আর মাত্র ৩০ ঘণ্টা।তার পরই বাংলাদেশ বিশ্বকাপে ৩য় বারের মত ভারতের মুখোমুখি হবে।এখন পর্যন্ত দুদলই সমানে সমানভাবে অবস্থান করছে। মানে বিশ্বকাপে দু দলেরই অবস্থান ১-১।এই ম্যাচে স্বাভাবিকভাবেই favorite (প্রিয় দল নয়, সম্ভাব্য বিজয়ী) হিসেবে খেলতে নামবে ভারত।তবে, কেবল সর্বশেষ বিশ্বকাপ জয় কিংবা বিশ্বের সেরা batting line up থাকার কারণেই নয়, এই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত অপরাজিত দুটি দলের একটি ভারত।সেই সাথে তাদের বোলাররাও তাদের সেরা সময়টাই কাটাচ্ছে।ফিল্ডিং এও উন্নতি চোখে পড়ার মত।
তবে এই বিশ্বকাপের ৭ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় ও ৫ বছর আগে নিউজিল্যান্ডে সর্বশেষ খেলা বাংলাদেশ যোগ্য দল হিসেবেই quarter final এ খেলার সুযোগ পেয়েছে।তিন বিভাগেই খেলোয়াড়রা ভালো সময়ই কাটাচ্ছেন।তাই তাদেরকেও হেয় করে দেখার প্রশ্নই আসে না।
দুদলের জন্যই স্বাভাবিকভাবে ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ।তবে, বাংলাদেশের জন্য একটু বেশিই।কারণ, এই ম্যাচটাই শাপমোচনের সুযোগ।কিসের শাপমোচন? একই মাঠে খেলা সর্বশেষ ম্যাচের।এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, বাংলাদেশ দল group stage এর প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার সাথে এই মাঠেই হেরেছিলো এবং সে ম্যাচেই বাংলাদেশের performance ছিলো তুলনামূলকভাবে খারাপ।বিশেষ করে বোলিং ও ফিল্ডিং এ। তাই ভারতের বিপক্ষের ম্যাচ ভুল শোধরানোরও সুযোগ।
শক্তিশালী দল হলেও তাদেরকে হারানোর সুযোগ যে একেবারেই নেই তা না। তবে কেবল নিচের কিছু ব্যাপার ঘটলেই তাদের হারানোর সম্ভাবনা কমে যাবে না, বরং বেড়েও যেতে পারেঃ
## এই ম্যাচে টস টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।মানে এই মাঠে কোন দল জিতবে সেটা টসের সময় এক অর্থে নির্ধারিত হয়েই যায়।অনেকেই বলছেন, টসে জিতে বাংলাদেশের ফিল্ডিং নেয়া উচিৎ হবে। তাঁদের যুক্তিটা এরকমঃ আগে ব্যাট করলে বাংলাদেশের দেয়া যেকোন target ই ভারত তাদের শক্তিশালী batting line up অনায়সেই chase করবে।আর তাছাড়া, বাংলাদেশের বোলাররা ওদেরকে ২৭০-৮০ এর মধ্যে বেঁধে ফেলতে পারবে।এই প্রসঙ্গে শুরুতেই আমি বলতে চাই এই মাঠে এখন পর্যন্ত কোন দলই ৩০০ রানের target chase করতে পারে নি। পরে ব্যাট করে সর্বোচ্চ স্কোর ২৯৯, ওয়েস্ট ইন্ডিজের, তাও আবার ১৪ বছর আগে এবং ম্যাচটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিততে পারে নি।দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অস্ট্রেলিয়ার ২৯৭/৪, ৪ বছর আগে এবং অস্ট্রেলিয়া এতে জয় লাভ করে।আবার উপমহাদেশের দলগুলোর মধ্যে পরে ব্যাট করে সর্বোচ্চ স্কোর ভারতের ২৭০, ১১ বছর আগে।আর যেহেতু ভারতের batting line up বিশ্বসেরা সেহেতু, টস জিতে ফিল্ডিং নিলে তা বুমেরাং হয়েই ফিরে আসার সম্ভাবনা বেশি।
সুতরাং টস জিতলে বাংলাদেশকে চোখ বন্ধ করে ব্যাটিংই নিয়ে নিতে বলবো।
## একাদশে সামান্য পরিবর্তন আনতে হবে।নিয়মিত ওপেনারদের একজনকে বাদ দিয়ে 'সৌম্য সরকার' কে ওপেনিং এ পাঠালে ভালো হয়।এরপর তিনে 'মাহমুদঊল্লাহ' কে নামানো যেতে পারে কারণ ফর্মের বিচারে এই মুহুর্তে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান তিনি আর সাধারণত তিন নম্বরে দলের সেরা ব্যাটসমানই ব্যাট করে।তাছাড়া তিন নম্বরে ব্যাট করে তাঁর record ও খারাপ নয়।তাতে তাঁর ভায়রা 'মুশফিকুর রহিম'ও
পছন্দের ও একই সাথে উপযুক্ত position, চার নম্বরে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে যাবেন।এরপর পাঁচে বরাবরের মত ব্যাট করবেন 'সাকিব আল হাসান'। ছয় ও সাতে 'সাব্বির রহমান' ও 'নাসির হোসেন' কে অদল বদল করেও নামানো যেতে পারে।এরপর বোলারা পর্যায়ক্রমে ব্যাট করতে নামবেন। তবে এই ম্যাচে আমি 'তাইজুল ইসলাম' বা 'আরাফাত সানি' এ দুই স্পিনাদের কাউকে নেয়ার চেয়ে চতুর্থ পেসার 'শফিউল ইসলাম' কেই নেয়ার পক্ষপাতী।কারণ, ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা পেস বোলিংটা অত ভালো খেলেন না, স্পিন যতটা ভালো খেলেন।সেই সাথে কন্ডিশনও স্পিনারদের জন্য সহায়ক হবে বলে মনে হয় না।
আর ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বোলিং আক্রমণ কেমন হতে পারে তা নিয়ে ব্লগার আহমেদ রাকিব একটি পোস্ট দিয়েছেন।
সবশেষে বাংলাদেশ দলকে শুভকামনা জানিয়ে লেখাটা শেষ করছি।
স্কোর সংক্রান্ত তথ্ের সুত্রঃ espncricinfo
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৫ ভোর ৬:৩১