somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎশক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট -আরশাদ মনসুর

২০ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন-১৫ ( সকল পর্বের লিঙ্ক নিচে )



হারিকেন স্যান্ডির কারণে আমেরিকার বড় বড় শহর যখন বিদ্যুৎবিহীন, এবিসি নিউজ প্রচার করে একজন বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞের বক্তব্য ।
জুলাই ২০১২ সালে ভারতে বিদ্যুতের বিপর্যয় ঘটল । নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় ছাপা হলো একই বিশেষজ্ঞের মত ।

যুক্তরাষ্ট্রের এই নামকরা বিদ্যুৎ প্রকৌশলীর অন্তত ১০০ সাক্ষাৎকার প্রকাশিত বা প্রচারিত হয়েছে সিএনএন, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালসহ মূলধারার গণমাধ্যমে ।
নিউইয়র্ক টাইমস তাঁর বক্তব্য ছাপতে গিয়ে এ কথা জানাতে ভুলল না, তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্নাতক ।

তাঁর নাম আরশাদ মনসুর ।

আরশাদ মনসুর যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎশক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইপিআরআই) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট । গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান । তাঁর সঙ্গে কাজ করেন ৫০০ জন প্রযুক্তিবিদ । প্রতিবছর তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা তাঁর নেতৃত্বে ব্যয় করা হয় বিদ্যুতের গবেষণায় ।

ব্যক্তিগত ভাবে বিদ্যুৎ বিষয়ক মৌলিক গবেষণার জন্য আরশাদ মনসুরের নিজ নামে আছে তিনটি প্যাটেন্ট । এগুলো হলো পাওয়ার, ট্রান্সফর্মার এবং শক্তি সংরক্ষণবিষয়ক গবেষণাপত্র । এ ছাড়া শতাধিক আন্তর্জাতিক জার্নাল, ম্যাগাজিন ও বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণাপত্রে প্রকাশিত হয়েছে বিদ্যুৎবিষয়ক গবেষণামূলক প্রবন্ধ । বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে অসংখ্য সাক্ষাৎকার ।

আরশাদ মনসুরের বাবা প্রকৌশলী এস এ মনসুর ছিলেন চট্টগ্রাম স্টিল মিলের মহাব্যবস্থাপক । সেই সুত্রে পড়া লিখার হাতে খড়ি চট্টগ্রাম সেন্ট প্লাসিড স্কুলে। পরে ঢাকার সেন্ট জোসেফ হাই স্কুলে । কৃতিত্বের সঙ্গে এ স্কুল থেকেই শেষ করেন এসএসসি ।
এইচএসসি পড়েন ঢাকার নটর ডেম কলেজে । অংশ নেন মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় । সেরাদের একজন হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে যান ।

পুরোদমে ক্লাসও শুরু করেন । একদিন বাথরুমে পড়ে এক ভাতিজার মাথা কেটে যায় । কাটা সেলাই করার সময় এটা দেখে মাথা ঘুরে পড়ে যান আরশাদ । তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত আমাকে দিয়ে ডাক্তারি হবেনা । ডাক্তারি পড়ার সেখানেই ইতি ।
ওই দুর্ঘটনা জগৎসভায় একজন নামকরা বাংলাদেশি আমেরিকান প্রকৌশলীর আবির্ভাবের দরজা খুলে দিয়েছিল ।

১৯৮৪ সালে ভর্তি হন বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগে । ১৯৮৯ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে বিএসসি এবং এমএস ডিগ্রি লাভ করেন ।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে তড়িৎ কৌশল বিভাগে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু। ৯ মাস বুয়েটে শিক্ষকতা করার পরে শতভাগ বৃত্তি নিয়ে পড়ালেখা করার জন্য চলে যান যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস ইউনিভার্সিটিতে ।

তাঁর পিএইচডির বিষয় ছিল 'ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফোকাসিং অন পাওয়ার সিস্টেমস'। শিক্ষকরা অনুরোধ জানান, যেন গবেষক হিসেবে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। হাসিমুখে সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন আরশাদ ।
গবেষণার উপযুক্ত ভেবে , যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত বিদ্যুৎশক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (ইপিআরআই)। নতুন ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার, বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন এবং এর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণের জন্য শুরু করেন নানা ধরনের গবেষণা ।

পরিশ্রম এবং মেধার কারণে অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন ইপিআরআইয়ের নির্ভরযোগ্য প্রকৌশলী। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি আরশাদ মনসুরকে । প্রকৌশলী থেকে আরশাদ এখন ইপিআরআইর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ।

পাশাপাশি আরশাদ ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন লার্জার ইলেকট্রিক সিস্টেমের ইউএস ন্যাশনাল কমিটি অফ সিআইজিআরে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন । সিনিয়র সদস্য হিসেবে যুক্ত রয়েছেন ইনস্টিটিউট অফ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্সে ।

বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করা আরশাদ মনসুরের জন্য শুভকামনা ।

পূর্বের পর্ব সমুহ-
১/ রাশিয়ার শ্রেষ্ঠ জিমন্যাস্টিক রিতা
২/ ওবামার উপদেষ্টা , বিজ্ঞানী ড. এন নীনা আহমাদ
৩/ কানাডার ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ও ভাইস চ্যান্সেলর ড. প্রফেসর অমিত চাকমা ।
৪/ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাপানি সুপার মডেল রোলা ।
৫/ বাংলাদেশি মেয়ে প্রিয়তি যখন 'মিজ আয়ারল্যান্ড' ।
৭/ ইউটিউব এর প্রতিষ্ঠাতা জাভেদ করিম।
৮/ বিশ্বের সেরা ৫০ উদ্যোক্তা সুমাইয়া কাজী
৯/ পৃথিবীতে প্রেরণার আলোক ছড়ানো সাবিরুল
১০/জাতিসংঘের আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল আমিরা হক ।
১১/ সৌদি আরবের শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম
১২/ মার্কিন সেরা সংবাদ প্রযোজক তাসমিন মাহফুজ
১৩/ কাতার আমিরের উপদেষ্টা ডক্টর হাবিবুর রহমান ।
১৪/ ইউরোপে নিউক্লিয়ার গবেষণায় প্রথম বাংলাদেশি অনন্যা ।

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৫৮
২০টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×