somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিতৃত্ব । ( এজাবত যত লেখকের লেখা পড়েছি তার ভিতর সেরা একটি গল্প। ) ১ম

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

টুকটাক অনেক গল্পই পড়েছি । অনেক দিন আগে এই গল্পটা পরেছিলাম । কয়েক মিনিট নিজের দম বন্ধ হয়ে দেছিলো । অবাক লাগছিলো খুব ।
আপনাদের সাথে তাই আজ ভাবলাম শেয়ার করি । আশা করি ভাল লাগবে সবার । লেখক ঃ রাজিব নুর ।
কেমন লাগলো কমেন্টে জানাবেন আশা করি , মিলিয়ে দেখবো আপনাদের সাথে অনূভূতিটা । :P
একবারে পুরোটা দেওয়া স্মভব হলো না তাই খন্ড করে দিলাম ।

১ম খন্ড ঃ


মা¬লতিপাড়া মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ আবদুল মোতালেব আলী হাজতে। নিজের মেয়েকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে।
হাজতে আনার একদিন পরই তাকে আদালতে হাজির করিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল।
আদালত সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আজ তার হাজতবাসের ষষ্ঠদিন, রিমান্ডের পঞ্চমদিন।
এর মধ্যে ওর নিজের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের কেউ তাকে দেখতে আসেনি।
আজ প্রথমবারের মতো যে দেখতে এসেছে, সে তার কেউ নয়, হওয়ার কথাও নয়।
কান্দাপাড়ার রমলা মাসি কারো কিছু হয় না। অথচ সবাই তাকে চেনে।
যারা ওই পাড়ায় যায়, তারা এবং যারা ভুলেও ওমুখো হয় না, তারাও। সবাই জানে রমলা মাসির নাম।


রমলা মাসিকে থানায় দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে পুলিশের লোকজনও। অবশ্য রমলা মাসির হাত যে অনেক লম্বা জানা আছে তাদের।
তাই দায়িত্বরত সাব-ইন্সপেক্টর হাজতখানা থেকে মোতালেবকে বের করে পাশের রুমে এনে মাসির সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কনস্টেবলকে।

হাজতখানাটি আয়তাকার। সামনে তেরো শিকের লোহার দরজা। এরপর আরো একটি লোহার দরজা রয়েছে।
দরজার ফাঁক দিয়ে সামান্য বাতাস আসে, যা মোতালেবের মতো আরো হাজতবাসীর সহায় হয়েছে।
একমাত্র টয়লেটের ছাদ দেয়াল পর্যন্ত ঠেকানো হয়নি, অর্ধেক তোলা। তার ওপর দিয়ে দুর্গন্ধ হাজতখানার ভেতরে আসতে থাকে। টয়লেটের ময়লা যাওয়ার নালাটাও খোলা।

আজান দেওয়া মোতালেবের পেশা হলেও মসজিদ কমিটির দেওয়া মাসিক তিন হাজার টাকাই তার একমাত্র ভরসা নয়।
তার বাবা ছিলেন সম্পন্ন গেরস্ত এবং তাকে একমাত্র উত্তরাধিকারী হিসেবে রেখেই তিনি পরলোকগমন করেছেন।
ফলে তাকে হাজতের মতো এত খারাপ অবস্থায় কখনো দিনাতিপাত করতে হয়নি।
এর মধ্যে খাবার-দাবারের কষ্ট করতে হচ্ছে তার। কয়েকদিন ধরে বারবার ডাক পাঠিয়েও জিনদের কাউকে উপস্থিত করতে না পারায় ওরাই খুনটা করেছে, এমন ধারণাটা আরো পোক্ত হয়েছে তার মনে।
খুন না করলে তার ডাকে সাড়া না দেওয়ার আর কী কারণ থাকতে পারে?
মোতালেব নিজেই অন্য একটি কারণ খুঁজে পায়, তার মনে হয়, বাথরুমের দুর্গন্ধ জিনদের আসতে নিরুৎসাহিত করছে।

যেদিন তাকে পুলিশ ধরে আনল, সেদিনও দু-দুবার জিনেরা এসেছিল তার কাছে। বিকেলে জিনদের একজন পিরালি এসেছিল তাকে সাবধান করার জন্য।
অন্যজন শেরালি এসেছিল মাগরিবের নামাজের পর, তখন সে পুলিশের হাতে আটক হয়ে গেছে। শেরালি এলো তাকে অভয় দেওয়ার জন্য।



