somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

BM Khalid Hasan
আমি? প্রচুর মুভি দেখি, পজিটিভ ক্যারেক্টারকে সাপোর্ট করি, ভূল করলে স্বীকার করি, তথ্য জানতে ভালবাসি, সবকিছুতেই ইন্টারেস্ট আছে, নিউট্রাল ওপিনিওন দেই। কিন্তু ৯৯% চান্স আপনি আমার লজিকে অফেন্ডেড হবেন!

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে তারা যে প্রস্তুতি নিয়েছে সেটা নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো। এখন এই অবস্থায় পক্ষে-বিপক্ষে দুটো গ্রুপ তৈরি হয়ে গিয়েছে।

পক্ষকারীদের লজিকঃ
• যে লেট করেছে সে নিজের লেখার কম সময় পাবে, তাতে পরীক্ষকদের কি সমস্যা
• রাস্তা ঘাট ও পরিবহনের অবস্থা সবার জানা, তাহলে অল্প কয়েক মিনিট লেট হলে এত ইসু হবে
• যারা লেট করেছে তারা পরীক্ষার সুযোগ পেলে সড়কের অনিয়ম নিয়ে নিয়ে ভাবার সুযোগ পেত

বিপক্ষকারীদের লজিকঃ
• যারা সময়ের মূল্যায়ণ করেনি তার ফল পাবে এটাই স্বাভাবিক
• যারা সময়ের মূল্য রচনা মুখস্থ করেও কাজে লাগায়নি, তারা দেশের কি করবে, তারা অযোগ্য
• পরিদর্শকেরা দায়িত্ব কর্তব্য অনুযায়ী নিরাপত্তার জন্য গেট লাগিয়ে দিয়েছে, যেন কোনো থার্ড পার্টির ঝামেলায় পরীক্ষার ক্ষতি না হয়

বিসিএসের পড়া যেরকম সময় নেয়, তাতে কেউ পরীক্ষার সুযোগ না পেলে খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক। আমরা অনেক ভাই বোন সিনিয়রকে ইনকামের পাশাপাশি রাত জেগে সংগ্রাম করতে দেখেছি। কিন্তু লেট ইসু নিয়ে বলবো যে, বাংলাদেশের আমলাতান্ত্রিক কাজকারবার যেহেতু আবেগ দিয়ে চলে না, তাই আপনাদেরও আবেগ দিয়ে পরীক্ষার্থীদের সিমপ্যাথি দেওয়া ঠিক হবেনা। আমি স্টুডেন্ট লাইফ থেকে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের কিছু জিনিস দেখে আসছি। তার মধ্যে নেগেটিভ বিষয়গুলো হলোঃ

১. সামাজিক ও বাস্তবধর্মী জ্ঞানের অভাব
বিসিএস-এ লাখো মানুষের মধ্যে সহজভাবে মেধা বাছাই করার জন্য একটা কঠিন প্রশ্ন পদ্ধতি বানিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে আপনাকে প্রচন্ড পড়াশোনা করতে হবে। এজন্য ক্লাসের সবচেয়ে সেলফিশ বইয়ের মধ্যে মুখ গোঁজা ছেলেমেয়েরাই বিসিএসে টিকে যেত। আর এই অসামাজিক মানুষগুলোর অন্যন্য কমন সেন্স বা সোশাল নলেজ কম থাকে। কোন দেশের মুদ্রার নাম কি জানা থাকলেও দেশের রাস্তাঘাটের অবস্থা কি জানা থাকে না! সো তারা লেট করবে না তো কারা করবে!

