মাঝখানে অনেকদিন ব্লগে অনিয়মিত ছিলাম। লেখা হয়নি প্রায় কিছুই। এই সিরিজটাও তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিছু কিছু ঘটনা তবু ঘটতেই থাকে, এড়ানো যায় না। আমার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। স্বভাবসুলভ এড়িয়ে চলার মানসিকতাটা তবু রয়েই গেছে। মাঝে মাঝে মনে হয়, ওসব ভালো মানুষের মুখোশ এটে রেখে কি লাভটা হয়েছে? কিছু কিছু মানুষের সামনে তবুও পড়ে যেতেই হয়, যাদের কান্ডকীর্তি দেখলে অজান্তেই বলে উঠি-খালি পিডাইতে ইচ্ছা করে!!!
ঘটনাঃ ১
ট্রেনে করে রাজশাহী থেকে ঢাকা আসছি। সাথে ৪ বন্ধু। রাতের ট্রেন। আমাদের সিট পড়েছে পাশাপাশি। এপাশের তিনটা, ওপাশের দুটা। আমরা কথা বলছিলাম। ট্রেন থেমে ছিল বলে কথা একটু জোরেই শোনা যাচ্ছিল। পেছন থেকে একটা ছেলে আমার এক বন্ধু কে বললঃ এই ছেলে এত জোড়ে কথা বলছ কেন? আমি ছেলেটার দিকে তাকালাম। জুনিয়র মনে হল। আমার ওই বন্ধুটা আবার খুব গোবেচারা, ও চুপ করে গেল। আমি ছেলেটাকে বললাম, ভাইয়া, আপনি কি ওকে চেনেন? না চিনলে তুমি করে বলছেন কেন? ছেলেটা বলেঃ ওকে চিনি, তোমাদের সবাইকেই চিনি আমি। কেন যেন মনে হল কথাটা সত্যি বলছে না। আমি বললাম, ভাই আপনাকে চিনি বলে মনে হচ্ছে না, সম্ভবত আপনিও চেনেন না। কাউকে আপনি করে বলার ভদ্রতাটুকু কি আপনার জানা নেই? ওমনি শুরু হয়ে গেল তার এলেবেলে কথা... ভদ্রতা কি তোমার কাছ থেকে শিখতে হবে... ইত্যাদি ইত্যাদি। কথা শেষ হলে বললাম ভাইজান, বহুত হইসে, এইবার অফ জান। কটমট করে ছেলেটা আমার দিকে তাকিয়ে থাকল, আর কিছু বলল না। বেশ খানিকক্ষণ পর, মোবাইলে গান শুনছিলাম। একটা ছেলেকে আসতে দেখলাম। ছেলেটা আমার চেনা। জুনিয়র। ও আমাকে চিনতে পেরে সালাম দিল। তারপর ওই “ভদ্র” ছেলেটার সাথে গিয়ে গল্প করতে লাগল। বুঝতে পারলাম, আমার ধারণাই ঠিক। আহাম্মকটা ঠিকই জুনিয়র। গেল মেজাজ গ্রম হয়ে! এতক্ষণ ধরে হুদাই ফাপড় নিল! ওই ছেলেটা চলে যাবার পর আমি আহাম্মকটাকে ডাকলাম। বললাম ভাইয়া, তুমি অমুক সালের ব্যাচ না? কলেজিয়েট? সে খাবি খাওয়ার মত করে বলল হ্যা! আমি বললাম আমি তোমার থেকে ৪ বছরের সিনিয়র, বুঝলা? বাইচলামী করার জায়গা পাওনা না? থাপরায়ে তোমার দাত ফেলে দেয়া দরকার। ষ্টেশন চলে এসেছিল। ওকে ওইরকম হতভম্ব ভাবে ফেলে আমরা নেমে এলাম। ভাইরে আজকাল কার ছেলেমেয়েদের গ্রোথ বেশি! দেখে বয়স আন্দাজই করা যায়না!
ঘটনাঃ ২
ইকোনমিক্স ক্লাসে বসে আছি। নন ডিপার্টমেন্টাল বলে তেমন আগ্রহ নেই। ম্যাডাম অনেক্ষণ ধরে একটা টপিক বোঝতে গিয়ে ক্লান্ত! উনি খেয়াল করলেন অনেকেরই ক্লাসে মনযোগ নেই। কেউ আকাশের দিকে তো কেউ মোবাইল এর দিকে তাকিয়ে। কেউ কেউ অন্য ক্লাসের পড়া করছে। রেগেমেগে উনি বললেনঃ যার যার ক্লাস করার ইচ্ছা নাই, সে সে বের হয়ে যেতে পারো। আমার ক্লাসে বসে অন্য ক্লাসের পড়া করার দরকার নাই। আমাদের অবাক করে দিয়ে একটা ছেলে বের হয়ে চলে গেল! না, অবাক হবার এখানেই শেষ না, সে সাথে সাথেই ফেরত এল এবং সামনের দিকে বসা তার বন্ধুকে বললঃ তুই না বললি ম্যাম কিচ্ছু পড়াইতে পারে না? এখন ঝিম মেরে পরে আছিস ক্যান?
ম্যাম, আমরা হতভম্ব।
থাক আজ এ পর্যন্তই, না? সবাই ভাল থাকবেন।
আগের পর্বগুলোঃ
খালি পিডাইতে ইচ্ছা করে! – ৪
খালি পিডাইতে ইচ্ছা করে! - ৩
খালি পিডাইতে ইচ্ছা করে! – ২
খালি পিডাইতে ইচ্ছা করে! – ১
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৫৯