বিকেলে পিরালি মোতালেবকে বিপদ আসন্ন জানালেও বিপদের স্বরূপ সম্পর্কে কোনো ধারণা দিতে পারেনি।
তবু মোতালেব বুঝতে পারে, ঝামেলাটা করবে পুলিশ। তাই প্রথমে ঠিক করে ইমাম সাহেব ফিরে এলেই সে পালাবে।
ইমাম সাহেব প্রায়ই তার ওপর আজান দেওয়া থেকে জামাতে ইমামতি করার দায়দায়িত্ব দিয়ে পাশের গ্রামে অবস্থিত নিজের বাড়িতে ঘুরে আসতে যান।
ওইদিনও ইমাম সাহেব বললেন, ‘মোতালেব, আমি বাড়ি থিকা একটা ঘুরান দিয়া আহি।
তুমি আসর আর মাগরিবের নামাজটা চালাইয়া দিও।’

পুলিশ আসবে তাকে ধরতে, এটা বুঝতে পারলেও তখনই পালানোর প্রয়োজন বোধ করেনি মোতালেব।
কারণ, সে পুুলিশকে কখনই মাঝরাতের আগে আসামি ধরার জন্য আসতে দেখেনি।
তবু মাগরিবের পর পালানোর প্রস্তুতি হিসেবে ব্যাগ গোছাতে শুরু করে।
তাকে ব্যাগ গোছাতে দেখে মেয়েদের একজন এসে জানতে চায়, ‘আব্বা, কই যাবেন?’


মেয়ের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া তো দূরের কথা, ফিরে তাকানোরও প্রয়োজন বোধ করেনি মোতালেব।
অনুপস্থিত ইমামের রুমের বারান্দায় নিজের কাপড়চোপড়-ভরা ব্যাগটা রেখে প্রথমে অজু করে নিল সে।
অজু করতে না করতেই অন্য এক মসজিদে মাগরিবের আজান শুরু হয়ে গেল। তাই তাড়াতাড়ি অজু শেষ করে আজান দিতে দাঁড়াল সে।
মোতালেব অন্যদিনের চেয়ে বেশি সময় নিয়ে আজান দিলো আজ। আজান শেষ হতে না হতেই মসজিদ ভরে গেল মুসল্লির উপস্থিতিতে।
মুসল্লিদের মধ্যে পুলিশের পোশাক পরা দুই ব্যক্তিকে দেখে মোতালেব বুঝে গেল, তার আর পালানোর সুযোগ নেই।
এ-অবস্থায় সে জীবনে প্রথমবারের মতো প্রচণ্ড ভয় পায়।
হঠাৎই কে একজন কানের কাছে মুখ এনে বলল, ‘ডরাইয়েন না?’

জিনের আশ্বাসে ভয়ডর কেটে যাওয়ায় মনপ্রাণ উজাড় করে ইমামতি করল মোতালেব।


সেই থেকে এই থানাহাজতেই আছে মোতালেব। মাঝে একবার কোর্টে ঘুরিয়ে আনা হলো তাকে। তার পক্ষে কোনো উকিলই দাঁড়ায়নি।
উকিল দাঁড় করানোর মতো মোতালেবের যে আত্মীয়স্বজন একেবারে নেই তা নয়; কিন্তু নিজের আত্মজাকে হত্যা করার অপরাধে যাকে গ্রেফতার করে আনা হয়েছে, তার পক্ষে উকিল নিযুক্ত করবে কে?
হাজতেও তাকে দেখতে আসার কেউ থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক।

মোতালেব আশা করেছিল, আর কেউ না এলেও তার বড় মেয়েটা আসবে।
থানাহাজত থেকে হাঁটাপথে মিনিট দশেকের দূরত্বে বড় মেয়ে খাদিজার বাসা। খাদিজার স্বামী মোহাম্মদ আবু তাহেরকে মোটামুটি অবস্থাপন্ন ব্যবসায়ী বলা চলে।
মাদ্রাসায় পড়াশোনা করলেও তাহের মোল্লাগিরি না করে ব্যবসাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে।
কন্ট্রাক্টরি করে সে। তা ছাড়া শহরের ব্যস্ততম এলাকা, সদর হাসপাতালের সামনেই তার বিরাট ওষুধের দোকান।
দুই সন্তানের মা-বাবা ওরা।

খাদিজা তার মা-বাপের একের পর এক সন্তান জন্ম দেওয়াটাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিল না।
বাবার সামনেই সে একবার তার মা হোসনা বেগমকে বলে বসল, ‘আম্মা, আপনেরা কি শরম-লজ্জার মাথা খাইছেন।
নাতি-নাতনিগোর নগে নিজেগো পোলাহান মানুষ করতে কি ইটটুও শরম লাগে না।’


