। আমরা ছিলাম দুই বন্ধু খুব খেলা পাগল............ বিশেষ করে ক্রিকেট। মাঝে মাঝে এমনও হয়েছে শুধু এই খেলার জন্য স্কুলে যাওয়া হয়নি। সারাদিন পড়ে থাকতাম খেলার মাঠে। দুই জনের বাড়ি ছিলো পাশাপাশি। খেলাধূলা করে বাড়ি ফেরার পরে কাপ্তাই লেকের পানিতে গোসল। কম করে হলেও পানির ঘাটে থাকতাম এক ঘন্টা। আর আমাদের এলাকার পানির ঘাটটি একটু মাঠ আকৃতির হওয়াতে সেখানে আবার খেলাধুলা শুরু করে দিতাম। আর পানিতে গোসল করতে খুব ভালো লাগতো। কারন পানির নিচের মাটি বালিময়। কোন কাদা উঠার সুযোগ নেই। আর শুধু হেটে হেটে যাওয়া যেতো অনেক দূর (যখন কাপ্তাই লেকে পানি কম থাকতো)। অনেক সময় এমনও হতো পানিতে গোসল করতে করতে গায়ের চামড়ায় কুসকিয়ে যেতো। আর পানিতে যতক্ষন থাকি ততক্ষন কেবল শান্তি। পানি থেকে উপরে উঠলেই প্রচুর ঠান্ডা লাগতো। বেশি পানিতে থাকার কারনে এই অবস্থা। তাই আর উপরে উঠা হয় না।

আমরা দুইজন মিলে ঘুরে বেড়াতাম রাঙ্গামাটির পুরো শহর। হয়তো এমনও হয় শুধু কয়েক ঘন্টার মাঝে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়াতাম। বসে থাকতাম দুইজন মিলে লেকের পাড়ে। কাটিয়ে দিতাম ঘন্টার পর ঘন্টা গল্প করে। হয়তো ছটে যেতাম বর্শি নিয়ে, গুলটি দিয়ে নামতাম শিকারে। পকেটে থাকতো ছোট্ট ছাকু। আম কাঠাল খাওয়ার জন্য। আর আমরা দুইজন মিলে খুব কমই আম কাঁঠাল পারার পর নিচে নামাতাম। হয়তো এমনও হয় আম/কাঁঠালের বোটা গাছের সাথে নিরবিচ্ছিন্ন রেখেই সেখানে সাবাড় করে পেলটাম। শেষে গিয়ে আম কাঠালের শুধু কঙ্কালটায় রেখে আসতাম গাছে।


হয়তো মাঝে মাঝে নামটাম নৌকা নিয়ে। ঘুরে বেড়িয়ে আসতাম অনেক দূরে। মাঝে মাঝে দিয়ে আসতাম পাহাড় ভ্রমন। সবকিছুই আ্যাডভ্যান্সারের মতো মনে হতো। আবার মাঝে মাঝে হানা দিতাম ইক্ষু ক্ষেতে। গিয়ে ঢুকতাম একদম ক্ষেতের মাঝে। যেন মালিক বুঝে উঠতে না পারে। মালিক আমার চাচা। চাইলেই দেই। কিন্তু চুরি করার মজাই আলাদা ছিলো তখন। আর বিকালে গিয়ে চাচার কাছে গিয়ে শুনে আসতাম চুরির ঘটনা। শুনে আমরা দুই বন্ধু মিলে নানান ধরনের প্রশ্ন করতাম। আর গভীরভাবে চিন্তা করতাম আসল কে চুরি করেছে। তারপর শেষে গিয়ে কয়েকজনের নাম পেশ করতাম, আসলে কে চুরি করতে পারে।

এভাবে আরো নানান ভাবে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতাম। লেখাপড়াও ঠিকমতো করতাম। কারন জানতাম লেখাপড়া ফাঁকি দিলেই ধরা খাবো। আমার বন্ধুর মাথা তীক্ষ্ণ হওয়ার কারনে ওর তেমন পড়া লাগতোনা। আর আমি সারা রাত কষ্ট করে বসে থাকতাম পড়ার টেবিলে। মোটামুটি আমাদের দুইজনের দিনকাল ভলোই যাচ্ছিলো।

কিন্তু তারপরেও আর বাঁচা গেলো না। গ্রামের লোকজন আমাদের দুইজনের ব্যাপারে বাড়িতে নালিশ দিতো। আমরা নাকি সারাদিন ঘুরে বেড়াই। যেখানে যায় সেখানে নাকি আমাদের দেখা মিলে। আর বেশি ঘুরাফিরা করার কারনে আমাদের খাবারের টাইমও হারিয়ে ফেলি। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জিনিস খাওয়ার ফলে বাড়িতে রুচিহীন হয়ে পড়ি। সারাদিন রোদে থাকর ফলে দুইজনেরই গা শুকিয়ে কঙ্কালের মতো হয়ে গেছে। তাই একদিন আমাদের দুই পরিবার মিলে ঠিক করলো আমাদের দুইজনকে আর একসাথে ঘুরতে দেওয়া হবেনা। সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়, দুইজনেকে যেখানেই দসেখানেই যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আর সে সিদ্ধান্তে বাধ্য হয়ে আমরাও মাথা নাড়লাম।

এবার শুনে কে কার কথা। স্কুলে যাওয়ার পর আমরা দুই বন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা আর এলাকায় একসাথে ঘুরে বেড়াবো না। আর দুইজনের কেহই খেলা থেকে দূরেও থাকতচাই না। তাই খেলাধূলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। দুইজনের মাথায় বুদ্ধি আসলো, আমরা ঠিক করবো কে কখন বাড়ি থকে বেড় হবে, আর এলাকার বাইরে গিয়ে কোথায় অপেক্ষা করবে। হয়তো সে আগে গিয়ে অপেক্ষা করতো, নয়তোবা আমি। আর মিলিত হওয়ার পরে দূর এলাকার বন্ধুদের সাথে খেলাধূলা করে আসতাম। ফেরার পথেও আসতাম দুইজন আগে পরে করে। ফলে বুঝার উপায় ছিলো না যে আমরা একসঙ্গে ছিলা। দুইজনের যে একজন আগে আসতাম তাকে জবাব দিতে হতো বাকিজনকে দেখেছে কিনা। আর আমরা এমনভাব ধরি যেন দুইজনের সাথে সেই কবে কথা হয়েছে আর কথা হয়না। মূখের উপরে একটা কথা বলে দিই যে তারাইতো আমাদের দুইজনকে আলাদা করে দিয়েছে, আমাদের দেখা হবেই বা কেমন করে।


আজকে আমরা দুই বন্ধু দুই জায়গায়। সে আছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর আমি আছি ঢাকায়। এখন দেখা হয় খুব কমই। মাঝে মাঝে কথা হয় মোবাইলে। এখন যার যার লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত আসি। বন্ধ হলেও একসাথে বন্ধ হয়না। আবার হয়তোবা আমার কাজ বা টিউশনির কারনে যাওয়া হয়না।

তবে যখনি দেখা হয়, দুই জনের হাত ছাড়াছাড়িই হয়না। শুরু করে দিই পুরানো পাগলামি।

বন্ধু আমার ভালো থেকো। শুভ হোক বন্ধু দিবস।

সামু ব্লগের সবাইকে বন্ধু দিবসের শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৩৫
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×