somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাগো বনিতো: ফুটবল সৌন্দর্যের শেষ কথা

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[img|http://cms.somewhereinblog.net/ciu/image/197834/small/?token_id=c156dd4f7d4c2abc386ae173fac18d93

এসেছে ফুটবল বিশ্বকাপ, ফুটবল উন্মাদোনায় আব্রান্ত সারা দেশের মানুষ। ফুটবল খেলা মানুষ কেন দেখে, তাদের চিত্ত বিনোদনের জন্য। কিন্তু খেলা শুধু চিত্ত বিনোদনের মাঝেই বর্তমানে আটকে নেই। ব্যবসায়ের এই যুগে সবাই ফলাফল নির্ভর খেলাই খেলে থাকে। কিন্তু আসলে তো তা হওয়ার কতা ছিল না। কিন্তু তাই হয়েছে।
১৯৮৬ সাল থেকে বাংলাদেশে ফুটবল খেলা সম্প্রচার শুরু হয়। সেই বারই প্রথম বিশ্ব সভায় আর্বিভাব ঘটে এক মহানায়কের। তিনি ম্যারাডোনা। একক কারিশমায় যিনি বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন আর্জেন্টিনাকে। দলগত খেলা ফুটবলকে তিনি পরিনত করেছিলেন একক নৈপুন্য প্রদর্শনের মাধ্যম হিসাবে। কিন্তু দলগত খেলা ফুটবলের যে চুরান্ত সৌন্দর্য, তা দেখা হয় নি বাংলাদেশের মানুষের। সেই খেলাটি খেলেছিল ১৯৮২ সালের ব্রাজিল। যাদের বলা হয়ে থাকে বিশ্বকাপ না জেতা ইতিহাসের অন্যতম সেরা দল।
গত কয়েকদিন ধরেই স্পেনের বিশ্বকাপ থেকে লজ্জা জনক বিদায় নিয়ে টিকিটাকার সৌন্দর্য নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। টিকিটাকায় মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পাস, পাস আবার পাস। পাসের জালে আটকে একটা টিমকে ধ্বংস করে দেয়া। কিন্তু স্পেনের শুধু এই পাস এবং পাস ছিল শুধুই বিরক্তিকর। সাধারনত দেখা গেছে স্পেন একটা গোল দেয়ার পর বলকে শুধু মাঝ মাঠেই রেখেছে। এ্যাটাকেও যায় নি, যা ছিল বিরক্তিকর। কিন্তু ৮২ সালের টেলে সান্তানার ব্রাজিল ছিল এই সব থেকে মুক্ত। আজকে সে দল ও তাদের খেলার বৈশিষ্ঠ্য নিয়েই আলোচনা করবো।




১৯৮২ এর বিশ্বকাপের ব্রাজিলের দিকে যদি আমরা তাকাই তাহলে আমরা দেখতে পাবো কিছু অল টাইম গ্রেটকে। সাদা পেলে জিকো, ফুটবল দার্শনিক সক্রেটিস, হোল্ডিং মিডফিল্ডারের প্রথম সার্থক রুপকার ফ্যালকাও, দুরন্ত গতির লক্ষভেদি শটের জন্য বিখ্যাত এডার, অনেকের মতে সর্বকালের সেরা লেফট ব্যাক জুনিয়র(রবার্তো কার্লোস ও পাওয়ালো মালদিনি এই পজিশনের অন্যতম দাবিদার), লিওনার্দো এবং সার্জিনহো। এই দলটির সবচেয়ে দূর্বল যায়গা ছিল সার্জিনহো।
এই অসাধারন মেধাবীদের নিয়ে গড়ে তোলা এই দল হয়ে উঠেছিল সৌন্দর্য মন্ডিত ফুটবলের শেষ কথা। অসাধারন জায়গা পরিবর্তন, দৃষ্টিনন্দন পাস এবং আক্রমনের পর আক্রমন। একজন আদর্শ স্ট্রাইকারের অভাবের কারনে টেলে সান্তানা তার মিডফিল্ডার;এর দিয়ে ছিলেন আক্রমন করার অবাধ সুযোগ। যার ফলে একজন হোল্ডিং মিডফিল্ডার হলেও ফ্যালকাও আক্রমনে দাপিয়ে বেরিয়েছেন তিনি। একজন ডিফিন্সিভ মিডফিল্ডারের রোলে খেলেও তিনি ৬ ম্যাচে করেছিলেন ৩ গোল। শুধু তাই নয় ব্রাজিলীয়ান খেলোয়ারদের মাঝে তিনিই সর্বোচ্চ গোলে শট নিয়েছিলেন ১৯৮২তে। সেজারো একজন ডিফিন্সিভ মিডফিল্ডারই ছিলেন। তিনি সাধারনত আক্রমন করতেন না। উপরেও যেতেন না। জিকো, সক্রেটিস, এডারদের সাথে ডিফিন্সের লিংকটা তৈরী করার মূল দায়িত্বে তিনিই ছিলেন। জুনিয়রকে আসলে লেফটব্যাক না বলে লেফট উইংগার বললেই বেশি মানায়। যদিও জুনিয়র বেশির ভাগ আক্রমনের সময় উইং ধরে উপরে উঠে যেতেন।



