ঢাকার রাস্তায় চলতে গেলে মাঝে মাঝেই আপনার চোখে পরবে পায়ে খত নিয়ে বসে আছে কিছু ভিক্ষুক। দিন যায়,মাস যায়, বছর যায় কিন্তু সেই ভিক্ষুকের খত শুঁকায় না। আপনি আমি হয়তো ভাবি ইস... লোকটার কি দুঃখ!! আমরাও তার দুঃখে দুঃখিত হয়ে দিনের পর দিন তাকে ভিক্ষা দিয়ে সাহায্য করি যাতে সে চিকিৎসা করে সেরে উঠে, কিন্তু তার খত কখনই সারে না, আমরা হয়তো তার কারন ও খুজে পাই না।
আমি একদিন একটা সম্ভাব্য কারন খুজে পেয়েছিলাম। কোন একটি TV Show তে দেখেছিলাম যে খত নিয়ে যে ভিক্ষুকরা ভিক্ষা করে তারা নিয়মিত তার খত জায়গাটির যত্ন নেন, তবে ভাল হবার জন্য নয়, বরং যত্ন নেন যাতে খতটি তাজা থাকে শুঁখিয়ে না যায়। খত তাজা দেখলে মানুষের মনে দয়া হয়, তারা বেশি ভিক্ষা দেয় আর সে কেন ভিক্ষা করছে এ নিয়ে কারো মাথা ব্যথা থাকে না।
বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের অবস্থা আজকে সেই ভিক্ষুকের মত। বাংলাদেশ যখন আজ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে, আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে এশিয়ান টাইগার হিসেবে। নিম্ন আয়ের দেশ কলঙ্ক ঘুচিয়ে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে তখন আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা তাদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের খত না শুঁকায়, কারন বাংলাদেশ যদি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী হয়, দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয় তাহলে তো রাজনীতিবিদরা জনগণকে শোষণ করতে, ইচ্ছামতো দুর্নীতি করতে পারবে না!
চাঁদাবাজি করবে? কিন্তু কিভাবে? সুস্থ সবল ভিক্ষুককে কি আপনি ভিক্ষা দিতে চান!!! যখন দেশে জুলুম থাকবে আপনি সেই জুলুম থেকে বাঁচতে রাজনীতিবিদদের চাঁদা দেন, যখন আপনি Legal Way তে কোন কাজ করতে পারেন না তখন আপনি ঘুষ দেন,
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিবিদ ভিক্ষুকরা খত শুঁকাতে দেবে না তাদের ভিক্ষাবৃত্তির জন্য। তারা প্রতিনিয়ত খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে খতটাকে তাজা রাখবে নিজেদের প্রয়োজনেই।
একটু খেয়াল করে দেখবেন, দুই নেত্রীর কাছে আমরা দুদুবার করে শোষিত হয়েছি, ২০০৬ এ একবারের জন্য হলেও ভেবেছিলাম -২ হলে দেশবাসী অন্তত এদের হাত থেকে বাঁচবে!! আর আমরা সেটা ভেবেছিলাম বলেই হয়তো আজ সেই দুই দলই আজ সরকার পরিবর্তনের সময়ে এসে ঝগড়া লাগিয়ে বসে আছে।
আমার তো মনে হয় এর উদ্দেশ্য ঝগড়া করা নয়, বরং সবার নজর ও মস্তিষ্ক যাতে ঝগড়া মীমাংসায় কাজ করে আর অন্য কোন ভাবেই এই সময়ে উনাদের ২ জনের বিকল্প ভাবতে না পারে সেই ব্যবস্থা করা!!