রোওজালিনের আজ জন্ম দিন। জন্ম দিনে কেক কাটা হয়, গান গাওয়া হয়, ঘর ভরে যায় অতিথি তে। কেউ বলে- হ্যাপি বার্থ ডে, কেউ বলে- বেঁচে থাকো বহুদিন দিন। কিন্তু আজ রোওজালিনকে এমন কিছু বলার মত কেউ নেই , মৃতের মত সে পরে আছে বিছানায়।
বিষণ্ণ মনে একটা কবিতার লাইন সে বির বির করে আউরালো “আজ সব কিছু অর্থহীন, সব কিছু বর্ণহীন। রোওজালিন ডুকরে কেঁদে উঠল। এই জীবন সে চায় নি, সে চেয়েছিল সুন্দর একটা সাজানো গোছানো জীবন। অন্য সব মেয়েদের মত তারও স্বপ্ন ছিল সবাইকে নিয়ে সুখের দিন কাটাবার। তবে এমন কেন হল?
ওর মা গত বছর হার্ট অ্যাটাকে মারা গেল। ছয়মাস না যেতেই ওর বাবা ঘরে নতুন বৌ আনল। এর পরের ঘটনা খুবই কমন।রোওজালিনের বাবা রোওজালিনেকে বিয়ে দেবার জন্য উঠে পড়ে লাগলো। কিন্তু রোওজালিন কিছুতেই চায়নি বিবিএ অসম্পুন্ন রেখেই বিয়ে করতে। তাই কাকুতি মিনতি করে আরও কিছুটা সময় ভিক্ষা নিল সে।
রসি ছিল রোওজালিনের ক্লাসমেট। ধির স্থির শান্ত স্বভাবের। কথা বার্তা বলতো কম। তবে যা বলতো খুব স্পষ্ট ও গোছানো। লম্বা নাক, সুন্দর ঠোঁট, মায়াবী দৃষ্টি। । এককথায় এই ছেলেকে রুপকথার রাজপুত্র বলা যায়।
মারাত্মক সুদর্শন হওয়া সত্তেও কেন যেন রসিকে সবাই এড়িয়ে চলতো। নিরীহ ধরনের এই ছেলেটা কে একা থাকতে দেখে রোওজালিন এর খুব খারাপ লাগতো। তাই সে নানান বাহানায় রসির সাথে কথা বলত । রসিও ওর সঙ্গে আন্তরিক হয়েই মিশতো। অতপর একসময় ধিরে ধিরে ওরা ঘনিশটো হতে শুরু করে এবং বুঝতে পারে এক জন আরেক জনকে না দেখে বেশিক্ষণ থাকতে পারেনা!
এর ই নাম কি প্রেম ভাবে রোওজালিন! ভেবে নিজেই নিজের কাছে লজ্জা পায়। এই প্রেম নিয়ে কত হাসি ঠাট্টাই না করত সে। মনে আছে একবার তার বান্ধবি শ্যামা একটি ছেলের প্রেমে পরেছিল বলে তার নাম দিয়েছিল রোওজালিন অপু বিশ্বাস। আর আজ কিনা সে নিজেই...।।
কিন্তু কি করা! রসির সাথে একদিন কথা না হলে যে তার ভীষণ কষ্ট হয়। মনে হয় এই বুঝি রসি অন্য কারো হয়ে গেল।তাই যে করে হোক রসিকে তার ধরে রাখতেই হবে। কিন্তু কোন উপায়ে সেটা করা যায়, এই ভেবে রউজালিন যখন দিশেহারা ঠিক তখন ই তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসলো স্বয়ং রসি।
জানো কাল কে রিফাত এর সাথে আমার প্রায় হাতা হাতি হয়ে যাচ্ছিল।
তাই নাকি ? কেন!
ও আমাকে বলল দোস্ত আমাকে একটা ব্যাপারে তোর হেল্প করতে হবে।
আমি বললাম কি? ও বলল রোওজালিন কে আমি খুব লাইক করি। তোর সাথে তোঁ ওর খুব খাতির। ওর নাম্বার টা একটু দে?
আমি বললাম তুই নিজেই চেয়ে নে।
ও বলল তোর দিতে সমস্যা কি ?
সমস্যা আছে, ওর বেক্তিগত নাম্বার তোকে কেন দেব!
