অনেক্ষন একজায়গায়
দাড়িয়ে থাকতে থাকতে পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরে গেছে কারিমার।
আজ হলোটা কী! এখন পর্যন্ত কোন
খরিদ্দারের খবর নেই।
এদিকে পুরো শরীর ঘেমে একাকার।
মুখে যে মেকাপ ছিল তাও নষ্ট
হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। অন্যন্যদিন এই
গলিতে রাতের পাখিরা আর
পাখি শিকারিরা ঘুরঘুর করে। আজ কেন
যেন চারদিক খুব নিরব। হঠাৎ
একটি ছায়ামূর্তি দেখতে পায়
কারিমা।
ছায়ামূর্তিটি ধীরে ধীরে একটি মানুষে পরিনত
হতে থাকে। মূর্তিটির হাটার ভঙ্গি খুব
পরিচিত মনে হচ্ছে কারিমার।
কারিমা তাকিয়ে আছে মূর্তিটির
দিকে। কারিমাদের কাছে আসলেই
এরা ছায়া মূর্তি। কারন ছায়া কখনও
স্থায়ী হয় না এরাও কারিমাদের
জীবনে কখনও স্থায়ী হয় না।
মূর্তিটি আরো কাছে এগিয়ে আসতেই
চিনতে পারে কারিমা। হ্যা,এই পুরুষ
মূর্তিটিই কিছুদিন
আগে কারিমাকে তালাক দেয় তার
চরিত্রের অপবাদ দিয়ে। অথচ কারিমার
চরিত্রে বিন্দুমাত্র দাগ ছিল না। এরপরই
সে এই নিশিজাগা পাখিদের
দলে যোগ দেয়। কারিমা অবাক হয় না।
কারন অনেক পুরুষই তাদের জৈবিক
প্রয়োজনে রাতের পাখিদের
খুজে বেড়ায়। কারিমাকে তালাক
দেয়ার পর এই পুরুষটি আবার বিয়ে করে।
তারপরও সে এখানে আসে বিচিত্রতার
জন্য।
কারিমা বুঝতে পারে না আসলে কাদের
চরিত্র খারাপ। তাদের মত পাখিদের?
যারা জীবিকার প্রয়োজনে অন্যের
ইন্দ্রিয়সুখের বস্তুতে পরিনত হয়, না-
কি যারা বউ রেখে জৈবিকতার
বিচিত্র সুখ নেয়ার জন্য
ছুটে আসে পাড়ায় তাদের। এদের দোষও
দেয়া যায় না কারন এরা না আসলেও
কারিমাদের জীবন চলে না।
আসলে প্রয়োজনীয়তা কোন
বাধা মানে না। প্রয়োজনের তাগিদেই পতিতাপাড়া গড়ে উঠে। এটা শুধু পতিতাদের প্রয়োজনে নয়। এখানে যারা আসে তাদেরও প্রয়োজনে গড়ে উঠে এসব পাড়া। এখানে অনেকেই আসে তাদের ইন্দ্রিয়সুখের খোঁজে। সমাজের নিচু স্তর থেকে উঁচু স্তর কেউই বাদ যায় না। কিন্তু সূর্যের আলোয় মুখ দেখাতে লজ্জা পায় কারিমারা। কারিমা বুঝতে পারে না এটা কেমন নিয়ম!