হাদিস বর্জন (শত বৎসর পরে লিখিত) করলে মুসলমানদের কি কি উপকার হতে পারে ?
প্রথমে বলতে সব হাদিস কি পরিত্যাগ যোগ্য ? অবশ্যই নহে ।প্রমাণীত এবং কোরানের সাথে সামন্জস্য মূলক হাদসি গুলো এবং কোরানের আয়াতের ব্যাখা সংক্রান্ত হাদিস গুলো ছাড় বাকি সব হাদিস ই গুলো বর্জনিয় ।
এর প্রধান কারন এগুলো সংশয় মুক্ত নহে এবং বেশির ভাগ অনেক পরে লিখা । প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে , শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে একজনের থেকে আরেক জনের মাধ্যমে প্রবাহিত কোন মেসেজ অথেনটিক হয় না । এই ধরনের হুইসপারে আরেকটা চায়নিজ হুইসপার-- এর মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য অথেনটিক হয় না ।
মনে করুন শেখ মুজিব ১৯৫২ সালে কামাল উদ্দিন কে একটা কথা বলেছে , তারপর তা তিনি মোসলেউদ্দিনকে বল্লেন তারপর, তার থেকে তাজউদ্দিন, তাজউদ্দিন থেকে তোফায়েল, ........ এই ভাবে আমির হোসেন আমু - ইত্যাদি ----- এই ভাবে প্রাপ্ত কোন তথ্য গ্রহন যোগ্য নহে । সবচেয়ে অথেনটিক ১৯৫২ সালের কোন ডকুমেন্ট ।
হাদিস পন্থিদের সবেধন নীলমনি অবলম্বন-- হাদিস ছাড়া নামাজ পড়বেন কি করে বা মৃত মাছ কি করে খাবেন ইত্যাদি । এই সব বিষয় সংক্রান্ত হাদিস গুলো গ্রহন যোগ্য মূলত তাৎখনিক ভাবে সংরক্ষিত এবং নয়মিত আদায়কৃত যার জন্য এগুলো গ্রহন যোগ্য কিন্তু অন্য হাদিস গুলো নিয়মিত পালনের বিষয় নহে এবং শত বৎসর পরে সংরক্ষিত ।
এখন আমরা দেখি তাৎখনিক রক্ষিত ধারাবাহিক ভাবে পালিত প্রমাণীত হাদিস, কোরান সম্মত হাদিস এবং কোরানের আয়াতের ব্যাখা করা হাদিস গুলো ছাড়া বাকি হাদিস গুলো বাদ দিয়ে দিলে , মুসলমানদের কি ধরনের উপকার হতে পারে ।
১) শিক্ষা, বিজ্ঞান, জ্ঞান চর্চায় মুসলমানদের বাধা সরে যাবে, পিছিয়ে পড়া মুসলমানরা বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে।
২) নারী বিদ্বেষী প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে , নারীদের জাগরন বেড়ে যাবে , শিক্ষিত মুসলমান নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে । বন্দি দশা থেকে নারীদের মুক্তি ঘটবে ।
৩)হিন্দু, খৃষ্ঠান , বৌদ্ধ , ইহুদী সহ সকল অমুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে । সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি বৃদ্ধি পাবে । সবার সাথে শান্তিপূর্ণ ভাবে মিলে মিশে থাকা সম্ভব হবে ।
৪) সকল মত এবং পথের প্রতি সহনশীলতা শ্রদ্ধা বেড়ে যাবে । নাস্তিক , মুরতাদ , কাফের হত্যার মত জঘন্য হত্যাকান্ড বন্ধ হয়ে যাবে ।
৫) ইসলামের নামে সব রকমের সন্ত্রাস,জংগিবাদ বন্ধ হয়ে যাবে , গোটা বিশ্বে এই ধরনে সন্ত্রাসি কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে যাবে ।
৬) ওয়াজ মহফিলের নামে ধর্মীয় অপব্যাখার প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে ।
৭) শিল্প সংস্কৃতি বিদ্বেষি কর্মকান্ডের লোপ পাবে এবং শিল্প সংস্কৃতি চর্চায় মুসলমানদের প্রতিবন্ধকতার দুর হবে ।
৮) কথায় কথা এইটা হারাম ঐটা হারাম চর্চা বন্ধ হয়ে যাবে ।
৯) কোরান ও ইসলামের উপদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে ।
১০) মুসলমানদের ভিতরের ফেতনা , ফেসাদ, দলবাজি , বিভক্তি দূর হয়ে যাবে । ওহাবি, দেওবন্দ, সালাফি সহ কয়েক শত বিভক্তি বিলিন হয়ে যাবে ।
২০০ বৎসর পরে লিখা হাদিস গুলো মুসলমানদের কতটা ক্ষতি করেছে , সেটা বোঝার মত অবস্থা মুসলমানদের এখন হয় নি । মুসলমানদের বড় অংশ এখনো ২০০/৩০০ বৎসর পরে লিখা হাদিস গুলোকে কোরানের চেয়ে ও বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছে এবং যার কারনে কি ধরনের সর্বনাশ মুসলমানদের হয়েছে সেটা যেদিন তারা বুঝবে তখন অনেক দেরি হয়ে যাবে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৮:৫৫