হুম আমি জানতাম তুই দিবিনা, কারন তুই নিজেই তোঁ ওর প্রেমে হাবু ডুবু খাচ্ছিস।
তাতে তোর কোন প্রবলেম আছে?
প্রবলেম নাই, তবে এমন সেক্সি একটা মাল তুই একা খাবি এটা কেমন কথা? আমাকেও একটু ভাগ দে...।।
যখনই ও এই কথা বলল তখন ই আমি ওর কলার চেপে ধরলাম। শেষে অন্যরা এসে ওকে বাঁচিয়েছে।
ছি ও এই কথা বলেছে? ও নিজেই তোঁ একটা গ্রাম্য খ্যাঁত। মেয়েরা যে এখন আর আগের মত পণ্য নেই, এটা বোধয় ও জানেনা। আমি আজ ই সারের কাছে গিয়ে কমপ্লেন করব ওর নামে।
না না তুমি আর কিছু করতে যেও না। ব্যাপার টা মিটমাট হয়ে গেছে। ও আমাকে সরি বলেছে। আমিও ওকে বলে দিয়েছি আর যদি কখনও রোওজালিন এর নামে এমন কথা বলিস তা হলে তোর হাড্ডি মাংস আমি এক করে ফেলব। আসলে রোওজালিন তোমাকে আমি এতো বেশী লাইক করি যে তোমার নামে কেউ কিছু বললে আমি ঠিক থাকতে পারিনা।
এ রকম লাইক কিন্তু আমাকে অনেকেই করে, এ কথা শুনে রউজালিন হটাত হাতা হাতির ব্যাপারটা ভুলে গেল।
তুমি বুঝতে পারছনা, আমি আর সবার মতনা। আমি শুধু তোমাকে লাইক ই করিনা, বরং...।।
বরং কি?
তুমি বঝনা?
না বুঝি না, সরা সরি বললে তার পর বুঝব, রোওজালিন দুশ্তমির হাসি হাসে।
সরা সরি বলার পর যদি তুমি অন্য রকম হয়ে যাও?
না হবনা।
প্রমিজ?
প্রমিজ।
রসি রউজালিনের আরও কাছে এগিয়ে আসে। তার হাতটা জোরে চেপে ধরে বলে- আই লাভ এউ, ডু ইউ লাভ মি ?
এই রউজালিন দাড়া, তোর সাথে কথা আছে।
রোওজালিন ক্যান্টিনের দিকে যাচ্ছিল হটাত পিছু ফিরে দেখে অপু। অপু হচ্ছে ওদের ক্লাসমেট, খুব ই ভালো ছেলে সে।
তোর বয় ফ্রেন্ড এর সমস্যা টা কি?
কেন কি হয়েছে?
গত ২ মাস আগে আমার কাছ থেকে এক হাজার টাকা ধার নিয়েছে। সেই যে নিয়েছে, আর দেবার নাম নেই। এটা কেমন?
এতে উত্তেজিত হবার কি আছে? টাকা নিয়ে ও তো পালিয়ে যাচ্ছেনা। রোওজালিন কিছুটা বিরক্ত হল।
পালানো বড়ো কথা না, বড়ো কথা হোল সে কমিটমেনট ব্রেক করেছে।
কিসের কমিটমেনট!
আমার কাছে যখন টাকা চাইল, আমি বললাম নেই। তখন হাতে পায়ে ধরে বলল দোস্ত যে করেই হোক টাকাটা যোগাড় কর। আমি দশ দিনের মধ্যেই ফেরত দেব।
ওর আকুতি দেখে আমি মাহির কাছ থেকে টাকা ধার করলাম। কিন্তু যার জন্য এতো সেক্রিফাইস ,সেই শেষে কুড়াল মারল। পরশুদিন আমার পকেট থেকে টাকা টা মাহিকে দিতে হল। এখন তুই বল আমার উত্তেজিত হওয়া টা কি অস্বাভাবিক?
রোওজালিন নিজের পার্টস থেকে একহাজার টাকার নোট বের করে অপুর দিকে বাড়িয়ে বলল- ধর।
আজব, তুই কেন দিচ্ছিস!
