somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রণে

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১।
কিছু কিছু বিকেল আসে মাঝে মাঝে, যাদের মন খারাপ বাতিক প্রচন্ড। তারা কখনো একগাদা লালচে আভা নিয়ে কাদায়, কাশফুলে মুখ লুকিয়ে ভাবায়। এসব বিকেলের সাথে নদীদের আধ্মাত্যিক যোগ আছে কিনা কে জানে? তবে, প্রকৃতি এটুকু জানে এসব বিকেলে নদীর পারে খুব এক কেউ বসে থাকবে, তার চোখে জল নামবে, বাতাসে দুঃখ ভাসবে।।

আজ ঠিক এমন একটি বিকেল নেমেছে। জারিন নদীর পারে একা বসে আকাশ দেখবে কি নদীর জলে পা ভেজাবে বোঝার চেষ্টাও করছেনা। বাতাসে চুল ওড়ার সাথে চোখের জলে অমানবিক গ্রীষ্ম নামছে।।
বুকের মধ্যে তাসের বাড়ি ভ্ঙচুরের পর নিরবে একাকিত্ব গান গাচ্ছে। একটা একটা করে ভুল মিলছে, ভুল মেলাচ্ছে। তবুও কি কেউ জানে, ভুল কে ছিল ? কি ছিল? আগের সিদ্বান্ত ভুল, নাকি নতুন করে জন্ম নেয়া পুরান মোরকের বেওয়ারিশ আবেগ ?


জারিন এর মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করছে সে ভুল, নিজের কানে শোনা সব ভুল। নক্ষত্র একটা পাথর বিশ্বাসের নাম, যার কথায় চোখ বুজে বিষ খেয়ে ফেলা যেতে পারে। শুরুতে যাকে ফেরান জীবনের অন্য্তম ভুল ছিল । এখনো ঠিক আগের মতই রাত জাগে জারিনকে ভাবে। ।। কিন্তু না । অপার্থিব আলোর মলিনতার সাথে সাথে সব বাস্তবতা এক এক করে বুকে পাথর হয়ে নামে।

২।

আরেকটু এলোমেলো হয়ে বসা যেতে পারে। নদীর পাড়ে একেবাড়েই ফাকা। হাত ধরবে কিনা দ্বিধায় নক্ষত্র'র চোখ জলের দিকে ফিরে হাসছে। চাইলেই ছুয়ে দেওয়া যায় এতদিনের ভালোলাগা অথবা এক অতিমানবীয় মনের অধিকারীনি নামবীর শরীর। এমন একটা নির্জন জায়্গায় শুধু জারিনকে ডাকার একটা অযুহাত হয়ে মাঝে মাঝে শুক্রবার আসে। ছুটির দিনগুলো।

নক্ষত্র কিছু বলার আগেই জারিন নিরবতা ভেঙ্গে বলে উঠল " দেখ , আমার প্রেমিক যদি আমাকে জানিয়ে অন্য মেয়ের সাথে বিছানায়ো যায় আমার সমস্যা নেই। কিন্তু কি জানো, আমার মিথ্যা অনেক অপছন্দ । আর তুমি আমার প্রেমিক নও। তবুও আমার মিথ্যাবাদীদের অপছন্দ তাই আবার যোগাযোগ বন্ধ হলে ভালো লাগবে। চলি"

ছেলেটা কিছু বলে ওঠার আগেই মানবী তার অদৃশ্য ডানা নামক পায়ে হেটে চলে যাচ্ছিল। ছেলেটা অবাক হয়ে বসে আছে। কিছুই বলার নেই। দূর থেকে শুধু দেখছে অস্পর্শীত কারো হেটে যাওয়া। খুব দ্রুত কুয়াশা মেলাবে এক্ষুনি।

৩।

ঠিক রাত ১১ টায় জারিনের ফোনে একটা ক্ষুদেবার্তা এলো "সরি আপু আপনাকে একটা ভুল ইনফর্মেশন দিয়েছি। আসলে ভাইয়ার কোন এফেয়ার নাই। আমার ধারণাটা ভুল ছিলো। এম এক্সট্রেমলি সরি"
এর আধ ঘন্টা আগে ফেসবুকে জারিনের বন্ধুর পোষ্টে সবায় জেনে গেছে জারিন হস্পিটালে। এক্সিডেন্ট কেইস। অবস্থা খুব একটা সুবিধার না।
অর্ধমৃত শরীরেও অবচেতন মন জানন্তে চাইছে, নক্ষত্র শুনেছে খবর? অবশ্য তার কি বা যায় আসে!


৪।

৫ বছর পর। নক্ষত্র প্রেমিকার হাত ধরে বসে আছে নদীর তীরে। দুজন কত কাছে অথছ কত শত মাইলের দূরত্ব। নক্ষত্র ইতমধ্যে প্রেমিকা নিম্মিকে জীবনের বেশ বড় একটা সত্য বলে দিয়েছে-
" ওয়ান্স আই লাভড আ গার্ল, হু পাসড এওয়ে। দুঃখ একটায় মেয়েটা জানল না, আমি আসলেই একা ছিলাম ঠিক এই নদীটার মত।। মৃত ব্যাক্তিরা তো আর ফিরে আসেনা, শুধু তাদের জায়্গায় কিছুটা অধিকার রেখ্র যায়।"

এসব মন খারাপের বিকেলে ভেতর যখন খুব ফাকা, তখন প্রকৃতি আমাদের নতুন জীবন দেই। নক্ষত্র কাদছে, নিম্মি হাত শক্ত করে চেপে ধরে আছে। কি যেন অপূর্ণতা সবার মাঝে।

আবার বিকেল নেমেছে নদীর পাড়ে। কিছু বিকেল কিছু নিয়ে যায়, কিছু বিকেল দিয়ে যায় অনেককিছু। বাস্তবতা অন্য্রকম। জীবন চলছে...চলবে এক পা দু পা করে।
১০টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×