খাদিজারা সাত বোন। খাদিজার বয়স ২৫, আয়শার বয়স ২১। সাত সন্তানের এই দুজনের নাম মোতালেবের পছন্দে রাখা হয়েছিল।
এরপর মোতালেব একটি ছেলের আশায় আরো পাঁচটি মেয়ের জন্ম দিয়ে গেল এবং প্রতিটি মেয়ের জন্মমাত্রই এতটা হতাশ হলো যে, তাদের নাম রাখারও প্রয়োজন বোধ করেনি।
ফলে কোরানের হাফেজ মুয়াজ্জিনের মেয়েদের নাম রাখা হলো অলি, কলি, জুলি, মলি ও পলি।

মুয়াজ্জিন মোতালেব আলীর একটা ছেলে চাই-ই চাই।
তাই তার স্ত্রী হোসনা বেগম যখন অষ্টম সন্তানের জন্ম দিতে চলেছে, তখন তার দ্বিতীয় মেয়ে আয়শা দ্বিতীয়বারের মতো সন্তানসম্ভবা হয়েছে আর বড় মেয়ে খাদিজার ছেলেমেয়ে দুটির বড়টি পা দিয়েছে স্কুলের বারান্দায়।
খাদিজা এসেছে মাকে দেখতে। অন্য মেয়েরা মোতালেবের সামনে কথা বলতে ভয় পেলেও খাদিজা কখনো বাবাকে তেমন তোয়াক্কা করে না।
তাই বাপের সামনেই মাকে ভর্ৎসনা করার ছলে বাপকে কিছু কথা শুনিয়ে দিয়ে বলল, ‘আরো একটা মেয়া হইব আপনেগো।’

মোতালেব অনেকক্ষণ চুপচাপ মেয়ের কথা শুনে যাচ্ছিল, এবার আর সহ্য করতে না পেরে একপর্যায়ে বলল,
‘এইবার মেয়া অইলে তোর মায়রে তালাক দিয়া আরেকটা বিয়া করুম আমি।’

‘আব্বা এইসব কী কইতাছে, হুনছেন?’
খাদিজা পাশের ঘর থেকে তার স্বামী তাহেরকে ডেকে আনে, ‘আপনে আব্বারে বুঝাইয়া কন তো পোলা না মাইয়া হইব তা মাইয়ালোকের না, পুরুষমাইনষের ব্যাপার।’

মাদ্রাসাশিক্ষায় শিক্ষিত হলেও ওষুধের দোকান চালানোর কারণে ডাক্তারিবিদ্যার অনেক কিছুই জানা হয়ে গেছে আবু তাহেরের।
মেয়েজামাইয়ের কথাবার্তা শুনতে শুনতে মোতালেবের মনে হয়, তার মেয়ে ও মেয়েজামাই Ñ দুইটাই বড় নির্লজ্জ হয়ে গেছে। রাগ সামলাতে না পেরে বলে,
‘যদি এবারও আরেকটা মাইয়ার জন্ম হয়, ওইটারে আমি নুন খাওয়াইয়া মাইরা ফালামু।’
সাত চড়ে রা করে না যে-মানুষটি, সেই হোসনা বেগম কিনা হঠাৎ ক্ষেপে গিয়ে হাতে বঁটিদা তুলে নিয়ে বলে, ‘ঘর থেকে বাইর অন। নাইলে আমি আপনেরে কোপাইয়া মারুম।’

খাদিজা মাকে আঁকড়ে ধরে নিরস্ত করে এবং তাহের শ্বশুরকে নিয়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
উত্তেজনায় অসুস্থ হয়ে পড়ে হোসনা বেগম। মেয়ে ও জামাই মিলে হাসপাতালে নিয়ে যায় তাকে।


হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর শুরু হয় প্রসববেদনা এবং যথারীতি আরো একটি মেয়ের জন্ম দেয় হোসনা বেগম। অকালে প্রসব হলেও মেয়েটি বেশ সুস্থ-সবল অবস্থাতেই পৃথিবীতে আসে।

স্ত্রী-সন্তান মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করলেও এ-খবর পেতে পুরো দুটি দিন লেগে যায় মোতালেবের। তাও আবার খবর নিয়ে আসে প্রতিবেশীদের একজন।
আজান দিতে যাওয়ার পথে দেখা হয় তবারক আলীর সঙ্গে। তবারক বলে, ‘মুয়াজ্জিন, আছ কিবা?’
মোতালেবের উত্তরের অপেক্ষায় না থেকে সে জানায়, ‘গ্যাসটিকের ব্যাদনাডা বাইরা যাওয়ায় হাসপাতালে গেছিলাম।’ মোতালেব চুপচাপ শুনে যাচ্ছিল।
তবারক আলী এবার বোমা ফাটায়, ‘তোমার মেয়া দেইখা আইলাম। একদম তোমার মতো অইছে।’

মোতালেব বিস্মিত হয়। বিস্ময়ের ঘোর না কাটতেই তবারক বলে, ‘তুমি কিন্তুক আবার আমার কাছ থিকা খবর পাইছ, এইডা কেউরে কইও না।
খাদিজা আমারে বারবার অনুরোধ কইরা কইছে তোমারে জানি খবরডা না জানাই।
আমি তো জানি, আমি খবর গোপন রাখলেও জিনেরা তোমারে খবর জানাইয়া দিব।
তাই কইয়া দিলাম আর কী?’