তোর টাকা দরকার তুই রাখ। ওর কাছ থেকে পরে আমি নিয়ে নেব।
অপু মানিব্যাগ এ টাকা ভরতে ভরতে বলল- শোন রোওজালিন তোকে একটা কথা বলি। কিন্তু প্রমিজ কর রসি কে বলবিনা।
প্রমিজ করলাম।
রসি কিন্তু প্রায়ই এর ওর কাছ থেকে টাকা ধার করে। এটা কিন্তু ভালনা।
রসির মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে রোওজালিন বলল- আচ্ছা তোমাকে একটা কথা বলি?
হু!
তোমাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা কেমন?
কেন!
না এমনি জানতে চাইলাম।
রসি হটাত করে মাথা সরিয়ে শক্ত গলায় বলল- তোমাকে কে তো একবার বলেছি আমার আব্বু সরকারী ব্যাংক এর ক্রেডিট অফিসার। একজন মাঝারি মানের ব্যাংক কর্মকর্তার অবস্থা কেমন হয় বোঝ না? যদি মনে করো আমার মত মিডেল ক্লাশ ছেলে কে দিয়ে তোমার হবেনা, তবে তুমি ...।।।
রোওজালিন ভ্যাবা চ্যাঁকা খেয়ে গেল। বুঝতে পারল হটাত করে এই কথা বলে বিরাট ভুল হয়ে গেছে। রসি কে তারাতারি জড়িয়ে ধরে বলল- ছিঃ আমি কি সেই কথা বলেছি?
বলতে হয়না। কথার ধাঁচ শুনলেই বোঝা যায়, রোওজালিন কে সরিয়ে দিলো রসি।
কি বলতে চাও তুমি?
ভেরি সিম্পল । আজকাল কার মেয়েরা অনেক বেশী কমার্শিয়াল। এরা টাকা ছাড়া কিছু বোঝে না।
দ্যাখো আমি কিন্তু সেরকম নই। আমি আলাদা।
রসি কোন উত্তর দিলনা। রাগ করে গম্ভীর হয়ে বসে থাকল।
রোওজালিন কিছুক্ষণ থেমে মিষ্টি হেঁসে রসিকে পটানোর ভঙ্গিতে বলল - হানি তোমাকে একটা অনুরধ করলে রাখবে?
কি?
আগে বল রাখবে কিনা ?
ভনিতা করোনা। সব সময় ভনিতা ভাললাগে না।
শোন তোমার যদি কোন টাকার প্রয়োজন হয়, আমাকে বলবে। লজ্জা পাবেনা, কেমন? আমি তোঁ তোমার দুরের কেউ নই, তাইনা?
এ কথা শুনে রসি কেমন যেন উদাস ভাবে আকাশের দিকে তাকাল। রোওজালিন অবাক হয়ে লক্ষ করলো ,রসির দু চোখ বেয়ে টপ টপ করে অশ্রু ঝরছে।
এক ইদে রসি জানালো, রোওজালিনকে নিয়ে তার বিশেষ প্লান আছে।তাই সে যেন সকাল সকাল বেড়িয়ে পড়ে। রোওজালিন জানালো এত সকালে আব্বু যদি বেরোতে না দেয়? রসি বলল -একটা দিন ই তোঁ! তাও আবার ঈদ। যে করেই হোক ম্যানেজ করো।
প্লানমাফিক রোওজালিন সকাল সকাল এক হিসাবে লুকিয়েই রসির সাথে বেড়িয়ে পড়লো। রসি ওকে নিয়ে সোজা চলে গেল আশুলিয়ায়। ওখানে অনেকক্ষণ ঘুরে ফিরে পড়ন্ত দুপুরের দিকে একসময় সে রোওজালিনকে নিয়ে এল লিওনের বাসায় ।
লিওন রসির বন্ধু। তাকে রসির সাথে আগেও দেখেছে রোওজালিন। সে ওকে সোমালিয়া ভাইয়া বলে ডাকে কারন লিওনের শরীরে একফোঁটা মাংস নেই । দেখলে মনে হয় একটা কঙ্কাল শরীরের ওপর চামড়া লাগিয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে! তবে লিওন কথা বলে খুব সুন্দর করে। চেহারা টাও ভারি মিষ্টি। দেখলে যে শুধু মায়া লাগে তা না, কেমন যেন অদ্ভুত ব্যাপার ও আছে ওর ভেতর।
দরজা খুলেই লিওন বলল- ঈদ মবারক। ঈদ মবারক। আসেন আসেন।
রোওজালিন হাসতে হাসতে বলল- এক কথা দুই বার কেন বলছেন, সোমালিয়া ভাইয়া?
