somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ দু'জনার দুটি পথ দু'টি দিকে গেছে বেঁকে (১২)

২১ শে মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগের পর্ব ..(১১)

তখন বইমেলা চলছিল, আমরা গিয়েছিলাম বই মেলায়, আমার জীবনে এমন কোন নারী বন্ধুর সাথে ঘুরতে যাওয়া বা একসাথে রিকশায় চড়ার অভিজ্ঞতা এই প্রথম সম্ভবত, সেইদিন দ্বিধা আর শংকার বাইরে আমি আরো কিছু একটা অনুভব করেছিলাম তবে সেটা কি আমি সেদিন বুঝিনি কিংবা আজও বুঝা হয়নি আর কখনো বুঝা হবেনা তা নিশ্চিত বলা যায়।

বই মেলায় আমরা খুব একটা সময় ছিলামনা, দু'একটা ষ্টল ঘুরে রুমি একটা বই কিনেছিল "শেষের কবিতা" এইতো সেদিন আমি এই উপন্যাসটার খুব প্রশংসা করেছিলাম রুমির কাছে, "ভাষা, চরিত্র, কাহিনী, বর্ণনাশৈলী সব মিলিয়ে রবীন্দ্রনাথের এই উপন্যাসটি আজও আমার কাছে আধুনিক এবং সমসায়িক, উপন্যাসটি পড়লে আমার কখনো মনে হয়না আমি রবীন্দ্রযুগের কোন লিখা পড়ছি, মনে হয় বর্তমান সময় এবং প্রেক্ষাপটে লিখা।

আবার রিকশা নেয়া হল, আমি নেমে যাব মাঝপথে বাস ষ্টেন্ডে আর রুমি যাবে তার নানু বাড়ীতে, আসলে সে নানু বাড়িতেই থাকে, বড় মামার মেয়ে মামাতো বোন রিমি আর রুমি সম বয়েসি, এমনকি তাদের নাম ও রাখা হয়েছে মিল রেখে, কলেজ থেকে রুমিদের বাড়ীর দুরুত্ব বেশী হওয়াতে সে মামা বাড়ীতেই থাকে রিমির সাথে।

রিমির সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল আরো অনেক পরে, একদিন কলেজে এসেছিল, কলেজের সেদিকটায় কোন এক কাজে যাচ্ছিল আর যাবার পথে ভাবল রুমিকে ও সংগে নেবে তাই কলেজে চলে এল রুমির খোঁজে, সেই সূত্রে আমার সাথে পরিচয়, তবে আমি নিশ্চিত ছিলাম রিমি সেদিন আমাকেই দেখার ছলে এসেছে, রুমি নিশ্চই তাকে আমার ব্যাপারে কিছু বলেছে, কেননা তারা দু'জনের ভাবটা এমন যে, একজনের পেটে একটা কথা ঢুকলে সেটা নিমিষেই অন্যের পেটে চলে আসে, যতক্ষণনা কথার এই ট্রান্সমিশনটা না হচ্ছে ততক্ষণ অস্থিরতা বোধ করে বলা যায়।

আমরা তিনজন সেদিন কলেজের পাশেই একটা রেষ্টুরেন্টে কিছুটা সময় পার করেছিলাম, সেই দিনের একটা দৃশ্য আমার চোখে এখনো ভাসে এবং মাঝের মধ্যে মনেও পড়ে, "রিমি একবার আমার দিকে তাকাচ্ছিল আবার রুমির দিকে, রুমি ব্যাপারটা খেয়াল করেনি কিন্তু আমি বুঝতে পারছিলাম, রিমি একটু চাপা হাসি মুখে এই কান্ডটা করছিল" জিজ্ঞাসা করেছিলাম "হাসছেন কেন" বলেছিল কিছুইনা, এমনি।

রুমি বইটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিল, "এই নাও তোমার বার্থ ডে গিফ্ট।" আমি বলেছিলাম কিছু একটা লিখে দাও, সে বলল কি আর লিখব, এখন কিছুই মনে আসছেনা, আমিও জেদ ধরলাম, লিখতে হবে না হলে নেবনা, এই রিকশা থামাও বলে থামিয়ে দিলাম রিকশাটা, না লিখা হলে রিকশার চাকাও ঘুরবেনা, রুমি বাধ্য হয়ে লিখেছিল।

"পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি
আমরা দু'জন চলতি হাওয়া পন্থি।"

বইটা আমি ঘরে এসে বড় ভাইয়ার বুকশেল্ফে রেখে দিয়েছিলাম আর রুমির লিখা পৃষ্ঠাটা ছিড়ে রেখেছিলাম, কেননা আমি চাইছিলামনা অন্য কেউ বইটা পড়তে গিয়ে আবার কোন উপন্যাসের প্লট খুঁজে পাক, পৃষ্ঠাটা আমি যতনে রেখেছিলাম কিন্তু এখন কোথায় আর জানা নেই।

পড়ালিখার পাশাপাশি চাকরী খুঁজছিলাম আমি, সবসময় মাথায় কাজ করতো কিছু একটা করতে হবে আমাকে, প্রথমে দু'একটা ন্যুনতম সেলারীতে চাকরী করেছি আর ছেড়েছি অবশেষে স্থিতি হলাম একটা কোম্পানীতে।

খুব মজা করতাম চাকরীটাতে, আমরা একসাথে বিশজন জয়েন্ট করেছিলাম একই কোম্পানীতে একই সময়ে। কোম্পানীর অনেকগুলো ব্রাঞ্চ ছিল, অনেককেই ব্রাঞ্চ অফিসে ট্রান্সফার করল,আমরা চার পাঁচজন জয়েন্ট করলাম হেড অফিস, মামুন সাহেব আর সায়েম সাহেব এখনো আছেন সেই কোম্পানীতে, যাদের সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা এখনো আছে এবং যাদের সাথে সম্পর্কটা আর সাহেব থাকেনি, ভাই হয়ে গিয়েছিলাম সবাই, নাহিম ভাই এখন আছেন দুবাইতে, জব করছেন এবং টুকটাক ব্যাবসা ও করছেন, আমাকে কেন জানি খুব পছন্দ করতেন নাহিম ভাই, আর আমাদের সিনিয়র ছিলেন ইমতিদা।

চলবে........

পরের পর্ব (১৩)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:০৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×