নাস্তিক্যবাদীরা তাদের কথিত বাংলা সংষ্কৃতি দোহাই দিয়ে সচেতন মুসলিম সমাজকে পহেলা বৈশাখ নামক কুফরী প্রথা গলাধঃকরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা অবতীর্ণ হয়েছে ধর্মব্যবসায়ীর ভূমিকায়। ইসলামের দোহাই দিয়ে মানুষকে হারাম দিবস খাওয়ানোর পায়তারা করছে। যুগান্তরের মত প্র্রথম আলো পত্রিকাও পহেলা বৈখাশকে প্রচারের জন্য বেছে নিয়েছে ধর্ম পাতা। ইসলামের দোহাই দিয়ে পহেলা বৈশাখকে জায়েজ বলতে চেয়েছে
( http://goo.gl/V1Re1C ) । কিন্তু লেখায় পহেলা বৈশাখ মুসলমানদের উৎসব এমন কোন ঐতিহাসিক দলিল দেখাতে পারেনি, পারেনি পহেলা বৈশাখের পক্ষে কুরআন হাদীসের কোন দলিল দেখাতে।
লেখাটিতে লেখক কথিত বাংলা সনকে ইসলামে পক্ষের সন বলেই দাবি করেছে।
অথচ ইতিহাস বলে ভিন্ন কথা। ইতিহাস বলে, মুসলমানদের হিজরী সনের বিরোধীতা করতে গিয়েই হিন্দুদের অনুরোধে তাদের পূজা-পার্বনের জন্যই সৃষ্টি হয়েছিলো ফসলী বা এলাহী সন, যাকে আজকে বাংলা সন বলে দাবি করা হচ্ছে।
এ সম্পর্কে ১৩১৮ ফসলি সনে লেখক আনন্দনাথ রায় তার 'বারভূঁইয়া' গ্রন্থে লিখেছে- 'আকবর বাদশাহর রাজত্বকালে হিন্দু সম্প্রদায় বাদশাহের কাছে জ্ঞাপন করে, আমাদের ধর্মকর্ম সম্পর্কীয় অনুষ্ঠানে হিজরি সন ব্যবহার করতে ইচ্ছা করি না। আপনি আমাদের জন্য পৃথক সন নির্দিষ্ট করে দিন। আকবর হিন্দু প্রজার মনোরঞ্জনার্থে হিজরি সন থেকে দশ- এগার বছর কমিয়ে এলাহি সন নামে একটি সনের প্রচলন করেন। যা আমাদের বঙ্গদেশের সন বলে চলে আসছে।' ( http://goo.gl/Pi1iFq ) এখন ফসলী সন নামে একটি সনকে যদি ধরেও নেই, তবে প্রশ্ন হচ্ছে- বছরের প্রথম দিন পালন করা কি ইসলামে জায়েজ আছে ?
এ সম্পর্কে পবিত্র শরীয়ত কি বলে ??
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরতের পর মদীনা শরীফ গিয়ে ঐ এলাকাবাসীর দুটি উৎসব বন্ধ করেছিলেন। একটি হচ্ছে, বছরের প্রথম দিন উদযাপন বা নওরোজ; অন্যটির নাম ছিলো ‘মিহিরজান’। এ উৎসবের দুটির বিপরীতে চালু হয় মুসলমানদের দুই ঈদ। (তাফসিরসমূহ দেখতে পারেন)
মূলত: নওরোজ বা বছরের প্রথম দিন পালন করার রীতি ইসলামে নেই, এটা পার্সী মজুসীদের (অগ্নিউপাসক) অুনকরণ। এ সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছে: “যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদের দলভুক্ত।”
তাই যে কোন নওরোজ সেটা থার্টি ফাস্ট নাইট হোক, পহেলা নববর্ষ হোক কিংবা পহেলা মুহররম হোক, বিজাতীয় রীতি হিসেবে প্রতেকটি ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এ সম্পর্কে------- -
১) ইমাম ফখরুদ্দীন উসমান বিন আলী আয যাইলায়ী বলেন:
“নওরোজ ও মেলার নামে কিছু দেয়া নাজায়েয। এ দুই দিনের নামে প্রদত্ত হাদিয়া হারাম; বরঞ্চ কুফর”। (গ্রন্থ -তাবইনুল হাকায়েক : ৬/২২৮)
২) ইমাম হাফস কবীর রহমতুল্লাহি বলেন:
ক) “নওরোজ বা বছরের প্রথম দিন উপলক্ষে যদি কেউ একটা ডিমও দান করে, তবে তার ৫০ বৎসরের আমল থাকলে তা বরবাদ হয়ে যাবে"
খ) “যে ব্যক্তি নওরোজের দিন এমন কিছু খরিদ করল যা সে পূর্বে খরিদ করত না, এর মাধ্যমে সে যদি ঐ দিনকে সম্মান করতে চায় তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।”
৩) হাম্বলি মাযহাবের ফিকাহর গ্রন্থ ‘আল-ইকনা’ তে বলা হয়েছে-
“কাফিরদের উৎসবে যোগদান করা, সেই দিন উপলক্ষে বেচাবিক্রি করা ও উপহার বিনিময় করা হারাম”। উপরক্ত দলিল দেখলে এটা সহজেই বুঝা সম্ভব, থার্টি ফাস্ট নাইট, পহেলা নববর্ষ, পহেলা মুহররম শুধু পালন করা হারাম নয়, বরং ঐ দিবস উপলক্ষে কাউকে শুভেচ্ছা জানানো, কিংবা ঐ দিবসগুলো উপলক্ষে কোন অফার দিলে সেটা গ্রহণ করা, ঐ দিবস উপলক্ষে কেনাবেচা করা, খাদ্যগ্রহণ করা হারাম ও ক্ষেত্র বিশেষে কুফরী।
মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য ধর্মের লেবাসে নাস্তিক্যবাদী প্রথম আলো এহেন চক্রান্তমূলক লেখার তীব্র নিন্দা করছি এবং এরজন্য পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশক ও লেখকের শাস্তি দাবি করছি।