বাংলাদেশের নব্বই শতাংশ শ্রমবাজার আরব। প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ আরবে পাড়ি জমাচ্ছে। আর আমাদের শ্রমিকরা নানা ক্ষেত্রে অজ্ঞ। শ্রমবাজারের যোগাযোগ, প্রযুক্তি আর দক্ষতা কোনটির প্রয়োজনীতা কম নয়। ভাষাজ্ঞানের অভাবে মধ্যপ্রাচ্যের আমাদের শ্রমিকরা বেতন-ভাতা আর অন্যান্য সুবিধাতে যেমনি বঞ্চিত হচ্ছে। ঠিক তেমনি বঞ্চিত হচ্ছে, শ্রমবাজরে যাচাই-বাছাই করতে। অনেক ক্ষেত্রে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে এসেও হতাশা কমে না। কাজের চুক্তি আর বাস্তবতা মিলে না। এমনিতে এমনিতে হয়রানি আর যুলুম। কিন্তু, যুলুম আইন-শৃংখলাবাহিনী কিংবা সংবাদ মাধ্যমে আসে না।
ভিটে-মাটি বিক্রি করে যাওয়া আমাদের জনগণের কাজের স্বীকৃতি সময়ের দাবী। আমাদের ভাইয়েরা খেজুর গাছ পরিষ্কার করবে আর অন্যরা খেজুর খাবে। আমরা দুম্বা রাখবো আর অন্যরা দুধ খাবে। আমরা রাস্তা পরিষ্কার করবো -অন্যরা হাটবে। ঠিক আছে, মেনে নিচ্ছি- আমরা তো জেনে-শুনে এসব করতে যাই। মেনে নিচ্ছি- এসবের জন্যে বাড়ি-ঘর বিক্রি করি। কিন্তু, আমরা কেন ক্লিনার হই? কেন মিস্ত্রি হই? কুলি হই? ধোপা হই? মালি হই? রাখাল কিংবা এমানের অন্য সব হই? - আমরা কী জাতিগত ভাবে এমন? না মানলেও এবিষয়ে লজ্জা হওয়া উচিৎ। যদি কাজ করতেই হয় করো। তবে, কেন কেবল ছোটটা? বড়টা ভারত-পাকিস্তান-নেপালর এর মানুষ পরলে বাঙ্গালীরা কেন নয়? বাঙ্গালীদেরর সমস্যা কোথায়? বাঙ্গালীরা কন্ট্রাকটার হতে পারি না? ড্রাইবার হতে পারি না? ম্যানেজার হতে পারি না? অফিসার হতে পারি না? সুপারবাইজার হতে পারি না? আমরা কেন ইনচার্জ হতে পারিনা? অন্যান্যরা আমাদের কাঁটাল আমাদের মাথায় ভেঙ্গে খায়। আমারা কেবল না খেয়ে, না পেয়ে মেনে নিতে হয়। গৃহপালিত শক্তি হিসেবে আমরা সবই করতে পারি-তবে, অনুভূতি জানাতে পারি না। তাই অন্যের কুকর্মে নিজেদের গোসল করে পবিত্র হতে হয়। নিজের ফল অন্যান্যরা খায় আর নিজে অন্যের কাজের দায়বার নিতে হয়।
অতএব, চলুন আমরা ঘুরে দাড়াই; এখনই সময়। আমাদের শ্রমিকদের স্বার্থে আমদের ঘুরে দাড়ানো উচিৎ। আমাদেরকে আমাদের শ্রমবাজারের বিবেচনা করতে হবে। আরবীকে কেবল ধর্মীয় কিছু ভেবে বসে থাকা উচিৎ হবে না। আমাদের শ্রমিকদের আরবী জানা সময়ের দাবী। শ্রমিকদের তাদের কাজের দক্ষতার পাশাপাশি সেদেশ ও সেসব দেশের আইন-কানুন ও সংস্কৃতি জানানো প্রয়োজন। তাই, আসুন- আমাদের শ্রমিকদের গৃহপালিত শক্তি থেকে জনশক্তিতে বদলাতে চেষ্টা করি।