সাদা পেলে জিকো

৪-২-২-২ ফর্মেশনে খেলা এই দলের ৪ জন নিয়মিত ডিফেন্ডার, ফ্যালকাও ও সেজারো খেলতেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসাবে, জিকো আর সক্রেটিসের হাতে ছিল মিডফিল্ডের নিয়ন্ত্রন এবং সবার শেষে দুই স্ট্রাইকার সার্জিনহো ও এডার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই ফর্মেশন আর টিকে থাকে নি। দলের প্রয়োজনে পরির্বতন হয়ে গেছে অটোমেটিকলি। চলে এসেছে আক্রমনের জন্য আদর্শ ফর্মেশন ৪-৩-৩। যেটার প্রথম সার্থক রুপায়ন ব্রাজিলের এই গোল্ডেন টিমই করে।



এডার, একজন অসাধারন স্ট্রাইকার এবং প্রচন্ড রকমের আক্রমনাত্মক খেলোয়াড় কিন্তু এডারকে স্ট্রাইকারের চেয়ে লেফট উইংগার বলাই বেশি যুক্তিসংগত। সে একটু নিচে থাকতো। দূর্দান্ত গতির সাথে নিখুত ফিনিশিং এডারকে বানিয়েছিল যে কোন দলের জন্য ত্রাস। ১৯৮২ এর বিশ্বকাপে এডারের সবগুলো গোলই এসেছিল লেফট উইং থেকে। এডার লেফট উইং এ আতংক ছড়িয়েছে আর রাইট উইং দিয়ে জিকো। জিকো শুধু রাইট উইং দিয়ে আক্রমন করতেন না সেই সাথে ঢুকে যেতেন ভিতরে। ফলস নাম্বার নাইন হিসাবেও যেকোন সময় স্ট্রাইকারের ভূমিকায় অবর্তীন হতেন তিনি সময়ের প্রয়োজনে। সর্বকালের অন্যতম সেরা ১০ নাম্বার জার্সি ধারী জিকো ছিলেন ব্রাজিলের আক্রমনের অন্যতম বর্ষা। আর জিকো যদি আক্রমনের বর্ষা হয়ে থাকে তাহলে মিডফিল্ডার সক্রেটিসকে বলা যায় ব্রাজিলের হৃদয়। রেজিস্টার ডাক্তার সক্রেটিসকে বলা যেতে পারে একজন সুরের শিল্পী। যে সব সুর গুলো একসাথে করে একের পর এক আক্রমনের সানাই রচনা করতেন। সক্রেটিস নিয়ন্ত্রন করতেন ব্রাজিলের খেলার গতি এবং তৈরী করতেন খেলোয়ারদের খেলায় জায়গা। যখন মাঝ মাঠে সক্রেটিসের পায়ে বল থাকতো তখন জিকোর সামনে দুইটি অপসন থাকতো, এক ফলস নাম্বার নাইন হিসাবে সার্জিনহোকে সাপোর্ট বা সার্জিনহোর জন্য জায়গা তৈরী করা না হলে সক্রেটিসের সাথে মিলিত ভাবে আক্রমনের জন্য গ্যাপ তৈরী করা। যদিও ফ্যালকাও অনেক উপরে খেলতো ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হওয়া সত্বেও। জিকো প্রতিপক্ষের মাথাব্যাথ্যা তৈরী করেছিল। সে প্রতিপক্ষের পুরো সীমানা দাপিয়ে বেড়াতো। সেই জন্য আগা গোড়া একজন আক্রমনাত্মক মিড ফিল্ডার হলেও জাতীয় দলে ৮৬ ম্যাচে তার গোল সংখ্যা ৫২। যা যেকোন স্ট্রাইকারের জন্য ঈর্ষনিয়, কিন্তু তারপরও তিনি ছিলেন একজন মিডফিল্ডার।





