![]()
আমি যখন পিচ্চি ছিলাম তখন আমার পপি নামের এক বান্ধবী ছিল।বান্ধবী বললাম এই কারণে যে তখন বন্ধু বলতে শুধু ছেলে বন্ধুকেই বুঝানো হতো। তাই আমাকে শেখানো হয়েছিল বান্ধবী। কি এক অদ্ভুত কারণে আমার এই নামটা খুব পছন্দ হয়েছিলো। কেউ জিজ্ঞেস করুক আর না করুক আমি সবাইকে আগ বাড়িয়ে বলতাম, “ আমরা বান্ধবী”। যেটা বলছিলাম পপির ছোট ভাইটার নাম ছিল রাব্বি। রাব্বি ছিল দস্যু টাইপের ছেলে। মারামারিতে ও খামচা-খামচিতে এক নাম্বার।সকল প্রকার মারামারি আর খামচা-খামচির প্রশ্রয়দাতা ছিল রাব্বি।আমি যখন ওদের বাসায় খেলতে যেতাম তখন দেখতাম ওরা খেলা টেলা বাদ দিয়ে মারামারিতে ব্যস্ত। ভয়ংকর দৃশ্য ছিল। সাথে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হিসেবে চলত ওদের চিল্লাচিল্লি আর কান্নাকাটি
একদিন আম্মু আমাকে বলল যে আমি যেন পপিদের বাসায় প্রতিদিন না যাই। আর গেলেও মারামারি চলাকালীন সময় যেন বাসায় চলে আসি। আসলে আম্মুর উদ্দেশ্য ছিল আমি যেন ওদের কাছ থেকে মারামারি-খামচাখামচি না শিখি। তো ওইদিন বিকেল বেলা যখন পপি আসল তখন আমি পপিকে বললাম যে,” তোমাদের বাসায় আর যাবো না। আমার আম্মু নিষেধ করেছে।“ পপি কিছুক্ষণ ঘ্যানঘ্যান করে চলে গেল। আসল ঘটনা ঘটল সন্ধ্যা বেলা। পপির আম্মু এসে আমার আম্মুকে বলল, “ আপনি নাকি আপনার মেয়েকে আমার বাসায় যেতে নিষেধ করেছেন। আমার মেয়ের সাথে মিশতে নিষেধ করেছেন।কারণ কি? আমার মেয়ে কি এতই খারাপ যে আপনি মিশতে নিষেধ করবেন............ইত্যাদি ইত্যাদি
এক সময় পপিরা বদলী হয়ে চলে যায়। তারপর অনেকদিন খামচা-খামচি দেখি নাই। অনেক অনেক বছর পর ঈদ উদযাপন করতে দাদু বাড়ি গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি দস্যু টাইপের এক পিচ্চি।বয়স তিন বছর। তিন বছর আগে যখন এসেছিলাম তখন এই পিচ্চিকে দেখি নাই।কিছুক্ষণ খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলাম এই পিচ্চি আমার মেজো চাচার ছোট ছেলে। দস্যুটার নাম নাঈম। ওর বড় বোন কে দেখে আমি রীতিমতো টাস্কি খেলাম। কারণ ওর হাতে-মুখে- চোখে খামচির দাগ। এইগুলা দেখে পপি –রাব্বি কথা মনে পড়ে গেল। জিজ্ঞেস করতেই বলল যে এইসব ওই দস্যুটার কাজ। তারপর কিছুক্ষণ পর দস্যুরুপী নাঈম আমার কোলে চড়ে বসলো। কিন্তু কি মনে করে জানি ছেলেটা কোল থেকে নামার সময় আমার গালে একটা খামচি বসিয়ে দিল। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এর কোন প্রতিশোধ নিতে পারলাম না। আর মুখে খামচির দাগ নিয়ে এক করুণ ঈদ উদযাপন করলাম সেবার
এরপর আরও কিছু খামচি হামলার শিকার হয়েছি। ওগুলো বেশী টেকসই ছিল না বলে বিস্তারিত কিছু বললাম না। কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। পিচ্চিকালে এত খামচা-খামচি দেখেও কখনও কাউকে খামচি দেই নি। অথচ এই বয়সে এসে অন্যরা আমার খামচি হামলার শিকার হচ্ছে।গত এক বছরে আমার খামচি হামলার শিকার দুইজন। মেজাজ খুব খারাপ হয়েছিলো দেখে ভাইয়াকে দুইবার খামচি দিয়েছি। কিন্তু কোনবারই আমার ভাই কোন ব্যাথা পায় নি। এই কথা শুনে মেজাজ আরও খারাপ হয়েছিলো। ঢং আর কি!!! এত বড় বড় নখ দিয়ে খামচি দিলে ব্যাথা পাবে না!! কি আশ্চর্য!!! আর সর্বশেষ আমার খামচি হামলার শিকার হয়েছে রিকি পন্টিং। সে ও কোন ব্যাথা পায় নি। অবশ্য তার মতে , “আমার কোন কিছুতেই ব্যাথা লাগে না”
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১১ দুপুর ১২:৪৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