২. পূর্ব প্রস্তুতির অভাব
আপনি পরীক্ষার্থী হলে আপনার উচিৎ সময়ের ৩০ মিনিট আগে উপস্থিত থাকা। তাই জ্যাম কেমন হবে, বাস কেমন চলবে এসব ভেবে সময় হাতে রেখে সেন্টারে আসা বেটার। কিন্তু দেখা যায় অনেকেই অন্য জেলা থেকে ওইদিন সকালের বাসে রওয়ানা দিয়ে ঢাকা আসে! এটা ঠিক না। আপনি সারাজীবন যার জন্য প্রিপারেশন নিলেন, তার জন্য আরেকটু সাবধান হয়ে বা ১০০০ টাকা বেশি খরচ করে কাছাকাছি থাকবেন না কেন? চাইলে এনিহাউ প্রিপারেশন নিয়ে সেন্টারের কাছে থাকা যায়।

৩. সীমাবদ্ধ চিন্তাভাবনা
অনেকে লেটে ঢুকতে না পেরে কান্নায় রাস্তায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। কারণ তাদের (বা তাদের ফ্যামিলির) কাছে বিসিএস-ই স্বপ্ন-ধ্যান-জ্ঞান! কারণ তারা ভাবে এটা সিকিউর লাইফ দেবে। থাকার জায়গা, যাতায়াত ব্যাবস্থা, দূর্নীতির সুযোগ সব এখানে আছে! এতে করে তারা নিজেদের অন্যান্য পটেনশিয়াল গ্রো করছে না। এরকম লেট করে সহজে ডিমোটিভেটেড হওয়া একটা মানুষ বড় কোনো পদে না থাকাই দেশের জন্য বেটার।

বিলিভ মি, আমি বিএসএস হেটার নই। ভার্সিটি লাইফের একটা পযায়ে আমরা ভাবতাম বিসিএস হলো স্টেরিওটিপিকাল টার্গেট, তাই বন্ধুরা ট্রল করতাম। কিন্তু প্রাইভেট জবের ছিমছাম ইনটেরিয়রের আড়ালে থাকা টক্সিক লাইফ দেখে মনে হয়েছে বিসিএস দিয়ে সম্মানজনক একটা পোস্টে যাওয়া মাচ বেটার ছিল।

এখনো হাতে সময় আছে। এখানে ওইরকম জবাবদিহিতা নেই, কেপিআই ফিলআপের প্রেসার নেই। জাস্ট ভাল প্লান এক্সিকিউশন করে মানুষের উপকার করবেন, নিজের ফ্যামিলিকে নিশ্চিন্ত রাখবেন। তাই একজন ভালো ছাত্র কোনো কারণে পরীক্ষার সুযোগ না পেলে তার জন্য অবশ্যই দুঃখপ্রকাশ করবো। কিন্তু সময়ের জ্ঞান নেই এরকম মানুষদের জন্য দুঃপ্রকাশ করতে পারবোনা। আমরা থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিতে সার্ভাইভ্যাল করছি, আমাদের ট্রাফিক কেমন না বুঝে যে দেরি করলে এটা ঠিক বাস্তবধর্মী হলো না। বিসিএস-এ চান্স পাওয়া কোনো ব্যর্থতা নয়, বরং এই সারাউন্ডিং সেন্স না হওয়াই চরম ব্যর্থতা।

আমি ব্যক্তিগতভাবে জীবনের একটা বিশাল সময় ওয়েট করে কাটিয়েছি। ছোটবেলা থেকে বাবা মা পরীক্ষার ১ ঘন্টা আগে রেডি করে হলের সামনে নিয়ে যেত, তারা আমার সময় জ্ঞানের একটা ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছে। কিন্তু এখন কারো সাথে দেখা হলে সে ২ মিনিট, ৫ মিনিট বলে দুই ঘন্টা পরে আসে! এই ছোটখাট কাজে সময়কে অবমূল্যায়ণের অভ্যাসই তরুণদের বড় পরীক্ষা মিস করায়।

সো ইটস বেটার টু রিজারেক্ট দ্য হ্যাবিট অ্যান্ড লাইফ গোলস। জীবনে অনেক অপশন আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৭
১৬টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×