somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নেতা, আপনি কি আছেন শাহবাগের জনতার ভীড়ে ?

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাবতে অবাক লাগে স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পরও আমাদের যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার নিয়ে সোচ্চার হতে হয় । সময়ের হিসাবে চল্লিশ বছর নেহায়েত কম সময় নয় ।জাপানের কথা চিন্তা করে দেখুন, ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটি ৪০ বছর পর ১৯৮৫ সালে কোথায় গিয়ে পৌছেছিল । কিংবা ধরা যাক ইংল্যান্ডের কথা, ১২১৫ সালে তাদের রাজা জন ম্যাগনা কার্টার মাধ্যমে দেশে আইনের শাসনের স্বীকৃতি দিয়েছে । অথচ আমদের এখনও আইনের শাসনের জন্য আন্দোলন করে যেতে হচ্ছে ।
বাঙ্গালী একদিকে যেমন আবেগপ্রবণ অন্যদিকে তেমনি বিদ্রোহী। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ের সেই গান 'মাগো আমরা তোমার শান্তপ্রিয় শান্ত ছেলে, তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে লড়তে জানি ।' -- সত্যিকার অর্থে আমাদের চরিত্রের এই অংশটিকে চমৎকার ভাবে তুলে ধরেছে ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ করেছে জার্মানী ও ইংল্যান্ড । এখন আবার ই্ওরোপীয় ইউনিয়নের একই ছাতার নীচে তারা সমবেত হয়েছে । একদিকে যেমন তারা একক মুদ্রা ইওরো চালু করেছে অন্যদিকে তারা নুরেমবার্গে যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারও করেছে ।
বাংলাদেশে যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের বিরোধীতা যারা করে থাকেন (আমি নিশ্চিত এই অংশটি সমগ্র বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ) তারা কেন করেন আমি জানি না । একটি মানুষ যদি খুন, ধর্ষণ কিংবা অপরাধে সহায়তা করে থাকেন তবে শাস্তি থাকে পেতে হবে । এটাই আইনের শাসন ।
সুতরাং একজন কিংবা দুইজন মানুষের ফাঁসি নয় আমাদের আন্দোলনের লক্ষ হওয়া প্রয়োজন একটি শক্তিশালী বিচার ব্যবস্থার জন্য যেখানে সরকার কিংবা অন্য কোন সংস্থার কোন ধরনের প্রভাব থাকবে না। কোন সরকার চাইলেই পছন্দের ব্যক্তিটিকে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন না ।যদি এ বিষয়টি নিশ্চিত করা যায় তাহলে বিচারের জন্য আমাদের আর রাস্তায় নেমে আসতে হবে না, তিনশ খুনের জন্য ফাঁসি হয় না এমন রায় আর শুনতে হবে না ।
যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন কিছু মানুষ অপরাধ করবে আমাদের ভাবতে হবে কিভাবে এই মানুষগুলোকে কিভাবে সঠিক শাস্তি দেয়া যায় । কিভাবে আমাদের রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো যেমন: পুলিশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদিকে শক্তিশালী করা যায় সামনের এগিয়ে চলার দিনে এ্ই বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া প্রয়োজন ।
রাজনীতিবিদগণ এই আলোচনায় কখনই আগ্রহী নন । কারণ যদি পুলিশ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কর বিভাগ কিংবা বিচার ব্যবস্থার ওপর তাদের কোন প্রভাব না থাকে তখন তো তারা আর যা ইচ্ছা্ তাই করতে পারবেন না, তাহলে তো ক্ষমতার কোন আনন্দই থাকে না ।
আমরা এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি যেখানে কোন অন্যায়, ভেদাভেদ বা বিভক্তি থাকবে না । উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে তারা এই বিষয়গুলোকে নিশ্চিত করেছে তাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালীকরণের মধ্য দিয়ে । তাই এসব দেশে প্রধানমন্ত্রি কিংবা প্রেসিডেন্ট হলেও আপনি আইনের তোয়াক্কা না করে রাস্তা দিয়ে চলে যাবেন সেটা হবে না । আইন ঠিকই এসে ধরবে আপনাকে । কিন্তু আমাদের সমস্যা হলো কোন রাজনৈতিক দলই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিশ্চিত করতে আগ্রহী না । সেক্ষেত্রে আজ থেকে দশ বছর পরও আমরা হয়ত একই দৃশ্য দেখতে দেখব । এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় জনগণের আন্দোলন । এই আন্দোলন জনগণকেই গড়ে তুলতে হবে । কোন দল কিংবা গোষ্ঠীর স্বার্থে নয়, বাংলাদেশের স্বার্থে ।
তারপরও আমার জনগণের আন্দোলন হাইজ্যাক হয়ে যাবার কথা শুনি । জনগণের আন্দোলনের আবেগকে পুঁজি করে যে রাজনীতিববিদরা ভোটের বাক্স ভরেন নির্বাচিত হলেই তারাই আবার সমস্ত প্রতিশ্রুতি ভুলে যান । আন্দোলন-ভোট-নির্বাচন-কুশাসন-আন্দোলন- এর দুষ্টচক্র থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে এমন নতুন এক নেতৃত্ব যারা সত্যিকার অর্থে দেশকেই ভালবাসে অর্থ কিংবা ক্ষমতাকে নয় । হয়ত এমন একজন নেতাকে পেতে হলে আমাদের কয়েক প্রজন্ম অপেক্ষা করতে হবে । অথবা কে জানে আমাদের সেই নেতাটি হয়ত কোথাও দাড়িয়ে আছেন শাহবাগেরই এই জনতার ভীড়ে ।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×