somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেন এবং কীভাবে কবি নজরুলকে জানতে চাই? (কৈফিয়ত)

২৬ শে জুলাই, ২০১১ সকাল ১১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রয়োজনীয় নোট-
আমাদের জাতীয় কবি প্রাণের কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পর্ব এ ব্লগে আপনারা পড়েছেন। কেউ কেউ বাহবা দিয়েছেন, কেউ হয়ত এমন তথ্য জেনে মনক্ষুণœ হয়েছেন।

আমি এখনও একজন ছাত্র। আমার অধ্যয়নের বিষয়ের সাথে কবি নজরুলের কোন সম্পর্ক নেই। তবু ছোটবেলা থেকে কবি নজরুলের প্রতি আমার প্রচন্ড কৌতুহল। তার কাব্য কবিতা যতই পড়েছি, ততই তাকে জানতে ব্যাকুল হয়েছি। যত বই কিনেছি, পড়েছি- সবগুলোতে প্রায় একই তথ্য দিয়ে ঠাসা। তার জীবনের একটি পূর্ণ চিত্র আমি কোথাও পাইনি।

নজরুল গবেষকরা সবাই তাকে নিয়ে লিখেছেন এবং ওসব লেখায় তার ব্যক্তিত্বের চেয়ে তার কাব্য ও প্রতিভার আলোচনাই বেশী। কেউ তাকে নিয়ে লিখতে বসে নিজেদের গুণ গরিমা তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন। একই কথা প্রযোজ্য পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত অসংখ্য প্রবন্ধ ও রচনার বেলায়।

কাজী নজরুলের জীবন সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে বেশ কিছূ দুর্লভ ও পুরনো বই সংগ্রহ করি ঢাকার বিভিন্ন জায়গা ও পুরনো লাইব্রেরী থেকে। মুন্সী জুলফিকার হায়দারের লেখা- নজরুল জীবনের শেষ অধ্যায় (বাংলা একাডেমী সংস্করণ-১৯৬৪), বিশ্বনাথ দে সংকলিত নজরুল স্মৃতি (সংস্করণ-১৯৭১), আব্দুল কাদির সম্পাদিত নজরুল রচনা সম্ভার (সংস্করণ-১৯৬৯) সহ বেশ কিছু বই আমার কাছে রয়েছে।

এ বইগুলো বারবার পড়ে একই ঘটনা বিভিন্ন বইয়ে মিলিয়ে যাচাই করে আমি এ তঘ্যগুলো সংকলন করছি। এ ধারাবাহিকের লেখাগুলো একটি বৃহৎ উপন্যাসের খসড়া হিসেবে সংকলিত হচ্ছে। আগামী দু তিন বছর পর হয়তো কবির জীবনের নিরেট তথ্যচিত্রের এ খসড়াগুলোর সাহায্যে একটি উপন্যাস লেখার কল্পনা ইচ্ছায় রূপান্তরিত হতে পারে।

কবির জীবন ছিল রহস্যময়। কবির জীবনছিল দুঃখঘেরা। নির্মম তিরস্কার আর কটুবাক্য কবির পেছনে লেগেছিল জীবনভর। কবির জীবনের কিছূদিক এমনও রয়েছে যা মেনে নেয়া কঠিন। একজন মানুষ হিসেবে এ ভুল তার জীবনে খুবই স্বাভাবিক। যারা কবিকে একদম সাধু দেবতা করে হাজির করতে চান, তারা এক্ষেত্রে লুকোচুরি কিংবা মিথ্যার আশ্রয় নেন।

একথা অনস্বীকার্য সত্য যে, কবি নজরুল ইসলামের প্রতিভা তার এ সবগুলো ভুল ও খামখেয়ালী ছাপিয়ে সূর্যের মতো জ্বলজ্বল করছে। বিদ্রোহী কবিতার উৎসমুখ আমাদের কবি নজরুলের এসব দিক তাই আমার কাছে বিস্ময়ের। আমি শুধু কবি নজরুলকে ভালোবাসি না, ভালবাসি তার ব্যক্তিত্বকেও।

শুধু কাব্য প্রশংসা করে তাকে নিয়ে মেতে থাকলে কেমন যেস স্বার্থপর স্বার্থপর মনে হয়। কবি তার ব্যক্তিগত জীবনেও এসব পছন্দ করতেন না। তার প্রিয় এক বন্ধূকে তাই বারণ করেছিলেন তার মৃত্যুর পর যারা তার গীত গেয়ে বক্তৃতার বুলি আওড়াবে- সেসব অনুষ্ঠানে যেন তিনি না যান।

কবির জীবন নিয়ে আলোচনা করতে গেলে হিন্দু মুসলিম প্রসঙ্গ একেবারে স্বাভাবিক। তার সাথে এ দু জাতির ব্যবহার সম্পূর্ণ প্রশংসনীয় ছিল না। অসা¤প্রদায়িক ভাবে লিখতে গেলেও এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া যায় না। আমি তাই একজন দর্শকের ভূমিকায়। নির্মোহ ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে সেকালের কবির চারপাশের মুসলিম ও হিন্দুদের আচরণগুলো উল্লেখ করতে চাই এ সংশ্লিষ্ট পর্বে।

মনে রাখতে হবে, এত বছর পর আজকের এখন এই সময়ে এসে সেসব নিয়ে আহত কিংবা হুজুগে হওয়ার কোন অবকাশ নেই। এখানে আমরা নির্বাক দর্শক। কবিকে নিয়ে ব্যবসা করার মতো লোকেরও অভাব হয়নি, কবির জীবদ্দশায় এবং কবির মৃত্যুর পরও। কাজেই নিজেদের স্বার্থে আঘাত লাগলেও সত্যকে মেনে নেয়াই বুদ্ধিমানের পরিচয়।

জাতীয় কবিকে নিয়ে লেখা যেমনি গৌরবের, তেমনি ভয়ের। কাজেই আস্থা ও নিরপেক্ষতা এখানে সর্বাগ্রে প্রয়োজন। কেউ কেউ তথ্যসূত্র জানতে চেয়েছেন- সেসব জানাতে এ কয়েকটি কথা লেখা। আপনার সবাই ভালো থাকুন। ভাল লাগলে জানাবেন, খারাপ লাগলেও।


নজরুলের রক্ত নেয়া হলো না... কিন্তু কেন??
পাগলের গলায় গান ধরালেন কবি নজরুল
কবি কাঁদলেন এবং বদলে গেলেন যে ঘটনায়
কবি নজরুলের অদ্ভূত কান্ড কারখানা
চলুন, কাজী নজরুলকে দেখে আসি কলকাতা থেকে..
নজরুলের গান গজল কীভাবে তৈরী হতো....
কাজী নজরুলের খেয়ালখুশী
কবি যখন থেকে নির্বাক হলেন.. কবির ঢাকা ভ্রমণের বিচিত্র কান্ড
নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন কবি নজরুল, কিন্তু জয়ী হয়েছিলেন
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ২:২৭
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×