আগেই বলেছি টিমটা নামে মাত্র ৪-২-২-২ ফর্মেশনে খেললেও প্রয়োজনে সেটা হয়ে যেত ৪-৩-৩। যেটি ফর্মেশন ফিগারে খুব সুন্দর ভাবে দেয়া আছে। জিকো এবং এডার খেলেছেন উইংগার হিসাবে। জিকো শুধু ডান দিক দিয়েই আক্রমন করেন নি, সেই সাথে এ্যাটিকিং মিডফিল্ডার রোলে চলে আসতেন ডি বক্সের সামনে এসে। সক্রেটিস ছিলেন টিমের মূল সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। তিনিই নিয়ন্ত্রন করতেন পুরো খেলা। বের করতেন ব্রাজিলের খেলোয়ারদের খেলার জায়গা। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ফ্যালকাও উঠে যেতেন মাঠের সোজা দিয়ে। তার আচমকা দৌড় ছিল তৎকালীন বিপক্ষ দলের ডিফেন্সের জন্য বড় হুমকি। এবং এই দৌড়ে তিনি লিংক আপ করতেন সক্রেটিস ও জিকোর সাথে। যার বড় প্রমান নিউজিল্যান্ডের সাথে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে দৌড়ে যেতে ইতালির ডিবক্সে ঢুকে পড়া এবং জিকোর পাস থেকে অসাধারন এঙ্গেল থেকে নিউজিল্যান্ডের গোল কিপারকে বোকা বানিয়ে দেয়া গোলটি।



সূদর্শন এডার

এবার আশা যাক ব্রাজিলের দুই ফুল ব্যাক জুনিয়র ও লিওনার্দোর ব্যাপারে। এই দুই জনই ছিলেন সময়ের আন্যতম সেরা ফুল ব্যাক। জুনিয়র ছিলেন লেফট ব্যাক ও লিওনার্দো রাইট ব্যাক। জুনিয়রের খেলার ধরনের ব্যাপারে কথা বলতে গেলে চরে আসবে রিয়াল মাদ্রিদের মার্সেলো বা সাবেক ব্রাজিলীয়ান গ্রেট রর্বাতো কার্লোসের কথা। এরা লেফট ব্যাক হলেও ব্রাজিল বা রিয়াল মাদ্রিদের বাম দিক থেকে হওয়া সকল আক্রমনের উৎস ছিলেন এরাই। জুনিয়রের ব্যাপারটাও ছিল ঠিক সে রকম। এই দুই খেলোয়ারের সাথে তার খেলার ধরনের কোন অমিল পাওয়া যাবে না। এবং সেই দলে জুনিয়র ছিলেন লেফট উইং এর প্রান। নামে ফুল ব্যাক হলেও কখনো কখনো নিজেকে পরিনত করতেন লেফট উইংগার হিসাবে। ১৯৮২ এর বিশ্বকাপের ২য় রাউন্ডে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জিকোর সাখে ওয়ান টু খেলে লেফট উইং দিয়ে আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডারদের অগোচরে যেভাবে ঢুকে গেলেন তা বলতে গেলে অসাধারন ছিল। লিওনার্দো ছিলেন জুনিয়রের একেবারে বিপরীত। সে একটু উপরে কম উঠতো। তবে মাঝ মাঠ থেকে তার পাঠানো ক্রসগুলো এবং লং পাসগুলো যথেষ্ঠ ভীতি সঞ্চারের জন্য যথেষ্ট ছিল। ফলে এই দুই ফুল ব্যাক অনেকটা দুই জন ডিফেন্সিভ উইংগার বনে গিয়েছিল। ফলে ব্রাজিলের ফর্মেশনটা পরিনত হয়েছিল ২-৭-১। যার ফল তারা ভোগ করেছিল ইতালির সাথে শেষ ম্যাচে।



