মির্জা ফখরুল শ্রীঘর থেকে জামিনে বেরিয়ে এসেছেন, সম্ভাবনা ছিল পিন্টুর মতো বেরিয়ে আসার, যাক ততদিন থাকতে হয়নি; ধনী লোক, অসুস্হ ছিলেন জেলের ভেতরে; থাকার কথা সিংগাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথে, আর ছিলেন কাশিমপুরের জেলখানায়। যেখানে খালেদা জিয়ারও জেলে যাবার কথা হচ্ছে, সেখানে মির্জা কি করে বেরিয়ে আসছে?
ফখরুল সাহেব বিএনপি বা আওয়ামী স্টাইল রাজনীতির জন্য একজন আদর্শবান রাজনীতিবিদ, নবাবী আমলের আমীর ওমরাহের মতো; কিন্তু আধুনিক যুগের একজন রাজনীতিবিদের যেসব গুণাগুণ থাকার দরকার তার কোনটাই নেই; গণতান্ত্রিণক ধ্যান-ধারণা নেই বলেই নিজের রাজনৈতিক জীবনটা খালেদা জিয়ার দয়ার উপর ছেড়ে দিয়ে রেখেছিলেন; নেত্রী উনাকে 'অস্হায়ী সম্পাদক' বানায়েছেন। দেশের প্রথম বা দ্বিতীয় বৃহত্তম দলের সেক্রেটারীকে কতদিন 'প্রবেশানেল' দেখতে চায় দলের নেতৃত্ব ও সাপোর্টারগণ?
একজন 'অস্হায়ী সেক্রেটারী' দলের রাজনৈতিক 'রোডম্যাপে' কি অবদান রাখতে পারেন? নোয়াখালীর প্রবাদ, নিজের নাই যায়গা, কুত্তা আনে ভাগা। জেনারেল মইনউদ্দিনের মিলিটারী সরকারের সময়ের নির্বাচনে শেখ হাসিনা জয়ী হওয়ার পর, রাজনীতিতে অনেককিছু বদলে গেছে; সেই পরিবর্তন খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়ার এন্টেনার বাহিরে ছিল; কিন্তু মির্জা ফখরুল, ড: মইনখান, ড: এমাজুদ্দিনদের বুঝার কথা; আবার এদের সবারই চাকুরী সব সময়ই কথিত বা অকথিতভাবে 'প্রবেশানেল'; এদের অবস্হা হোল ঘরেও নেই জায়গা, বাহিরেও নেই যায়গা; কার জন্য কতটুকু করবেন? তাই কোনমতে টিকে থেকে নেত্রীর ঢোল বাজানো ছাড়া করার কিছুই নেই।
দেখা গেছে, মির্জা ফখরুল মোটামুটি সৃজনশীল ছিলেন: পুলিশী গ্রেফতার এড়াতে 'বোরখা' পরে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন, মিটিং এ এসেছিলেন; বিএনপি'র লোকেরা উৎসাহিত হয়েছিল উনার গুণ দেখে; কিন্তু দেশের প্রথম বা দ্বিতীয় বৃহত্তম দলের সেক্রেটারীকে এরকম হতে হবে, বোরখা পরে পুলিশকে ফাঁকী দিতে হবে? অবশ্যই নয়, পুলিশ যদি এরেস্ট করে করুক, সঠিকভাবে রাজনীতি করলে সবাই সন্মান করতো, পুলিশ এরেস্ট করলেও দেশ উনাকে বের করে নিয়ে আসতো; 'বোরখা' উনাকে অনেক লেভেল নীচে নিয়ে গেছে।
খালেদা জিয়ার '৯১ দিনের তান্ডবের' সময়, ঢাকায় কোন এক পেট্রোল পাম্পের কাছে, পেট্রোল বোমায় পুড়ে নিহত হয়েছেন কয়েকজন সাধারণ নাগরিক; সেটার মামলায় মির্জাকে এরেস্ট করা হয়েছিল; উনি কি পকেটে বোমা নিয়ে হাঁটতো, বোমা মারতো? অবশ্যই না। তিনি পার্টির ২য় উচ্চতম ব্যক্তি হিসেবে জয় পরাজয় সবকিছুর মালিক, সব কিছুর অংশীদার; সেটাই উনাকে শ্রীঘরে যেতে সাহায্য করেছে।
মির্জার নীরবতা দেখে মনে হচ্ছে, উনি নিজের অবস্হান বুঝার চেস্টা করছেন; 'প্রবেশানেল' সেক্রেটারী হয়ে, কি পেলেন, দলকে কি দিলেন, ইত্যাদির অংক কষছেন মনে হচ্ছে; রেজাল্ট অবশ্যই মাইনাস হওয়ার কথা; দেখা যাক, উনার যোগ বিয়োগের ক্ষমতা কতটুকু?
১৫০ জন মৃত ও ২০০জন পংগু মানুষের পরিবারগুলো উনার বিপক্ষে ক্রিমিনাল ও সিভিল স্যু করলে উনার ফাঁসি হবে ভুট্টোর মতো, ও উনার সম্পদ চলে যাবে ভিকটিমদের পরিবারে। এই আইন খালেদা জিয়ার জন্য সবার আগে প্রয়োজ্য।
উনি যদি নিস্ক্রীয় হয়ে যান, খালেদা জিয়াকে আবারো 'প্রবেশানেল' সেক্রেটারী খুঁজতে হবে; সেখানে লাইন লাগাচ্ছে আমাদের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা ও উনার ছেলে মাহী; মাহী হলো তারেক জিয়ার মাফিয়া দীক্ষার গুরু; তারেক আমেরিকার পড়ালেখার জন্য সময় দি্তে পারেনি, তাই মাহী থেকে বিদ্যাবুদ্দী ধার নিতো।
মির্জারা হলো আমীর ওমরাহ মানুষ, উনাদের রাজনীতি নবাব সিরাজ দৌলার বা মীর জাফরের সময়ের; সময় উনাদের নাম মুছে দিবে পুরোপুরিভাবে; ওখানে নতুন নাম আসবে; বোমা দিয়ে পোড়ানোর দিন চলে যাচ্ছে শীঘ্রই; বিএনপি নেত্রী হয়তো ফখরুলের সেলে অবস্হান নেবেন, উনি নিজেই 'অস্হায়ী' হয়ে যাবেন শীঘ্রই হয়তো।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:৪৭