এতদিন ধরে দুই-দুইটা জিন পোষার গল্প করে এসেছে যাদের কাছে তাদের একজন তবারক আজ জানল, আসলে জিনের গল্পটা সত্য নয়।
সত্য হলে এই অতি সাধারণ খবরটা মোতালেবের অজানা থাকত না।
মোতালেব ভাবে, শেরালি ও পিরালি তার সঙ্গে এই প্রতারণা করল কেমনে? এ-কথা ভেবে নামাজের পরও মসজিদে বসে থাকল মোতালেব।
মনে মনে সে জিনদের ডাকতে লাগল। ডাকতে ডাকতে যখন হতাশায় নিমজ্জিত হতে চলেছে মোতালেব, ঠিক তখন তাকে আশ্চর্য করে দিয়ে জিনদের দুজনই এসে হাজির হলো, ‘তবারক মিয়া ঠিকই কইছেন, আপনের মেয়েটা এক্কেবারে আপনের মতন হইছে।’


‘তোমরা আমারে আগে জানাইলা না কেন?’

কোনো উত্তর নেই জিনদের।

হঠাৎ মোতালেবের মনে হয় তার স্ত্রী মিথ্যা বলে না, আসলে জিনটিন কিছুই নেই।
সবই তার মনের কল্পনা। একই কথা অবশ্য ইমাম সাহেবও বলেন। তাই বলে গ্রামের মানুষ মোতালেবের পোষা জিনের ওপর একটুও সংশয় রাখে না।
শুধু কি তার নিজের গ্রাম, আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষ আসে শেরালি ও পিরালির কাছ থেকে পাওয়া পানিপড়া নিতে।
প্রথম প্রথম লোকজন মোতালেবের কাছে পানিপড়া নিতে আসার সময় এটা-ওটা উপহার নিয়ে আসত।
অবস্থাপন্নরা চাইত নগদ টাকা দিতে। মোতালেব কঠোরভাবে এসব উপহার-উপঢৌকন ফিরিয়ে দেওয়ায় মানুষের আস্থা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়।
ক্রমে ভিড় বাড়তে থাকে তার বাড়ির আঙিনায়। মোতালেব আবার কড়া নিয়ম মেনে চলে, সে কোনোক্রমেই দিনে ১১ জনের অতিরিক্ত একজনকেও পানিপড়া দেয় না।
তার এই পানিপড়া খেয়ে কতজনের কত ইচ্ছা পূরণ হয়েছে, কিন্তু নিজের পুত্রসন্তান পাওয়ার ইচ্ছাটা অপূর্ণই থেকে গেল।
হোসনা বেগম কতবার কতভাবেই না তার কাছে মন্ত্রপূত পানিপড়া চেয়েছে।
মোতালেবের এক জবাব, ‘এই পানিপড়া আমার নিজের লাইগ্যা ব্যবহার করন যাইব না।’

‘যদি আপনের নিজেরই কামে না লাগল তাইলে জিন পাইল্যা লাভ কী?’

‘তুমি এহন যাও। এই জিনিস বুঝন মাইয়া মাইনসের কাম না।’
হোসনা বেগম উত্তেজিত হয়ে বলে, ‘আসলে তো জিন নাই। আপনে নিজেই একটা জিন হইয়া বইয়া রইছেন।’


উত্তেজনার বশে হোসনা বেগম যে-কথা বলেছিল, তা যে ষোলো আনা মিথ্যা, এমন দাবি মোতালেবও করতে পারে না। তার প্রায়ই মনে হয়, জিন দুইটা আসলে সে নিজেই।
নিজেই সে নিজের সঙ্গে কথা বলে। গ্রাম-গ্রামান্তর থেকে আসা মানুষদের মন্ত্রপূত পানিপড়াও দেয়।
কিন্তু তার কাছে তাজ্জব লাগে যখন সে হঠাৎ দেখা কোনো মানুষের অতীত-বর্তমান বলতে শুরু করে এবং তা নির্ভুলভাবেই বলতে পারে।
মেজাজ খারাপ করে মসজিদ থেকে বের হয়ে হনহন করে বাড়ির দিকে হাঁটা দেয় মোতালেব।
শেরালি ও পিরালি তার সঙ্গ ছেড়ে যায়নি বলে সে ঘরে না গিয়ে ঘরের দাওয়ায় তুলে রাখা বাইসাইকেলটা নামিয়ে আনে এবং মেয়েদের কাউকে কিছু না জানিয়ে শহরের পথে রওনা দেয়।


