somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ব ধরিত্রী দিবস আজ

২২ শে এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ১২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আজ ২২ এপ্রিল ।। বিশ্ব ধরিত্রী দিবস ।।



দিবসটির ৪১তম বার্ষিকী আজ। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য হল "A Billion Acts of Green . " বিশ্বের প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা ও ভালোবাসা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে দিবসটি পালিত হয় । আমাদের মনে রাখতে হবে প্রকৃতি যখন বিরূপ হয় মানুষ তখন অসহায় হয়ে পড়ে। প্রকৃতিকে কাবু করার চেষ্টা মানুষের মধ্যে অনেকদিন থেকেই। সবক্ষেত্রে সফল হয়েছে এমন কথা বলা যাবে না। আবার উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে এমনও বলা যাবে না। তেমনি একটা অবস্থায় আবার এসেছে ধরিত্রী দিবস। মানুষকে নতুন করে ভাবতে হবে আমরা প্রকৃতির সন্তান। মাতৃশ্রদ্ধা যেন পায় প্রকৃতি।

পৃথিবীর অনেক দেশেই সরকারিভাবে এই দিবসটি পালন করা হয়। উত্তর গোলার্ধের দেশগুলিতে বসন্তকালে আর দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলিতে শরতে ধরিত্রী দিবস পালিত হয়। ১৯৭০ সনের এই দিনে মার্কিন সিনেটর গেলর্ড নেলসন ধরিত্রী দিবসের প্রচলন করেন। এটি ১৯৯০ সালে আন্তর্জাতিক ভাবে পালিত হয় এবং ১৪১টি জাতি দ্বারা আয়োজন করা হয়েছিল।

সিনেটর গেলর্ড নেলসন ১৯৭০ সালে যে আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন তার নাম 'Environmental Teach-In' । এ আন্দোলনের প্রথম সম্মেলনে প্রায় ২০ মিলিয়ন লোককে যুক্ত করেছিলেন নেলসন। কিন্তু দিবস উদযাপন,সভা-সেমিনার আয়োজন, আন্দোলনে অংশগ্রহণের ফল বিশ্ববাসী কী পেয়েছে? দিনে দিনে এ ধরিত্রীর আরো বিপর্যয় !!!। বিশ্বের অস্তিত্বের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি কার্বনের নিঃসরণ না কমে বরং বাড়ছে। এ গ্যাস নিঃসরণকারীদের তালিকায় উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি যোগ হয়েছে চীন, ভারত আর ব্রাজিলের মতো উন্নয়নশীল দেশ। ফলে বিপর্যয় আরো ঘনীভূত হচ্ছে। হাইতিতে ভূমিকম্পে মারা গেল দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষ। তার পরপরই চিলি, ফিলিপাইন আর সবশেষ চীনে ভূমিকম্পে মারা যায় কয়েক হাজার মানুষ। কয়েক মাস আগে ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জাপান। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।
বিশ্বে এখন এই যে ঘন ঘন ভূমিকম্প, খরা, অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল এর সবই আমাদের নিজেদের ডেকে আনা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর সবই হচ্ছে বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায়। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বরফ গলে সাগরের উচ্চতা বাড়ছে। ফলে ইতিমধ্যে তলিয়ে গেছে বিশ্বের বহু জনপদ। আর এই ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশগুলোর শীর্ষে আছে আমাদের এই বাংলাদেশ। কিন্তু এ তাপমাত্রা বৃদ্ধি সম্পর্কে আমাদের দেশের মানুষ কতটা সচেতন?

আমাদের দেশে আজ পাহাড় কেটে বসতি গড়ে তোলা হচ্ছে, বনের গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে, সমুদ্র সৈকতে হচ্ছে আবাসিক এলাকা। বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শহরের দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ঢাকা শহরের মানুষ হুহু করে বাড়ছে। আর এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাড়ি-গাড়ি। গাড়ির তালিকায় বাসের তুলনায় প্রাইভেট কারের পরিমাণ ১০ গুণের বেশি। গবেষণায় দেখা যায়, কোনো শহরে প্রাইভেট কারের পরিবর্তে যদি ট্রেন ও বাসের মতো Mass transport ব্যবহার করা যায়, তাহলে সেখানে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ কমানো সম্ভব। কিন্তু আমাদের এ শহরে বাস-ট্রেন কমছে আর প্রাইভেট কার বাড়ছে। তাও আবার রিকন্ডিশনড, যা পরিবেশের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর। এ অবস্থায় আমাদের এই আবাসভূমিকে বাঁচাতে আবারও জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশ এ ব্যাপারে যতটা সোচ্চার আমরা ঝুঁকির শীর্ষে থেকেও ততটাই নমনীয়। আমাদের আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল দখল, রাজনীতির মাঠ দখল আর সবশেষে ক্ষমতা দখলের। কিন্তু ক্ষমতায় বসতে গেলে আগে দেশকে বাঁচাতে হবে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে দেশকে বাঁচাতে এক দিকে যেমন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে জোটবদ্ধ আন্দোলন দরকার, তেমনি দরকার নিজের দেশের প্রত্যেক নাগরিককে এ ব্যাপারে সচেতন করে তোলা। এবারের ধরিত্রী দিবসে সেটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।


সহায়ক উৎসসমূহ:
১.বিশ্ব ধরিত্রী দিবসে আমাদের অঙ্গীকার
২.ধরিত্রী দিবস
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ২:১১
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×