somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণিতযন্ত্রের গণিত লইয়া একটি রম্য অবতারনা

২৯ শে এপ্রিল, ২০১০ সকাল ৯:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মূল রচনা -

Click This Link

কমলা দপ্তরে বড়ই শোকে কাতর হইয়াছে আজ । মানব জাতির কপালে শনির রেখা দেখা দিয়াছে । বাঙালীর বর্ণমালা, অক্ষর লইয়া এতদিন টানাটানি চলিয়াছে - ইহাতে আপাততঃ বাঙালীর অগ্রযাত্রা ব্যাহত হইলেও দুনিয়ার অগ্রযাত্রা থামিয়া ছিল না । কিন্তু আজ ইহা সে কি খবর শুনিল । হাজার বছরের পুরনো যে যোগ-বিয়োগ তাহাও নাকি লোকে প্যাটেন্ট করিয়া লইবার চেষ্টা করে!

যোগ-বিয়োগ করা মানুষের অগ্রযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ । আর কোন প্রাণীর সংখ্যার ধারনা আছে কিনা তাহা খুব পরিষ্কার না থাকিলেও উহা যে কেবল কিছু গণনা করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ তাহা পরিষ্কার । মানুষই কেবল ইহাকে বাস্তব থেকে পরাবাস্তব মাধ্যমে লইতে পারিয়াছে এবং প্রাথমিক যোগ-বিয়োগ থেকে উচ্চতর আরো জটিল গণিতের উন্মেষ ঘটাইয়াছে ।

যোগ-বিয়োগ এখন একটি অতীব সরল ব্যাপার - আমরা মানবেরা, শিশু অক্ষর চিনিবার আগেই তাহাকে যোগ-বিয়োগ শিক্ষা দিতে পারি । এই যোগ-বিয়োগ যেখানেই করা হউক না কেন তাহা আসলে মূল ধারণার চেয়ে আলাদা কিছুই নহে । স্থানাঙ্কের হিসাবের সুবিধার্তে যে একটি সংখ্যা হাতে রাখিয়া পরবর্তী ফলের সাথে সামঞ্জস্য করা লাগে ইহা যেকোন কোমলমতি শিশুকে জিজ্ঞাসা করিলেই বলিয়া দিবে । কিন্তু আজ জানিতে পারিলাম এক বাঙালী নাকি কম্পিউটারে এই যোগ-বিয়োগের নিয়ম-রীতির স্বত্বের জন্য দাবিদার হইয়াছেন ।

এই অতি সামান্য ব্যাপার যাহা শিশুরাও বলিয়া দিতে পারে তাহা কীভাবে কেবল কম্পিউটারে ব্যবহার উপযোগী করিবার জন্য তিনি নিজের উদ্ভাবন দাবি করিবেন তাহা নিতান্তই আশ্চর্যের ব্যাপার । উদ্বৃত্ত সংখ্যা হাতে ধরিয়া হউক, পায়ে ঠেলিয়া হউক, মাথায় গুঁজিয়া হউক বা খাতার কোনে টুকিয়া রাখিয়া হউক অথবা প্রসেসরের মেমরির কোন লুক্কায়িত প্রকোষ্ঠ হইতে বাহির করিয়া হউক উহাতে মূল যোগ-বিয়োগের পদ্ধতির কোন ব্যত্যয় হয়না ।

যাহাই হউক এতদিন এই কাজ বিদেশী কিছু স্বার্থান্বেষী লোকই কেবল করিত, উহাতে কোনও বাঙালী নাম লিখাইয়া বাঙালী জাতির নামে কলঙ্ক দেয় নাই । বিদেশীরা নির্লজ্জ, স্বার্থান্বেষী জাতি - তাহারা অর্থের জন্য কামড়া কামড়ি করে, ইরাকে হানা দেয়, বাপ-মা ভুলিয়া যায় - এহেন খারাপ কাজ নাই যাহাতে তাহাদের নাম পাওয়া যাইবে না ।

কিন্তু আজ এই খবর শুনিয়া অব্ধি আমার আহার নিদ্রা ঘুম বন্ধ হইয়া গিয়াছে । সুশীল জাতি হিসাবে বাঙালীর নাম মনে হয় মুছিয়া যাইবার উপক্রম হইল । চিন্তা করিয়া দেখুন যোগ-বিয়োগ করিবার পদ্ধতির স্বত্ব দাবি করিয়া তিনি কি চূড়ান্ত ধৃষ্টতার পরিচয় দিয়াছেন । অতঃপর হয়ত বাজারের হিসাব কষিবার গণক যন্ত্র কিনিলেও উনি আসিয়া লভ্যাংশের দাবিদার হইবেন ।

বাঙালী স্বাধীনচেতা, মুক্ত চিন্তার জাতি । এই সকল অতি সাধারণ বিষয় লইয়া অপরাপর জাতির লোকেরা ব্যবসা করিলে করিতে পারে কিন্তু কোনও বাঙালী কেন তাহা করিবে বা তাহার চেষ্টাই বা কেন করিবে ? ইহা কোকিল কূলে জন্মগ্রহণ করিয়া কাকেদের দলে ভিড়িবার চেষ্টা মাত্র বই নয় ।

তাই আজিকা আমার অনুভব এই খবর শুনিয়া আমাদের সকলের কেবল বসিয়া থাকিলে চলিবে না । আমাদের সকলকেই এম্ববিধ ধৃষ্টতার বিরুদ্ধে ঝাঁপাইয়া পড়িতে হইবে । সকলের প্রচেষ্টায় আমরা ঐ সকল জন বিরোধী গবেষকদের গবেষণার নামে বর্ণ, বর্ণমালা, পাটীগণিত, বীজগণিত লইয়া খেল তামাশা রুখিয়া দিতে সমর্থ হইব বলিয়া আমার দৃঢ় বিশ্বাস ।

পুনশ্চঃ এটি একটি রম্য রচনা । এতে তথ্যগত ভুল থাকাই স্বাভাবিক । অতএব এটিকে নিতান্তই আনন্দের খোরাক হিসেবে দেখবার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করছি ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১০ সকাল ১০:৪৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×