হাসপাতালে কি মোতালেব গিয়েছিল? মোতালেবের স্ত্রী হোসনা বেগম মামলা করার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এলো, যে-ওয়ার্ডে সে ছিল, সেটা সরেজমিন পরিদর্শন করতে।
পুলিশের কাছে হোসনা বেগম জানিয়েছে, ‘বাচ্চাটা ঘুমাইয়া ছিল।
ওরে রাইখ্যা আমি বাইরে গেছিলাম।’
পাশের সিটের মহিলা হোসনা বেগমের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলতে শুরু করে,
‘হঠাৎ কইর‌্যা খুটখাট শব্দ শুইনা ঘুম ভাইঙা গেল আমার।
তাকাইয়া দেহি দাড়িআলা এক বেডা ওয়ার্ডে খাড়াইয়া রইছে।
আমি জিগাইলাম, আপনে কার কাছে আইছেন। হে কইল, হোসনা বেগম কোনে? আমি কইলাম, বাথরুমে।
হে কইল, অ তাইলে এইডা আমার মাইয়া। কইয়া সে মাইয়ারে কোলে নিল। আমি তারে নিষেধ করলাম।
আমার কথা কানেই নিল না। আমার দিক পিছ ফিইরা খাড়াইয়া থাকায় মাইয়াডারে গলা টিইপ্যা মারছে কিনা জানি না।’



হোসনা বেগম বলে, ‘আমি বাথরুম থিকা বাইর অইয়া দেখলাম খাদিজার বাপ চইল্যা যাইতাছে।
আমি তারে ডাক দিয়া কইলাম, আপনে চইল্যা যাইতাছেন ক্যা, খাড়ান। কথা কইয়া যান। সে উত্তর না দিয়া কান্ধের গামছা দিয়া মুখ ডাইক্যা বাইর হইয়া গেল।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কবির আহমেদ তদন্তের অগ্রগতিতে খুশি হয়ে চলে যায় এবং পরের দিন আদালতে আবেদন করে মোতালেবকে রিমান্ডে নিয়ে আসে।
রিমান্ডে আনার পর জিজ্ঞাসাবাদের শুরুতেই মোতালেব স্বীকার করে নেয় যে, সে নিজেই তার মেয়েকে খুন করেছে।
সহজ-সরল স্বীকারোক্তিতে রেহাই পায় না সে। বরং এ-স্বীকারোক্তির মধ্যে একজন পিতার  যে-নিষ্ঠুরতা প্রমাণিত হয়, তা তদন্ত কর্মকর্তাকে উত্তেজিত করে তোলে এবং সে সিপাইদের দুজনকে মোতালেবকে দলাই-মলাই দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

পুলিশের এক কনস্টেবল যখন তাকে ঘুম থেকে জাগায় তখন সারাশরীরে তার ব্যথা। কনস্টেবল যখন জানায়, ‘চল বেটা মুয়াজ্জিনের বাইচ্চা, তর লগে দেখা করতে কান্দাপাড়ার রমলা মাসি আইছে।’
তখনো সে কিছু বুঝতে পারে না।
কনস্টেবল মুখ খারাপ করে বলে, ‘রমলা মাসির নাম শুইন্যা ধোন খাড়া কইরো না, বাপজান।
মাসির যৌবন গেছে বহুদিন। তোমার লগে দেখা করতে আসছে সত্তর বছরের এক মাগি। সে এখন পাড়ার মাসি,
মাগির দালালি করাই তার কাম।’


কান্দাপাড়া যে শহরের একমাত্র পতিতাপল্লি, তা মুয়াজ্জিন হলেও মোতালেবের অজানা নেই। ওই পাড়ার এক মাসি দেখা করতে এসেছে শোনার পরও তার মনটা নেচে ওঠে।
কেউ একজন তো এসেছে দেখা করতে।
পুলিশের সঙ্গে কান্দাপাড়ার রমলা মাসির যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে, তা ওদের দেখা করিয়ে দেওয়ার বিশেষ ব্যবস্থা থেকেই বুঝতে পারে মোতালেব। মাসি ঘরের একমাত্র খালি চেয়ারটি দেখিয়ে মোতালেবকে বসতে ইশারা করে।
তারপর বলে, ‘মুয়াজ্জিন সাব, আমি আপনারে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করব।’
কেন করবেন? মোতালেবের মনে এ-প্রশ্ন এলেও সে প্রশ্ন করে না। বরং রমলা মাসি হাসিতে মুখ উদ্ভাসিত করে বলে,
‘কেন করুম জানতে চাইলেন না যে?’

