somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রংপুরে ভণ্ড কবিরাজের কুকীর্তি, ধর্ষণ আর ধর্ষণ..........

২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রংপুরে ভণ্ড কবিরাজের কুকীর্তি, ধর্ষণ আর ধর্ষণ..........

রংপুর ব্যুরো
বার্তা২৪ ডটনেট

রংপুর, ২৩ অক্টোবর: রংপুর মহানগরীর হাউদার পার এলাকায় মঙ্গলবার পুলিশ জিনের বাদশা নামধারী এক ভণ্ড কবিরাজের আস্তানা খুঁজে পেয়েছে। ওই আস্তানায় জিনের দোহাই দিয়ে বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের মনোবাসনা পূরণের নামে যৌন হয়রানীসহ শারীরিক নির্যাতন করা হতো।

আস্তানা থেকে মানুষের মাথার খুলিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। ডিআইজি’র কাছে একজন প্রতারিত বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ তথ্য ফাঁস হয়ে পড়ায় এলাকাবাসী বিস্মিত হয়ে গেছেন। এ ঘটনায় ভণ্ড কবিরাজ আতিয়ার রহমানসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।

অভিযান পরিচালনাকারী রংপুর পুলিশের বি সার্কেল রেজা জানান, একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি’র কাছে কবিরাজ আতিয়ার রহমানের প্রতারণা এবং যৌন হয়রাণীর অভিযোগ করেন। ডিআইজির নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে দুই দিন ওয়াচে রেখে আমরা প্রথমে ডিবি পুলিশ দিয়ে হাউদার পাড়ের গুঞ্জর খাঁ গ্রামে আতিয়ারের বাড়িতে অভিযান চালাই।
এ সময় আতিয়ার রহমান, তার সহযোগি রেজাউল ইসলাম, আব্দুল ওয়াহেদ এবং স্ত্রী ও পুত্র বধূকে আটক করি।

তিনি আরো জানান, বাড়ির উঠোন দিয়ে পাইপ বসিয়ে পশ্চিম পাশের ঘর থেকে পূর্ব পাশের অপর একটি অন্ধকার খুপড়ি ঘরে কথিত জিনের শব্দ দিয়ে মানুষকে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আতিয়ার। অন্ধকার খুপড়িতে আতিয়ার মানুষের মাথার খুলি নিয়ে বসে থাকতো। আর অপর ঘরে রেজাউল ও ওয়াহেদুল জিন হয়ে কথা বলতো।

এক পর্যায়ে জিন বলতো, তার মনের ইচ্ছা পূরণ হওয়ার জন্য শারীরিক মেলামেশা করতে হবে। লোভে পড়ে নারী গ্রাহকরা ওই ঘরেই আতিয়ারের সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক করতো। এরপর আবার আতিয়ার অন্য ঘরে যেতো। অন্ধকার ঘরে আসতো পালাক্রমে রেজাউল ও ওয়াহেদ। তারাও নারী গ্রাহকদের সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক করতো। এরপর পাঁচ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত কন্ট্রাক্টে আতিয়ার কবিরাজি চলতো।

এভাবে ভালোবাসা মিলিয়ে দেয়া, স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবন ভালো করে দেয়া, ছেলেমেয়েকে বশ করা, জমিজমা ফিরিয়ে পাওয়াসহ বিভিন্ন ইস্যুতে নারীদের ভোগ করতো কবিরাজ আতিয়ার ও তার সিন্ডিকেট।

পুলিশ জানায়, আতিয়ার, রেজাউল, ওয়াহেদ ছাড়া আরো অন্য কাউকে এনে এখানে যৌন হয়রানীর ব্যবসা করা হতো কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে মানুষের মাথার খুলি, আরবী অক্ষর দিয়ে লেখা ডিম, পাইপ, বিপুল পরিমাণ যৌন উত্তেজন আইয়ুর্বেদী ইউনানী ঔষধ ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদসহ বিপুল পরিমাণ জিনিস পত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

এলকাবাসী সাহেব আলী, আকলিমা, আফাজ উদ্দিন খান, মমতাজ, সোহরাবসহ অনেকেই জানান, আগে নাপিতের ব্যবসা করতো আতিয়ার। হঠাৎ করে কবিরাজি ব্যবসা ধরে। গত তিন বছর ধরে বাইরে থেকে প্রতিদিনই শত শত মানুষ এসে তার কাছে চিকিৎসা নিতো। এরমধ্যে অধিকাংশরাই বিভিন্ন বয়সের নারী। এলাকার কারো সঙ্গে তার কোওর সম্পর্ক ছিল না। ওই বাড়িতে কখনই পুরুষকে ঢুকতে দেয়া হতো না। তবে চলাফেরা দেখে মনো হতো না, ওই বাড়িতে এত অন্যায় অপকর্ম হতো।

আব্দুল বাছেদ নামে এক প্রতারিত যুবক বলেন, “এক মেয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক করে দেয়ার কথা বলে ছয় হাজার টাকা নেয়। ওই মেয়ের সঙ্গে আমাকে মেলামেশার লোভও দেখায়। কিন্তু বেশী টাকা চাওয়ায় আর আমি তার কাছে যাইনি। অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছি।”

ডিআইজির কাছে অভিযোগকারী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী জানান, আমার কাজ করে দেয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে ২০ ভরিরও বেশি স্বর্ণ দিয়েছি আমি ওই কবিরাজকে। এছাড়াও কাজ করে দেয়ার নামে অন্ধকার ঘরে জিনের বাদশার কণ্ঠ শুনিয়ে একটি ভিন্নরকম আবহ তৈরি করে আমাকে শারীরিকভাবে মেলামেশা করতেও বাধ্য করে ওই কবিরাজ। আমি এই ভণ্ড কবিরাজের ফাঁসি চাই।”

রংপুর পুলিশের বি সার্কেল এএসপি রেজা জানান, ভণ্ড কবিরাজ আতিয়ার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এলাকার জিনের বাদশাদের শীর্ষ। তাদের ফমুর্লা দিয়েই সে এখানে কাজ শুরু করে গোপনে। তার গোপন আস্তানায় মেয়েদের যৌন হয়রানী করার বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

তিনি আরো জানান, শুধু একটি মেয়েকেই ২০ দিন ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও আমরা জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুরো গ্যাংটাকেই ধরার জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে।

ভণ্ড কবিরাজ আতিয়ার রহমান জানান, রেজাউলের মাধ্যমে এক হিন্দুর কাছ থেকে মাথার খুলি কিনে নিয়ে পাইপসহ আরও আনসঙ্গিক নানা উপকরণ দিয়ে ব্যবসা শুরু করি। কখনও আমি জিন কখনও রেজাউল ও ওয়াহেদ জিন হয়ে মানুষকে অন্ধকার ঘরে নিয়ে কথা বলে চিকিৎসা করি।

কবিরাজ আতিয়ার জিনের দোহাই দিয়ে মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, “আমি কখনই মেয়েদের সঙ্গে খারাপ কাজ করিনি। তবে ঘর বদলের পর রেজাউল ও ওয়াহেদ এটা করতে পারে।”

বার্তা২৪ ডটনেট/জিহ
২৩টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×