ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম বাসায় আসছি,বাসায় ঢুকতেই ৩ বছরের ভাতিজা আহরার জিজ্ঞেস করল চাচ্চু কি আনছ? আমি বললাম কিছুতো আনিনি।সে বলল ''তোকে আমি বাসা থেকে বের করে দিব’’ এই বলে সে আমার উপর যা অত্যাচার করল তা রীতিমত মানবাধিকার লঙ্গন(গালিগুলো চেপে গেলাম)।তারপর সবার কাছ থেকে যা শুনলাম তা হল তার অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে আমার ভাইয়া ইদানীং অফিসে কাজ বেশী করছে।
আহারারের অনেকগুলো টেনিস বল আছে।তাও সেদিন সে বাবার কাছে বায়না ধরল আরো দুইটা টেনিস বল তাকে কিনে দিতে হবে।তার বাবা তাকে বলল ‘তোমাকে বল কিনে দিতে দিতে আব্বু ফকির হয়ে যাব’’ এই কথার উত্তরে আহরার বলল ফকির হলে রাস্তায় গিয়ে আল্লাহ কর’’ আশা করি বুঝতে পেরেছেন সে কি বুঝতে চেয়েছে?এবার বলুন তাকে কি আপনি বাচ্চা বলবেন?
আমি বাসায় যাওয়ার পর থেকে সে আমার মোবাইল খানা নিজের বলে দাবি করা শুরু করেছে।মহা যন্ত্রনায় পড়েছি।মাঝে মাঝে হুংকার ছাড়ে “নোমান আমার মোবাইল দে” সেদিন কি জন্য জানি একটা ধমক দিয়েছিলাম, সে আমাকে ধমকের উত্তর দিয়েছিল এভাবে “তোর ল্যপতপ(ল্যপটপ) আমি ভেঙ্গে নান্না(রান্না) করে খেয়ে ফেলবো” সে থেকে আমি মোটামুটি ভয়ে আছি।মাঝে মাঝে সবাই যখন টিভিতে কোন অনুষ্ঠান দেখে সে হঠাৎ রিমোর্ট নিয়ে খবর দেখার বায়না ধরে।
সেদিন দুপরে বায়না ধরেছে চাচ্চুর পিঠে কামড় দিলে তারপর ভাত খাবে। আর কি করা এই অধম পিঠ পেতে দিলাম।এই বয়সে সে জীবনের লক্ষ ঠিক করে ফেলেছে। তা হল সে একটা সি.এন.জি কিনবে,সেটা নিজেই চালাবে।এক পাশে আম্মু,আরেক পাশে আব্বুকে রাখবে।ভাইয়্যকে রাখবেনা।ভাইয়্যা মারে।
দেইখ্যা কি মনে হয়?ভাব দেখছেন কি?
এবার বলবো আমার ভাগ্নি মৌরিনের কথা।একদিন মৌরিনকে পড়ানোর জন্য বাসায় হুজুর আসছে।হুজুরের সাথে ওর কথপোকথনগুলো ছিল এরকম—হুজুর আপনার বাসায় চা নাই?
-না
-আমাদের চা কেন খান?
-তোমাদের চা অনেক ভাল
-তাহলে এবার চলে যান।চা খাওয়তো শেষ।
ততক্ষনে হুজুরের জন্য আমার রীতিমত মায়া হচ্ছিল।আহারে বেচারা।
আমার আরেক ভাতিজা আহনাফ।বয়স ৭ বছর।যার ছবি আমার ব্লগ প্রোফাইলে।ক্রিকেটের অন্ধভক্ত সে।এই বয়সে বাচ্চারা টিভিতে কার্টুন দেখে আর সে বসে বসে পুরানো ক্রিকেট ম্যাচ দেখে।আশ্চর্যের বিষয় হল ক্রিকেটের প্রতিটি নিয়ম,শচীনের,মুরালীদের পরিসংখ্যান তার মুখস্ত।সম্প্রতি সে একটা ক্রিকেট কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছে।আপনারা তার জন্য দোয়া করবেন।
আমার ক্রিকেটার ভাতিজা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৫:৫৯