মিডফিল্ড জেনারেল সক্রেটিস

২-৭-১ এ পরিনত হওয়ার ফল ব্রাজিল বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ থেকেই ভোগ করে এসেছে। গ্রুপ পর্বে দূর্বল নিউজিল্যান্ড ব্যাতীত প্রতিটি দলই গোল করেছে ব্রাজিলের বিপক্ষে। এমনকি ২য় রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার সাথে খেলায় ম্যারাডোনা বারবার ব্রাজিলের রাইট উইং দিয়ে ডিফেন্স ভেঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এর কারন ছিল শুধুমাত্র জুনিয়রের উপরে উঠে যাওয়ার মনোভাবের জন্য এবং সেই সাথে ডিফেন্স নিয়ে টেলে সান্তানার অমনোযোগিতার কারনে বার বার প্রতিপক্ষ ভেঙ্গে ফেলছিল ব্রাজিলীয়ান ডিফেন্স। জুনিয়রের এই দূর্বলতার কারনে শেষ ম্যাচে ইতালীর পাওয়ালো রসি পেয়েছিলেন হ্যাট্রিক। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে পাওয়ালো রসির হেডে দেওয়া গোলটা ছিল এক রকম জুনিয়রের উপহার। সে পাওয়ালো রসিকে ট্রাক করার কোন চেষ্টাই করে নাই। ফরে প্রায় খালি যায়গায় দৌড়ে এসে হেডে গোল করে পাওয়ালো রসি। পাওয়ালো রসির ২য় গোলটি ছিল আচমকা। ডিফিন্সিভ মিডফিল্ডার সেজারোর একটা ভুল পাস সর্বনাশ ডেকে আনে ব্রাজিলের। যদিও সেজারোকে দোষ দেয়া যায় না। কারন তার দুই সঙ্গী জুনিয়র ও ফ্যালকাও তখন মাঝ মাঠে।এমনকি তৃতীয় গোলটা হয়েছে বেকুবের মতো কর্নার ক্লিয়ারেন্সের কারনে। কোন কারন ছাড়াই ফাকা যায়গায় দাড়িয়ে জুনিয়র বলটি কর্নারের মাধ্যমে ক্লিয়ার করেন। এবং কর্নার থেকে করা পাওয়ালো রসির করা গোলটির কারনে কপাল পুরে ব্রাজিলের। সেই ব্রাজিলের আক্রমন ভাগকে যদি দশে দশ দেয়া যায় তাহলে ডিফেন্সে পাস মার্কও পাবে না দলটি। কারন দলটিতে সবাই স্ট্রাইকার হতে চাইতো।