আনন্দে বলেছি। কারন এতক্ষণ ঈদ টের পাই নি। আপনাদের দেখে টের পেলাম।
রসি রোওজালিনকে কথা বাড়াবার সুযোগ না দিয়ে লিওন কে বলল, আয় আগে কোলাকুলি করি।
লিওন রসির সাথে কোলাকুলি করে একটু আসছি বলে ভিতরের রুমে চলে গেল। রসি রোওজালিনকে একা পেয়ে দুষ্টমি মাখা কণ্ঠে বলল- ও ভুলেই গেছি! তোমার সাথে তোঁ কোলাকুলি হয় নি। এস এস এস......আমার বুকে এস।
মিনিট দশেক পর ট্রে তে করে কি সব খাবার আনল লিওন। রোওজালিন সেদিকে না তাকিয়ে বলল- ভাইয়া আর কেউ নেই?
ব্যাচেলারের বাড়িতে আর কাকে আশা করেন?
একা থাকেন!
হ্যাঁ! ভয় পেলেন নাকি?
না না। কিসের ভয়! রসির সাথে আমার নরকে যেতেও ভয় লাগেনা।
এবার লিওন বাহবা দিয়ে বলল -সাবাশ এই কারনেই তোঁ রসি আপনাকে এত লাভ করে।
রসি লিওন এর দিকে তাকিয়ে কিছুটা তাড়াহুড়ার স্বরে জিজ্ঞেশ করলো- পার্টির আর জিনিশ পত্র কই?
লিওন আনছি বলে আবার ভিতরে চলে গেল।
রোওজালিন এবার কিছুটা অবাক হয়ে জানতে চাইল- কিসের জিনিশ?
রসি বলল, আছে একটা ।
আগে বলবে তো সেটা কি!
এটা হচ্ছে এক ধরনের ওষুধ যা খেলে মানুষ অন্য রকম সুখ পায়।
এই আবার মাদক টাইপের কিছু নাতো ?
আরে ধুর , রসি বিরক্তির ভঙ্গিতে বলল- আমাকে কি তোমার সেরকম মনে হয়?
না না, তা হবে কেন?
তা হলে এই কথা বললে কেন?
সরি ভুল হয়ে গেছে।
রসি জোরে হেসে উঠল। এইবার রসিকে সত্যই রহস্যময় লাগছে।
লিওন তিন টি সিরিঞ্জ আর কিছু ওষুধের বোতল নিয়ে ওদের রুমে ঢুকল। ওষুধগুলো একসাথে মিশিয়ে এক শিশিতে ঝাঁকতে ঝাঁকতে বলল- ভাবি, ভাই আপনাকে কত লাভ করে দেখছেন? শুধু আপনার জন্য এত টাকা খরচ করে এসব এনেছে!
কি এসব ? আমি তোঁ কিছুই বুঝতে পারছিনা।
লিওন হেসে বলল- এগুলো একধরনের ভিটামিন। নিলে দেখবেন ভাল লাগছে।
রোওজালিন কে হতবাক করে দিয়ে, লিওন সেই ওষুধ সিরিঞ্জে ভরে প্রথমে পুশ করলো নিজের উরুতে,তারপর রসির পায়ে এবং সবশেষে রোওজালিন এর হাতে ।
সিরিঞ্জ পুশ করা মাত্রই রোওজালিন লক্ষ করলো গলার ভেতর থেকে খুব সুন্দর একটা ঘ্রান আসছে! অনেকটা বেলিফুলের মত। সে তার সকল মনোযোগ ওই দিকে ধাবিত করলো এবং বেলি ফুলের গন্ধ নিতে নিতে একসময় বিমোহিত হয়ে গেল।
রোওজালিন অনুভব করলো- চারিদিকে শুধু ঘোর আর ঘোর। সেই সাথে অনেকগুল স্বর্গের দরজাও একে একে খুলে যাচ্ছে। ওপর থেকে লাল নীল সবুজ আলো এসে পরছে রোওজালিন মুখে। সেই আলো তাকে নিয়ে চলছে উড়িয়ে। রোওজালিনএর উড়তে উড়তে মনে হোল- এ খানে নেই কোন কষ্ট ,হতাশা কিংবা, দুঃখ। আছে শুধু সুখ সুখ আর সুখ। আহা জীবন এতো সুন্দর কেন!