‘আপনেই কইন’ বলে চেয়ারের হাতল ধরে দাঁড়ায় মোতালেব।

‘করুম, কারণ আমার অনেক মেয়ে বাইচ্চা দরকার।’

মোতালেব তার মুক্তির সঙ্গে রমলা মাসির মেয়ে বাচ্চা দরকারের সম্পর্কটা বুঝতে পেরেছে বলে মনে হয় না, বরং সে অকূল সাগরে খড়কুটো আঁকড়ে ধরার মতো বলে, ‘আগে আমারে বাইর করনের ব্যবস্থা করেন।’


‘করনের জন্যই তো আসছি, বাইর করনের পর আপনে প্রথমে আপনের বউরে তালাক দিবেন।’

সে আর বলার অপেক্ষা রাখে, মোতালেব তো মনে মনে অনেক আগেই এটা ঠিক করে রেখেছে,
যে স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে তালাক না দেওয়ার কোনো কারণ নেই, তাই জোর গলায় বলে, ‘অবশ্যই তালাক দিমু।’

‘শর্তের হেরফের করলে কিন্তু আমি কাউরে ক্ষমা করি না।’
‘হেরফের অইব না। আপনে আমার মা-বাপ, যেমনে পারেন আমারে বাইর করেন আগে।’


‘ঠিক আছে। এইবার পুলিশ আর রিমান্ড চাইব না। ডাক্তার রিপোর্ট দিব যে, আপনের বাচ্চারে কেউ খুন করে নাই, সে নিউমোনিয়ায় মারা গেছে।’

‘বিশ্বাস করেন মাসি, আমি খুন করি নাই’, মোতালেব এই প্রথমবারের মতো নিজের সন্তানকে খুন করার অভিযোগ মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানাল।

‘খুন করছেন কি করছেন না, সেইটা আপনে জানেন আর পোষা জিনেরা জানে।’

‘আপনে আমার জিনের কথা জানেন? আসলে জিন বলে কিছু নাই, থাকলে আমার কপালের এই অবস্থা অইত না’, বলল মোতালেব।
তারপর টুপি খুলে কপালের ফোসকাগুলো দেখিয়ে বলে, ‘না, জিন বইল্যা কিছু নাই, সবই আমার কল্পনা।’



দুদিন পরের ঘটনা। আদালতের বারান্দায় কান্দাপাড়ার রমলা মাসিও উপস্থিত।
মোতালেবকে পুলিশ বারান্দা দিয়ে কোর্টে নিয়ে যাওয়ার সময় তার দিকে তাকিয়ে অভয়ের হাসি হাসল মাসি।
মাসি যে যথেষ্ট প্রভাবশালী তা মোতালেবের পক্ষে জেলার সবচেয়ে দামি উকিল উঠে দাঁড়ালে আবার টের পেল সে।
রিমান্ডে মোতালেব বারবার আত্মজাকে খুন করার কথা স্বীকার করলেও কোর্ট ইন্সপেক্টর জানাল,
‘মোতালেব বলেছে, সে হাসপাতালে গিয়েছিল মেয়েকে দেখতে এবং স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি থাকার কারণে হোসনা বেগমের ডাকে সাড়া না দিয়ে পালিয়ে চলে এসেছিল।’
শুধু তা-ই নয়, ইন্সপেক্টর আরো জানাল, ‘হাসপাতালের ডাক্তাররা ছোট্ট মেয়েটির মৃত্যুর কারণ নিউমোনিয়া বলে শনাক্ত করেছেন।’


মামলা চলাকালে বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষকে আদালতে হাজির হতে হয়।
কাজেই হোসনা বেগম উপস্থিত রয়েছে, রয়েছে তাদের বড় মেয়ে খাদিজা ও খাদিজার জামাই। দুর্বল সাক্ষ্যপ্রমাণের পর আসামিকে জামিন না দেওয়ার উপায় থাকে না বিচারকের।
জামিন পেয়ে কোর্টের বারান্দায় ভিড় জমানো লোকজনের উপস্থিতিতে মোতালেব মামলার বাদী তার স্ত্রী হোসনা বেগমকে উদ্দেশ করে বলল, ‘তোমারে আমি তালাক দিলাম।
এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক, বাইন তালাক।’