দলের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা স্ট্রাইকার সার্জিনহো

আপনাদের জন্য ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচের একটি ভিডিও শেয়ার করলাম, ভিডিওর ১.৩০ ও ২ মিনিটে আপনি দেখবেন কিভাবে ফ্যালকাও ডিফেন্সকে একা ফেলে উপরে উঠে গেছে। এবং ফ্যালকাও এর এই উপরে উঠে যাওয়ার জন্য ডিফেন্সকে ম্যারাডোনা ও ডিয়াজ বারবার পরাস্ত করেছিল। এবং একবার আর্জেন্টিনার একটা ক্লিয়ার পেনাল্টিও রেফারি দেয় নি। তাই বলে ব্রাজিলের এ্যাটাককে কিন্তু ছোট করা যাবে না। ক্রাজিলের ২য় গোলটাকে বরা যায় অন্যতম সেরা ক্লাসিক গোল। সার্জিনহো বলের পিছে, তার পিছনে সম্মেলিত ভাবে এ্যাটাক সাজিয়েছে সক্রেটিস, এডার, জিকো এবং ফ্যালকাও। সক্রেটিসের সোজা পাসে এডারের পায়ে, তারপর এডারের আড়াআড়ি পাসে জিকোর পায়ে, জিকোর পেছন থেকে ফ্যালকাও এর সেই দৌড়, ফ্যালকাও এর অফসাইড লাইন ব্রেক করার আগ মূহুর্তে জিকোর পাস, বল পেয়ে ডানে সম্পূর্ন আন মার্ক সার্জিনহোর উদ্যেশ্যে ক্রস। গোল
ব্রাজিল সেকেন্ড রাউন্ডে যখন ইতালীর কাছে পরাজিত হয় জিকো তখন একটি উক্তি করেছিলেন যা আজও সৌন্দর্য পিপাসু ফুটবল ফ্যানদের কাছে অমর হয়ে রয়েছে, জিকো বলেছিলেন, আজ সুন্দর ফুটবলের মৃত্যু হয়েছে। সেই পরাজয়ের পর ব্রাজিলেও ক্লাসিক ফুটবলারদের একটা গ্যাপ তৈরী হয়। যা ১৯৯৩ পর্যন্ত ভুগিয়েছিল ব্রাজিলকে। অতঃপর আসে রোমারিও। তার হাত ধরে আসে ১৯৯৪ এর শিরোপা। এর পর আবার বাড়তে থাকে ব্রাজিলে স্কীলফুল ফুটবলারদের আগমন। রোমারিওর পর আসে রোনাল্ডো, রিভালদো, রবার্তো কার্লোস, রোনালদিনহো, কাকা, নেইমাররা। যদিও একটা সময় মনে করা হতো, সুন্দর ফুটবল দিয়ে শিরোপা জেতা যায় না, কিন্তু সেই ধারনা ভূল প্রমান করেছে বার্সেলোনা। ডাচ প্রিন্স ইয়োহান ক্রুয়েফের হাক ধরে বার্সা আজ সুন্দর ফুটবলের ব্যান্ড এ্যাম্বাসেডর। সেআই হাত ধরে স্পেন ২০০৮ ও ২০১২ এর ইউরো চ্যাম্পিয়ন ও ২০১০ এর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। তাই এখন ইতালির মতো রক্ষনাত্মক দলের কোচ সিজার প্রানেদোল্লী পর্যন্ত বলেন, আপনি সুন্দর ফুটবল ছাড়া ম্যাচ জিততে পারবেন না।
১৯৮২ এর ব্রাজিলকে এখনো ধরা হয়ে তাকে আক্রমনাত্মক ফুটবলের শেষ কথা। ১৯৮২ এর পরের আর কোন ব্রাজিলীয়ান দল আক্রমনাত্মক ফুটবলের এতো সুন্দর পসরা সাজাতে পারে নি। সেই দলের মতো এতো অসাধারন সৃষ্টিশীল মিডফিল্ডও আর আসে নি। যদিও অতি আক্রমনাত্মক ফুটবলের বলি হয়েছে এই দলটি বিশ্বকাপ না জিতে। শুধুমাত্র ডিফেন্সের ভুলের কারনে তারা হতে পারে নি ইতিহাসের অংশ। তাই বিশিষ্ট ফুটবল বিষয়ক লেখক জোনাথান উইলসন জিকোর মন্তব্যের শুর ধরে বলেছেন, “এই দিনে আক্রমনাত্মক ফুটবলের লাতিন পসরার মৃত্যু হয়েছে। এই দিনের পর আর হয়তো নিজেদের পজিসনের সেরা সেরা প্লেয়ার নিয়ে আর কোন দল গঠন হবে না এবং বিশ্বজয়ী হবে না। আজ থেকে হয়তো সিস্টেমেরই জয় হবে।”
বর্তমানের ফুটবল বোদ্ধারা মনে করেন, একটা দলের জয়ের ক্ষেত্রে সৌন্দর্য নয়, ট্যাকটিসটাই বেশি গুরুত্বপূর্ন। আর তাই চেলসি, ইন্টারমিলান, পোর্তোএর মতো দলগুলো চ্যাম্পিয়নস লীগ জেতে। আর তাই ট্যালেন্টেড টিমগুলো সব সময় জয় লাভ করে না, অর্গানাইজ টিমের বিপক্ষে, ৮২ এর ব্রাজিল, ৯০, ৯৪ এর গুলিত, বাস্তেনদের হল্যান্ড, ৭৪ এর ক্রুয়েফের হল্যান্ড, ৫৪ এর ভীনগ্রহের ফুটবল খেলা হাঙ্গেরী সেই কারনেই আসতে পারে নি বিজয়ীর কাতারে। তাই বলে তারা কিন্তু হারিয়ে যায় নি, রয়ে গেছে শত ফুটবল রোমান্টিকদের হৃদয়ে।





একসাথে দুই ফুটবল লিজেন্ড জিকো-ম্যারাডোনা
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৫০
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×