অদ্ভুত সব ঘটনা কেন জানি আমার সাথেই ঘটে। মাঝে মাঝে কিছু করারও থাকেনা। তখন ব্লগে শেয়ার করি আপনাদের সাথে...
ঘটনা একঃ
আমি এম্নিতেই খুব ভুলোমনা। ভুলে কোন কিছু হারিয়ে আসা আমার নৈমিত্তিক ঘটনাগুলোর মধ্যেই পড়ে। সেদিনও ডিবিবিএল এটিএম বুথ ব্যবহার শেষে ভুলবশতঃ একটু আগে কেনা একটা সিরাপ আর এন্টিবায়োটিকের প্যাকেট ওখানে রেখে চলে এসেছিলাম। বুথটা আমার বাসার খুব কাছেই, তাই বাসায় চলে আসার পর যখন বুঝতে পারলাম যে ওগুলো ফেলে এসেছি, তখন আবার ছুটলাম ওই বুথে। ওখানে গিয়ে সিকিউরিটিতে যিনি ছিলেন, তাকে বললাম, একটু আগে আমি একটা ওষুধের প্যাকেট রেখে গিয়েছিলাম, আপনি কি দেখেছেন? উনি যা বললেন তা শুনে তো আমার মেজাজের বারোটা বাজতে দেরি হল না! উনি বললেন, “দেখেন আপনারা কাষ্টমার, তাই আমরা কোন কিছু বলতে পারিনা। কিন্তু এসব জিনিস যেখানে সেখানে রেখে যাওয়া ঠিক না”। আমি হতভম্ব, “কি জিনিস?” উনি বললেন, একটু আগে এইখানে একটা ফেন্সিডিলের বোতল পাওয়া গেছে। আমার বুঝতে বেশ খানিকটা সময় লাগল যে উনি আমার ফেলে যাওয়া সিরাপের বোতলটাকেই ফেন্সিডিলের বোতল ঠাউরে বসে আছেন। আমি ওনাকে বললাম, “দেখুন, আমার রেখে যাওয়া প্যাকেটে এন্টিবায়োটিক আর সিরাপ আছে। সাদা রঙের প্যাকেট”। ওনার এক কথা, ঐটা ফেন্সিডিলের বোতল! আমি বললাম, যান বের করে নিয়ে আসেন সেই বোতল। কথায় কেন জানি কাজ হল। হয়ত আমার কাছে টুপাইস ইনকামের ধান্দা করছিলেন উনি। যাই হোক, ভেতরের সেফ থেকে বের হয়ে এল সাদা প্যাকেটে মোড়ানো “ফেন্সিডিল”। আমি ওটা সাথে সাথেই বের করে ওনাকে দেখিয়ে বললাম, এইটা দেখে কি আপনার ফেন্সিডিল মনে হচ্ছে? ওখানে আরো কয়েকজন অপেক্ষমান গ্রাহক ছিলেন। তারা খুবই অবাক হয়ে ভাবছিলেন হয়ত, ঘটনাটা কি? ওদিকে টুপাইস কামানোর চান্স নেই দেখেই হয়তবা সিকিউরিটি সাহেব গজগজ করতে করতে বললেন, এইটা ছাড়াও আরেকটা ফেন্সিডিলের বোতল পাওয়া গেছে...
আমি একদল হতভম্ব চোখের সামনে দিয়ে হেটে চলে এলাম।
ঘটনা দুইঃ
আবার ফেসবুক! আমার এক বন্ধু আছে, দিনরাত ফেসবুকে পড়ে থাকে। আমরা স্কুল জীবনের বন্ধু। কলেজ পেরিয়ে আমরা প্রায় সবাই বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ি। ও থেকে যায় রাজশাহীতেই। যাই হোক, আজকাল ফেসবুকই তার ধ্যন-জ্ঞান। ফেসবুকে আমরা বন্ধুদের ছবিতে তো তাদের ট্যাগ করে থাকি। হঠাত সেদিন দেখলাম ও আমাদের ছবিগুলো থেকে ওর ট্যাগ রিমুভ করে দিয়েছে। ফোন করে পেলাম না। মেইলে জিজ্ঞেস করলাম, ট্যাগ রিমুভ করলি কেন? ও বললঃ আমার ফেসবুকের ফ্রেন্ডরা দেখবে। তাই আমি বললামঃ দেখল তো কি হয়েছে তাতে? ও বলল, আমার চেহারা এম্নিতেই ভাল না, এই ছবিগুলোতে আরো খারাপ আসছে। আমি মনে মনে ভাবলাম এই প্রথম বোধহয় কোন ছেলে চেহারা নিয়ে এতটা কন্সার্নড! মজার ব্যপার ওর চেহারা কিন্তু মোটেও খারাপ না, বরং বেশ ভাল। আমার খারাপ লেগেছে শুধু এই ব্যপারটা, ফেসবুক কে এত আপন করে নেয়ার কোন মানে আছে?
যাই হোক, একটাই চাওয়া আপনাদের কাছে, চারপাশের অসঙ্গতি গুলো দেখে চুপ করে না থেকে একটু চেষ্টা করবেন জিনিসগুলো পালটে দিতে। আমরা কিন্তু চাইলেই পারি, প্রয়োজন শুধু সদিচ্ছার। ভাল থাকবেন সবাই।
এই পর্ব থেকে চলিতে লেখা শুরু করলাম। আগের পর্ব গুলো এখানে আছে। ইচ্ছে করলে পড়ে দেখতে পারেন।
খালি পিডাইতে ইচ্ছা করে! - ৩
খালি পিডাইতে ইচ্ছা করে! – ২
খালি পিডাইতে ইচ্ছা করে! – ১
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৩৯