মুয়াজ্জিন মোতালেব জানে এভাবে তালাক শরিয়তসিদ্ধ হয় না।
তবু তালাকের ঘোষণায় তার স্ত্রী ও মেয়ে যখন হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করল, তখন তালাক দেওয়ার কঠিন কাজটি এত সহজে সেরে ফেলতে পারায় মোতালেব মনে মনে স্বস্তিবোধ করে।
তার স্বস্তির রেশ না কাটতেই টিংটিংয়ে প্রায় ছয় ফুটি এক যুবক, যার নাম দেওয়া যায় তালপাতার সেপাই, সে ভিড় ঠেলে এগিয়ে আসে মোতালেবের কাছে এবং তাকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে।
সে জানতে চায়, ‘টানাটানি করতাছুইন কির লাইগ্যা।’

মোতালেবকে আশ্চর্য করে তালপাতার সেপাই বলে, ‘আমি রমলা মাসির লোক, মাসি আপনেরে নিয়া যাইতে কইয়া গেছে।’

‘আত ছাড়েন, আমি তো যাইতাছি।’

তালপাতার সেপাইয়ের সঙ্গে এক রিকশায় করে মুয়াজ্জিন মোতালেব যখন কান্দাপাড়ায় হাজির হয় ততক্ষণে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হচ্ছে। আসার পথে জানতে পায়, সে যাকে মনে মনে তালপাতার সেপাই ডাকছে,
লোকটি সত্যি পুলিশের একজন সিপাই ছিল এবং পাড়ার সবাই তাকে সিপাই নামে ডাকে।
কান্দাপাড়ার নাম জানা থাকলেও মোতালেব এর আগে কোনো দিন এ-পাড়ার পাশ মাড়ায়নি।
তাই রংচঙে মুখ ঢেকে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েদের দেখে ভয় পেয়ে যায়।
মেয়েদের একজন, চিল যেমন মুরগির ছানাকে ছোবল দিয়ে উড়াল দেয়, ঠিক সেরকম উড়াল দেওয়ার মতো তাকে টেনে নিয়ে যেতে শুরু করলে মোতালেবের ভয় আরও বাড়ে।
ভয়ে সে সিপাইকে ডাকতে পর্যন্ত ভুলে যায়। রিকশা ভাড়া মিটিয়ে ফিরে তাকাতেই ঘটনাটা প্রত্যক্ষ করে তালপাতার সিপাই, ‘আরে জুঁই, করতাছস কী? রমলা মাসি এই বেডারে জেলহাজত থেইক্যা ছাড়াইয়া আনছে।
আগে অরে মাসির ঘরে নিয়া যা।’

মেয়েটি এবার হাত ছেড়ে বলে, ‘আসেন, মাফ কইরা দিয়েন, আমি বুঝতাম পারি নাই যে আপনে মাসির স্পেশাল গেস্ট।
অবশ্য স্পেশাল গেস্টদের খেদমত করার জন্য মাসি বেশির ভাগ সময় আমারেই দায়িত্ব দেয়।’

মাসি দরজায় দাঁড়িয়ে যেন মোতালেবের আসার অপেক্ষা করছিল, ‘আসেন, আসেন, মুয়াজ্জিন সাহেব।’

মোতালেবের সঙ্গে জুঁই আর সিপাইও আসে রমলা মাসির ঘরে।
মোতালেব দেখতে পায়, এতক্ষণ যেসব খুপরি ঘর দেখে এসেছে, সেগুলোর তুলনায় মাসির ঘরটা বেশ বড়।
পুরনো আমলের খাটে পরিচ্ছন্ন চাদর বিছানো। মাথার ওপর ফলস সিলিং দেওয়ায় টিনের চাল দেখা যাচ্ছে না এবং গরমও কম লাগছে।
ফলস সিলিং ছিদ্র করে একটা লোহার ডান্ডা নামিয়ে আনা হয়েছে নিচের দিকে, ওই লোহার মাথায় ঘুরছে ফ্যান।
ফ্যানের স্পিড বাড়িয়ে দিয়ে মাসি বলে, ‘মুয়াজ্জিন সাব, জুঁইরে পছন্দ হইছেনি আপনের?’


মোতালেব একটু লজ্জা পেলেও জুঁই হেসে গড়িয়ে পড়ে, ‘ও মাসি, তুমি কি এই লোকের কথা কইছিলা আমারে। আমি যদি তার লগে থাকি তাইলে আমার তালপাতার সিপাইয়ের কী অইব?’