পুরো পুরি অবচেতন হবার আগে রউজালিন টের পেল, রসি একে একে খুলে ফেলছে তার ওড়না, সেলয়ার, ব্রা............ তা খুললে খুলুক। এ শরীর তো রসির ই!
রোওজালিন বাসায় ফিরল রাত দশটায়। কিভাবে সে বাসায় ফিরেছে কিছুই বলতে পারলনা। বাবা বার বার জিজ্ঞেশ করলেও কোন জবাব দিলনা। এমন অবস্থায় লক্ষ করলো, কোটি কোটি হাত ওকে আঘাত করে চলছেই তো চলছে। কিন্তু তারপরও কেন যেন একটুও ব্যাথা লাগছেনা ওঁর!
এ ভাবে রসির সাথে টানা প্রায় ছয় মাস স্বর্গীয় ভুবনে কাটিয়ে দিলো রোওজালিন । এই কমাসে রসি তাকে যেখানে যেতে বলেছে, যা করতে বলেছে সে শুধু তাই করেছে। এমনকি দুজনার নেশার টাকা যোগার করতে সে তার জমানো টাকা, সোনার অলংকার, কি বোর্ড এমনকি ল্যাপটপ ও একে একে বিক্রি করে দিলো । বাবা মাও যে তার ওপর পুরো পুরি ফেডআপ সে দিকে কোন ভ্রুক্ষেপ ই করলনা!
একদিন রসি বলল –
চলো আমরা তিন দিনের জন্য কক্সবাজার থেকে ঘুরে আসি। এখানে একেবারে বোঁর হয়ে গেছি।
রোওজালিন বলল- অসম্ভব! আব্বু আমাকে খুনই করে ফেলবে। এমনিতেই আজকাল খুব সন্দেহ করে!
রসি বলল – তুমি যাবে কিনা সেটা বল!
রউজালিন চুপ করে রইল।
ও আচ্ছা বুঝেছি। ঠিক আছে তোমার যাওয়া লাগবেনা, আপাতত শুধু আমার চোখের সামনে থেকে বিদায় হও।
রোওজালিন অবাক হয়ে রসির দিকে তাকিয়ে থাকল, এই রসি কে সে আগে কখনও দেখেনি!
ধিরে ধিরে রসি কেমন যেন হয়ে গেল। আগের মত ওর সাথে হেসে কথা বলেনা, ফোন করলে ফোন ধরেনা। ওকে দেখলেও এড়িয়ে চলে। কারন কি?
একদিন হটাত অপু এসে জানালো –দুদিন আগে হ্যাঁভেলা নামের এক শিল্পপতির মেয়েকে ভাগিয়ে বিয়ে করেছে রসি! এ কথা শুনে রোওজালিনের সারা পৃথিবী অন্ধকার হয়ে গেল। অপুর কলার ধরে বলল- বল, যা বলেছিস সব ভুল!বল বল... অপু কোন কথা বলল না। শুধু মাথা নিচু করে রইল।
রসি লোক জন এ রকম বলাবলি করছে কেন?
কি বলছে!
বলছে, তুমি নাকি কোন এক মেয়েকে পালিয়ে বিয়ে করেছ!
হ্যাঁ করেছি। এতে অবাক হবার কি আছে!
রোওজালিন হটাত ক্রোধে ফেটে পড়লো- তুই জানিস না , অবাক হবার কি আছে! যদি অন্য মেয়েকেই বিয়ে করবি, তবে আমার সাথে ওসব করেছিলি কেন?
চিৎকার করবিনা। রসিও পাল্টা চেঁচিয়ে উঠল।
তুই কোন হিলারি ক্লিনটন না যে তোর কাছে কৈফিয়ত দেব! তুই কি ভাবিশ আমি গাধা? শোন তুই একটা বেশ্যামাগী সেটা আমি ভাল করেই জানে! যে আমার সাথে বিছানায় শুতে পারে সে আরও চার ব্যাটার সাথেও পারে! আর ফোন দিবিনা আমাকে, এই বলে রসি ফোন কেটে দিলো!
এরপর পরের ঘটনা খুবই কমন। রোওজালিনের জীবন থেকে রসি ঠিকই চলে কিন্তু রেখে গেল প্যাঁথেড্রিনের বিসাক্ত বিষ ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:২২