- আবীর
- জ্বী বলেন।
- বলেন মানে?
- বলেন মানে বলেন যা বলতে চান বলেন ঘুমিয়ে আছি দেখছেন না?
কি মনে করে যেন লোকটা কে দেখার জন্য তাকালাম, সাথে সাথেই লাফিয়ে উঠলাম জান্নাত তুমি?
- হু আমি
- নাহ স্বপ্ন দেখছি নয়তো মাথা খারাপ হয়ে গেছে আমার। তুমি কোথা থেকে আসবা তুমি তো মারা গেছ।
- মারা গেলে এখানে আসলাম কীভাবে?
- সেটাই তো আমি ভাবছি, তুমি মারা যাওয়ার সত্বেও এখানে কীভাবে আসলা।
- তুমি বোকাই রয়ে গেলে আবীর, আমি মারা যাইনি।
- তাহলে কে মারা গেল?
হেই আবীর, হেই! ঘুমের মধ্যে কি আবোল তাবোল বকসিস? জান্নাত কে আবার?
- কে আবার হবে আমি যাকে ভালবাসি সে।
- কই কখন ও তো জান্নাত নাম শুনিনি তোর মুখে আর তুই নাকি কাউকেই ভালবাসিস না?
- কে বলছে ভালবাসি না? যাতো ঘুমে ডিস্টার্ব করিস না।
এমন সময় প্রচণ্ড জোরে কারো ঢাক্কায় আমার ঘুম ভেঙে গেল, তাকিয়ে দেখি সিয়াম দাঁড়িয়ে আছে। আমি বললাম কিরে সিয়াম তুই? এতরাতে এখানে কি করিস? দাঁড়া আমি মুখটা ধুয়ে আসছি। সিয়াম বলল হু দাঁড়াচ্ছি তার আগে তুই এই বইটা রাখ। আমি ওর হাত থেকে বইটা নিলাম তাকিয়ে দেখি বইটার নাম "মাঝরাতের আতঙ্ক" আমি এক গাল হেসে বললাম, তুই আবার কবে থেকে হরর গল্প পড়িস? বলে বইটা খাটের উপরে রেখে চেহারা ধোয়ার জন্য ঘর থেকে বের হলাম।
বেছিনের সামনে গিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়েই আঁৎকে উঠলাম। আমি এ-কি দেখছি? আমার চোখ আগুনের মত লাল হয়ে আছে, আর মুখের বা পাশ দিয়ে রক্তের ধারা প্রবাহিত, দুই পাশের দাতগুলোও যেন একটু বড় বড় লাগছে। ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি চোখ বন্ধ করে ফেললাম তারপর আবার তাকালাম। এবার স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম নাহ সবকিছু ঠিক আছে প্রথমে ভুল দেখেছিলাম।
ঘরে এসে দেখি সিয়াম নেই, ও আবার কোথায় গেল? এমন সময় খেয়াল হলো সিয়াম আমার ঘরে আসলোই বা কীভাবে? আমি তো একাই থাকি আমার ফ্লাটে দরজা জানালা সব বন্ধ তারচেয়েও বড় কথা ও মারা গেছে কয়দিন আগে, যদিও ওর মৃত্যুটা ছিল অনেক ভয়ানক। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তাহলে এই সবকিছুই কি আমার কল্পনা ছিল? তাকিয়ে দেখি বিছানার উপর "মাঝরাতের আতঙ্ক"। নাহ তাহলে কিছুই কল্পনা ছিল না। আমার স্পষ্ট মনে পড়ছে আমি জান্নাতের সাথেও কথা বলেছি। আমি নাকি ওকে ভালবাসি অথচ জান্নাত নামে আমি কাউকেই চিনিনা।