somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোচিন শহরে ঘোরাঘুরি (২য় খন্ড) - (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১৬)

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



চার্চ ঘোরাঘুরি শেষ করে আমরা চলে এলাম কোচিন শহরের ফোর্ট কচি সংলগ্ন রিভার রোডের জেটি ঘাটে। এখানেই রয়েছে বিখ্যাত চাইনিজ ফিশিং নেট; যাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে জমজমাট পর্যটন। আরব সাগরের স্বচ্ছ নীল জলরাশিতে পেতে রাখা বিশাল সব ফিশিং নেট; এখান হতে টিকেট কেটে ষ্টীমারযোগে ঘুরে আসা যায় আরব সাগরের বুকে।

চাইনিজ ফিশিং নেট নিয়ে কোচিনবাসী’র গর্ব আর প্রচারণা দেখার মত। মূলত ভুখন্ডের সাথে সংযুক্ত চৌকোণা বাঁশের কঞ্চি সম্বলিত এই ধরনের মাছ ধরার জাল বাংলাদেশের নানান প্রান্তেই চোখে মেলবে। টাঙ্গুয়ার হাওড়ে বর্ষা’য় এমন জাল প্রচুর দেখেছি। কোচিনে এই জালের প্রচলন এসেছে চাইনিজদের হাত ধরে। নানান সময়ে কোচিন নানান ভিনদেশীদের হাতে শাষন হয়েছে; আর তারই ফলস্বরূপ পুরো কোচিন জুড়ে রয়েছে নানান দেশীয় নানান কালচারের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণ। ডাচ, পুর্তগীজ, ব্রিটিশ, চাইনিজ সকলেরই কিছু না কিছু এখনো মিশে আছে কোচিনের সমাজ-সংস্কৃতিতে। এই যেমন চাইনিজ নেস্ট।

এখান হতে একশত রুপী টিকেট কেটে আমরাও ঘুরে এলাম আরব সাগরের বুক থেকে, সাথে সাগর থেকে অদূরের কোচিন শহরের ভিন্নতর রূপ। নীচের ছবিগুলো দেখলে মনে হয়, ঘন্টাখানেকের নৌভ্রমণ মন্দ ছিল না। কি বলেন?









































এখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে আমরা চলে এলাম আমাদের হোটেলে, “হোটেল সী লর্ড” এ। এরপর সন্ধ্যার আগে আগে আমরা চলে গেলাম শপিং মলে, উদ্দেশ্য কিছু কেনাকাটা করা। কিন্তু ভারত ভ্রমণে এসে হিন্দি মুভি না দেখলে কেম্নে হয়? কিন্তু এখানে যে সমস্যা। দক্ষিণ ভারতে হিন্দি সিনেমা দেখা অনেকটাই দুরূহ; হাজার হলে এই এলাকা হল, “নো হিন্দি, নো ইংলিশ” এর ;) । যাই হোক, আমাদের হোটেল হতে হাঁটা দূরত্বে অবস্থিত “শ্রীধর সিনেমা’স” হলে একটা শো হয় হিন্দি সিনেমার; ইভনিং শো। আমরাতো মহাখুশী... কিন্তু গিয়ে জানা গেল সিনেমা চলছে প্রিয়াংকা চোপড়া অভিনীত পরিচালক প্রকাশ ঝা’র “জয় গঙ্গাজল”; বহুল আলোচিত এবং ব্যবসাসফল ছবি “গঙ্গাজল” সিরিজের মুভি। বিগস্ক্রিনে সেই সিনেমাই দেখা হল। এই সিনেমা হলে দিনে তিনটি মুভি চলেঃ ম্যাটনি শো’তে স্থানীয় ভাষার ছবি, ইভনিং শো’তে হিন্দি আর নাইট শো’তে হলিউড মুভি। দারুণ কম্বিনেশন!

যাই হোক, রাতের সিনেমা শেষ করে আমরা ফিরে এলাম হোটেলে। হোটেলে এসে ফ্রেশ হয়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে খাবারের জন্য নীচে নেমে এসে দেখি পুরো কোচিন শহর বুঝি ঘুমিয়ে পড়েছে; রাত মাত্র দশটা! অনেকটা ঘুরে, খোঁজাখুঁজি করে হোটেল হতে বেশ কিছুটা দূরে একটা গলিতে কয়েকটা টংগের দোকান টাইপ খাবারের দোকান পাওয়া গেল। ডিম ভাজা, মাছ ভাজা, পরাটা, দোসা এসব খাচ্ছে স্থানীয় খেটে খাওয়া মানুষেরা। সেখান হতে খাবার কিনে নিয়ে হোটেলে চলে এলাম, রাতের বেলা ফাঁকা রাস্তায় একা হাঁটতে একটু অদ্ভুত লাগছিল। অচেনা একটা শহরে, একা রাতের বেলা হাঁটছি, ফাঁকা রাস্তায়...

রাতের খাবার শেষ করে ঘুমাতে যাওয়ার পালা। পরেরদিন আক্ষরিক অর্থে আমাদের প্রায় নয়দিনের কেরালা সফর শেষ হবে; রওনা হব গোয়া’র উদ্দেশ্যে। ট্রেনের টিকেট ঢাকা থেকেই করা হয়ে গিয়েছিল।

অনটপিকঃ লেখালেখি ভাল হচ্ছে না, ভ্রমণ কাহিনী লেখার রসকষ-সিঙ্গারা-বুলবুলি সব হারায় গেছে বুঝি... আরও কত গল্প বাকী, কিন্তু লিখতে গেলে আর কিবোর্ড চলে না। এই দুঃখ কোথায় রাখি? :((

আগের পর্বগুলোঃ
যাত্রা শুরুর গল্প (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০১)
ট্রানজিট পয়েন্ট কলকাতা... অন্যরকম আতিথিয়তার অভিজ্ঞতা (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০২)
অবশেষে কোচিন - তৃতীয় রাতে যাত্রা শুরুর স্থানে (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৩)
ডেস্টিনেশন মুন্নার (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৪)
মুন্নার টি মিউজিয়াম (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৫)
মুন্নার ভ্রমণ - মাতুপত্তি ড্যাম এবং ব্লোসম পার্ক (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৬)
ইকো পয়েন্ট এবং টপ ষ্টেশন অফ মুন্নার (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৭)
ট্রিপ টু কুলুক্কুমালাই... (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৮)
পেরিয়ার লেক - ওয়াইল্ড লাইফ স্যাঙ্কচুয়ারি (থিক্কাদি - কেরালা) (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৯)
শিকারা রাইড এন্ড সানসেট এট ব্যাকওয়াটার (কুমারাকোম - কেরালা) (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১০)
কোভালাম সী বিচ (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১১)
কন্যাকুমারী দর্শন (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১২)
কেরালা ব্যাকওয়াটার হাউজবোটে একদিন - (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১৩)
আলিপ্পে টু কোচিন - (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১৪)
কোচিন শহরে ঘোরাঘুরি (সেইন্ট ফ্রান্সিস চার্চ এবং ব্যাসিলিকা চার্চ) - (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১৫)

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:২৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×