‘সিপাই আজকা থেইক্যা কঙ্কনের লগে থাকব। ওরে দিয়া তো বাচ্চা ফুটাইয়া লাভ নাই। ও খালি পোলাপানেরই জন্ম দিতে জানে।’

‘মাসি, কামডা কিন্তু ভালো অইল না’, বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সশব্দে পা ফেলে মাটিতে, যেন পিটি-প্যারেড করছে পুলিশের সাবেক এই সিপাই।

রমলা মাসি জুঁইকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ইশারা করে বলে, ‘তর আজকা কোনো কাস্টমার ডাকনের দরকার নাই। মুয়াজ্জিন থাকব তর লগে।’

মোতালেব এতক্ষণে মুখ খোলে, ‘মাসি, এইগুনা কী কইতাছেন। আমি আপনের পাড়ার মাইয়া লোকের লগে থাকতে যাইমু কোন দুঃখে?’

‘আমি থানায় গিয়া কথাবার্তা পাকা কইরা আসি নাই? আপনেরে আমি কই নাই, আমার অনেক মাইয়া বাচ্চা লাগব।
আমার হিসাবমতন জুঁই যদি আজকা সহবাস করে তার পেটে বাচ্চা আসনের আশা আছে। আপনে আজকা জুঁইয়ের সঙ্গে রাত কাটাইবেন।’

‘এইডা তো বেশরিয়তি কাম’, বলে একটু থামে মোতালেব, আবার বলে ‘মাসি, আপনে আমারে এত বড় শাস্তি দিয়েন না।’
‘দেখেন মুয়াজ্জিন সাব, শরিয়ত আমারে শিখাইয়েন না। আপনেরে কি শরিয়ত শেখানোর লাইগ্যা আমি বার কইর‌্যা আনছি।’

‘আমি তো বেগানা নারীর সঙ্গে সহবাস করবার পারুম না।’

‘এইটা তো আগে ভাবি নাই।’ বলে কী যেন ভাবে রমলা মাসি, তারপর বলে, ‘ঠিক আছে, বেগানা নারীর সঙ্গে আপনের সহবাস করা লাগব না।
আজকাই আমি আপনের লগে জুঁইয়ের বিয়া দিমু।’
‘আমি আপনের পাড়ার মেয়ে, জেনা করা যার জীবিকা, তারে বিয়া করতে যামু কোন দুঃখে?’

রমলা মাসি এবার রেগে যায়, ‘করবেন। আমি আপনেরে এই শর্ত দিয়া মৃত্যুদণ্ডের হাত থেইকা বাঁচাইয়া আনছি।
আমি আজকা আপনের লগে জুঁইয়ের বিয়া দিমু। কদিন পর রেশমারে, তারপর আপনের লগে বিয়া দিমু চশমা আর মৌরিরে।
শরিয়তে চাইর বিয়া করন যায়। আপনের চার বউয়ের যে আগে গর্ভবতী হইব, তারেই আপনে তালাক দিবেন।
তখন আবার নতুন আরেকটা মাইয়ারে বিয়া দিমু আপনের লগে। কোনো সময় চারজনের বেশি বউ থাকবে না আপনের।’
মোতালেব এবার ভয় পেয়ে যায়। সে রমলা মাসির পা জড়িয়ে ধরে বলে, ‘মাসি, আমারে ছাড়ানের লাইগ্যা আপনার যত টাকা গেছে, আমি জমিজমা বিক্রি কইরা তা শোধ কইরা দিমু।
তবু আপনে আমারে ছাইড়া দেন।’


‘টাকা শোধ কইরা তো পার পাইবেন না। আপনের মামলা আবার কোর্টে উঠব।
ডাক্তাররা কইব, আপনের বাচ্চাটারে গলা টিইপা মারনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আগের রিপোর্ট ভুল আছিল।’

উপায়হীন মোতালেব গুমরে কাঁদতে শুরু করলেও ঘিঞ্জি এ-পল্লির অনেকেই তা শুনতে পায়। কাজেই রমলা মাসির ঘরের সামনে মেয়েদের ভিড় জমে যায়।
ভিড়ের মধ্য থেকে জুঁইকে ডেকে এনে মাসি বলে, ‘মুয়াজ্জিন সাবরে তর ঘরে লইয়া যা। খাওনদাওন করাইয়া ওনারে রেস্ট নেওনের ব্যবস্থা কইরা দে।’
ক্ষিধে ছিল প্রবল, ঘুমও। তাই খাওয়া-দাওয়া শেষে লম্বা একটা ঘুম দেয় মোতালেব। জুঁই অবশ্য এর মধ্যে তার সঙ্গে কথাবার্তা বলার চেষ্টা করেছে।
মোতালেবের সাড়া না পেয়ে একসময় তার পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।



চলবে ...............................................................।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×