প্রতিবিম্ব (কর্মফল).. .. .. ভূমিকা পর্ব
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
হঠাৎ করেই ঘুম ভাংলো আলিফার। কখনো এমনটা হয় নি। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত সাড়ে তিনটা। ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রথমে একটু বিরক্ত হলেও এখন কেন জানি অনেক ভাল লাগছে। চারপাশে ঝিঁঝিঁ পোকার আওয়াজ শুনতে পেল সে। তার মনে হচ্ছে কেউ যেন তার কানের পাশে সুন্দর করে ভায়োলিন বাজাচ্ছে।বাহ! ভালোই তো! বিছানার পাশে রাখা টেবিলের উপর থেকে পানির বোতল নিয়ে ইচ্ছে মতোন পানি পান করল। গ্লাসে পানি পান করতে তার ভালো লাগে না। তার ভাষ্যমতে গলা ভিজে না গ্লাস দিয়ে পানি পান করলে। কি একটা জিনিস মনে করে পানির বোতলের ক্যাপের মধ্যে একটু পানি নিয়ে মাথায় ঢালল। কিঞ্ছু পানি কপাল গড়িয়ে চোখের পাতায় আটকে থাকল। আটকে থাকা পানির মধ্যে সে একটু রুক্ষতা অনুভর করলো। কারণ অন্যদিনের মতো পানি আজ তার কাছে এতো কোমল মনে হচ্ছে না। ওর বেডরুম থেকে রান্নাঘরের একটা পাশ দেখা যায়। রান্নাঘরের বাতিটা জ্বালানো। বাতিটা দেয়ালের বিপরীত পাশে তাই আলো খুব বেশী একটা আসে না। যেন স্বাভাবিক কিছু দেখেছে এই ভেবে ও আবার ঘুমাতে গেল। নরম তুলতুলে বালিশটাতে নিজের মাথা এলিয়ে দেয়ার মিনিট পাঁচেক পর ও লাফ দিয়ে উঠে বিছানায় বসে পড়ল। সমস্ত শরীর দিয়ে দরদর করে ঘাম বের হচ্ছে। যেন ন্যাপের মধ্যে ভয়ংকর রকমের দুঃস্বপ্ন দেখেছে সে। রান্নাঘরের বাতি তো সে নিজ হাতে বন্ধ করে এসেছিল তাহলে লাইট কিভাবে জ্বলল? ওর বসায় ও ছাড়া কেউ থাকে না সুতরাং অন্য কেউ বাতি জ্বালিয়ে দিতে পারবে না। ভীত সন্ত্রস্ত পায়ে সে ধীরে ধীরে রান্নাঘরের দিকে যেতে লাগলো। রান্নাঘরের কাছাকাছি যেতেই সে বটি’র আওয়াজ শুনতে পেল। মনে হচ্ছে কেউ যেন বটি দিয়ে কিছু কুটছে। তার ভয় আরো দিগুন পরিমাণে বেড়ে গেল। রান্নাঘরের দরজার কাছে উঁকি দিতেই ও যা দেখল তাতে ওর হার্টফেল হবার যোগাড়। একটা বুড়ো মতন মহিলা একটা নিস্তেজ মানব শরীরকে কেটে কেটে টুকরা করছে। মহিলার চারপাশে নিস্তেজ শরীরটির বিভিন্ন শরীরটির বিভিন্ন অঙ্গ পড়ে আছে। বিভৎষ্য একটা পরিবেশ। পুরো মেঝে লাল রক্তে ভরে আছে। লাল মেঝেতে কাটা আঙ্গুল, জ্বিহবা, একপাশে রাখা থেতলানো মগজ তাদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। আলিফা কি করবে কিছু ভেবে পেল না। ঘর থেকে এতো রাতে সে দৌড়ে বের হবে সেটা কল্পনাও করতে পারলো না। সে নিজেকে সপ্নে আছে মনে করে ফজরের আযানের অপেক্ষা করতে লাগল। সে জানে ফজরের সময় কোন খারাপ কিছু থাকে না। বুড়ো মতন মহিলাটা আপন মনে নিচ দিকে ঝুকে কাজ করছে! আর এইদিকে আলিফা স্ট্যাচুর মতন দাঁড়িয়ে আছে। একচুল পরিমাণ নড়তে পারছে না। সারা শরীর ঘামে নেয়ে গেছে। কপাল থেকে ফোটা ফোটা হয়ে ঘাম চোখ বেয়ে পড়ছে। খানিকটা অসস্তিকর ব্যাপার। সে চাচ্ছে হাত দিয়ে কপালের ঘামটা মুছবে। কিন্তু আশ্চর্য সে নিজের হাত পর্যন্ত নাড়াতে পারছে না। হ্রিদস্পন্দন আর চিন্তাশক্তি বাদে সব কিছু অফ হয়ে আছে। সে মনে মনে আল্লাহকে ডাকছে। যা সে কখনো করেনি আজ তাই করছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সে এই ভয়ানক পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে চায়।
“আফা, কেমন আছেন?” ভয়ঙ্কর একটা শব্দে আলিফাকে ডাকল মহিলাটা। কন্ঠটা শোনা মাত্রই চমকে উঠল সে। (চলবে)
পেক পেক পেক
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ
গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।
... ...বাকিটুকু পড়ুন
৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…
১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন
মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট
মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'
নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ
আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন