somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারীবাদ নিপাত যাক, মানবতা মুক্তি পাক ( দ্বিতীয় পর্ব )

২২ শে মে, ২০২০ সকাল ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নারী কোন পুরুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেই হল, যদি পুরুষের অপরাধের প্রমাণ দিতে নাও পারে তবু সমাজে পুরুষটির মান সম্মান প্রতিষ্ঠা সব শেষ। অভিযুক্ত পুরুষ আর কোনদিন সমাজে মাথা উচু করে চলতে পারবে না। ভারতে যৌতুক ও ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগে প্রতি বছর আশি হাজার পুরুষ আত্মহত্যা করে। ছেলেদের সম্মান তো নারীর হাতের মুঠোয়। নারী সম্মান করলেই পুরুষের সম্মান আছে, আর নারী অসম্মান করলে পুরুষের সম্মান নাই। ... এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। জনসমক্ষে কোন মেয়ে কোন ছেলেকে চড় মারলে কেউ কিচ্ছু বলে না, সবাই মনে করে দোষ ছেলেরই ( বাস্তবে নিষ্পাপ হলেও )। কিন্তু যদি ছেলে মেয়েকে চড় মারে, গণধোলাই নিশ্চিত। .... বেশীরভাগ সময় যখন একটা মেয়ে একটা ছেলেকে মাইর দেয় তখন অন্যরা মেয়েটাকে রক্ষা করে এবং ছেলেটাকে ভয় দেখায়, '' মেয়েটা তোকে মার দিলে তুই হজম করবি। যদি পাল্টা মার দিস, আমরা সবাই মিলে তোকে পিটাব।'' ভয়ে ছেলে চুপচাপ মার হজম করে। এটা কিভাবে সমানতা হল ? সমানতা তো তখন হবে যখন নারী-পুরুষের জনের ঝগড়ায় নাক না গলিয়ে 2 জনকে এককভাবে লড়তে দেয়া হবে। তখন দেখো কে জেতে ? কিন্তু সেটা কেউ করবে না। কারণ, জানে এরকম হলে ছেলে পিটিয়ে মেয়েকে তার বাপের থুড়ি মায়ের নাম ভুলিয়ে দিবে। আমি যেকোন ধরণের মারামারি বিরোধী। কে দোষী আর কে সেটা আদালত নির্ধারণ করবে, পুলিশ বা জনগণ নয়। কিন্তু আদালতও কেন জানি মেয়েদের পক্ষেই থাকে। নারীর হাতে পুরুষকে লাঞ্ছিত হতে দেখলে সবাই খুশি হয়। তবে তাই হোক। কোন ভালবাসা দরকার নাই, কোন প্রেমের দরকার নাই, কোন সন্তান উৎপাদন হবে না। নারী-পুরুষ মারামারি করে মানবজাতি ধ্বংস হয়ে যাক। এটাই ভাল। যত্তোসব।


ভারতের তাজ হোটেলে জঙ্গি হামলার পর ভারতের পুলিশ কাশাপ নামে এক জঙ্গিকে ধরেছিল। ধরেই সাথে সাথে মারেনি। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল - Why did you do this ? সন্ত্রাসী হবার পরও তার সাথে কথা বলা হয়েছে। সবার কথা শুনতে হবে তা সে সন্ত্রাসী, খুনী, ধর্ষক যাই হোক। আইন অনুযায়ী শাস্তি দিলেও সেটা তো জোর করেই দেয়া হয়, নাকি ? স্বেচ্ছায় তো কেউ শাস্তি নেয় না। জোর করে জেল দেয়াটা অপরাধ না হলে, জোর করে কথা বলাটা কেন অপরাধ হবে ?
কথা শুনতে না চাওয়ার কারণেই পৃথিবীতে যত সমস্যা। অনেক সময় বান্ধবী বা প্রেমিকা রেগে গিয়ে ডায়লগ দেয়, ''আমি তোমার কোন কথা শুনতে চাই না।" তখন বন্ধু বা প্রেমিক রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করলে, জোর করে কথা বলার চেষ্টা করলে ইভ টিজিং এর দায়ে তার হয় গণধোলাই বা জেল। Something is wrong with system. জোর করে কথা বলতে চাওয়াটা অপরাধ হিসেবে বিবেচনা না করে, কথা শুনতে না চাওয়টা অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত। এই মুহূর্তে শুনতে না চাইলেও পরে শুনতে হবে। কিন্তু কথা শুনতে হবে।
শুধুমাত্র একটা ক্ষেত্রে, কথা শুনতে না চাওয়া অপরাধ নয়। সেটা হল বুলিং বা ragging. একজন ব্যক্তি একটু different হলে ক্লাসের বাকিরা তাকে বুলিং করে, পাড়ার ছেলেমেয়েরাও করতে পারে। ভার্সিটি নতুন ভর্তি হলে ragging এর সন্মুখীন হতে হয়। এই একটা ক্ষেত্রে, যারা বুলিং করে বা rag দেয় তাদের জোর করে কথা বলার চেষ্টা অপরাধ। কারণ, তাদের কথা বলার পিছনে কোন কারণ থাকে না ( মজা করা বা ঝামেলা বাধানো ছাড়া )। সন্ত্রাসীরও সন্ত্রাসের পিছনে cause থাকে।


নারীশাসিত সমাজে পুরুষেরা আজ নিপীড়িত, নির্যাতিত, লাঞ্ছিত। যখন দেখবেন রাস্তায় কোন ছেলে কোন মেয়েকে বিরক্ত করছে, তখন মেয়েটাকে বিরক্ত হতে দিন। মেয়েটাকে বাঁচাতে যাবেন না। হতেও তো পারে মেয়েটা ছেলেটার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ফেরত দিচ্ছে না বিধায় ছেলেটা তার টাকা ফেরত চাচ্ছে অথবা মেয়েটার মিথ্যা অভিযোগে সমাজে ছেলেটার সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়ায় ছেলেটা মেয়েটাকে অনুরোধ করছে যেন মেয়েটা নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়ে ছেলেটাকে তার হারানো সম্মান ফিরিয়ে দেয়। এটা তো নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন যে, সবসময় বিরক্ত করাটা অপরাধ নয়, কখনো কখনো ক্ষেত্রবিশেষে বিরক্ত হওয়াটাই অপরাধ।
এমনকি ভালবাসার দাবী করে কোন মেয়েকে বিরক্ত করাটাও অপরাধ নয়। প্রায়ই এরকম দেখা যায়, কোন মেয়ে কোন ছেলের প্রেমের প্রস্তাবে প্রথমে সাড়া না দিলেও, ছেলেটা বারবার ভালবাসা চাওয়ায় মেয়েটা বিরক্ত হতে হতে একসময় ঠিকই ভালবেসে ফেলে। একবার যখন মেয়েটা ভালবেসে ফেলে, তখন আর কেউ এটা দেখে না যে ছেলেটা কোন একসময় মেয়েটাকে বিরক্ত করত কিনা। অর্থাৎ মেয়েটা ভালবাসল কিনা, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। ছেলের বিরক্ত করাটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না, এটা কোন বিষয়ই না। কাজেই, কোন ছেলে যদি কোন মেয়ের কাছে ভালবাসা চেয়ে চেয়ে মেয়েটাকে অনেক বিরক্ত করে শেষ পর্যন্ত ভালবাসা পেতে ব্যর্থ হয়, তবে ছেলেটাকে খারাপ ভাবার কোন দরকার নাই। কেন খারাপ ভাবব না উত্যক্তকারী ছেলেটাকে ? কারণ - যদি ছেলেটা উত্যক্ত করে মেয়েটার ভালবাসা অর্জন করতে সফল হত ( অনেকেই হয় ), তখন তো আমরা ছেলেটাকে খারাপ ভাবতাম না। এখন ছেলেটা ভালবাসা পেতে, মেয়েটার মন জয় করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে আপনারা তাকে খারাপ ভাববেন ? এটা কি আদৌ যুক্তিসঙ্গত ? ব্যর্থতার জন্য কাউকে খারাপ ভাবা যায় না। এখন হয়ত বলবেন - খারাপ ভাবছি উত্যক্ত করার জন্য। তখন আমি বলব, উত্যক্ত করে যদি সফল হলে তো ছেলেটাকে খারাপ ভাবতেন না। ... এবার কি বলবেন ? ...
আমার পরামর্শ হল, আইন করে দেয়া হোক - ভালবাসা চেয়ে একটা ছেলে একটা অপরিচিত বা স্বল্প পরিচিত মেয়েকে সর্বোচ্চ 25 বার অনুরোধ বা বিরক্ত করতে পারবে। অনুরূপভাবে একটা মেয়েও ভালবাসা চেয়ে একটা অপরিচিত বা স্বল্প পরিচিত ছেলেকে সর্বোচ্চ 25 বার অনুরোধ ( বিরক্ত ) করতে পারবে। যদি অনুরোধ 25 বারের চেয়ে বেশী হয়, শুধুমাত্র তখনই তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। 25 বার পর্যন্ত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। আর যদি ছেলে মেয়ে পরস্পরের বন্ধু হয়ে থাকে তবে যেকেউ যেকাউকে ভালবাসা চেয়ে 100 বার পর্যন্ত অনুরোধ ( বিরক্ত ) করতে পারবে। পড়ালেখা বা অফিসিয়াল কাজে সাহায্য চেয়ে পুরুষ নারীকে বা নারী পুরুষকে সর্বোচ্চ 10 বার বিরক্ত করতে পারবে। কিন্তু গুরুতর ব্যাপারে যেমন নারী সহপাঠী বা নারী অফিস কলিগ যদি বই, খাতা, ফাইল, বেতন, ধারের টাকা আটকে রাখে কিংবা মিথ্যা অভিযোগ করে সমাজে ছেলেটার সম্মান ক্ষুণ্ন করে তবে যতবার খুশি ততবার বিরক্ত করা যাবে।
By the way, বুলিং এর পিছনে কোন কারণ থাকে না। তাই বুলিং একবার করলেও অপরাধ।

নারীবাদী কার্যক্রম সবচেয়ে বেশী দেখা যায় বাসের মধ্যে। মহিলাদের জন্য কোন সংরক্ষিত সিট কেন থাকবে ? প্রতিবন্ধী ছাড়া কারোর জন্যই সংরক্ষিত সিট থাকা উচিত না। আর যদি কারোর কোলে শিশু থাকে তখন তার জন্য সংরক্ষিত সিট রাখা যায়। শিশু শুধু মায়ের কোলে থাকে না, বাবার কোলেও থাকে।
নারীবাদ এটা বলে না যে নারী-পুরুষ সমান শক্তিশালী, তাই তাদের অধিকার সমান হওয়া উচিত। নারীবাদ বলে - যেহেতু নারীরা অপেক্ষাকৃত দুর্বল তাই তারা পুরুষের চেয়ে বেশী অধিকার deserve করে।
সেদিন আমি সিট ছেড়ে উঠে যাবার পর সিটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণীতে পড়া স্কুল বালককে বসতে না দিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েকে ডেকে এনে বাসানোর মানে কি ? মানে এটাই যে - নারীদের দুর্বল ভাবা এবং ছেলেদের চেয়ে বেশী সুবিধা দেয়া।
এটা অন্যায়। ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের বিন্দুমাত্রও বেশী সুবিধা, বেশী অধিকার দেয়া যাবে না। কেবলমাত্র যৌন হয়রানি ছাড়া অন্য কোন কারণে, মৌখিক ঝগড়ার জের ধরে কোন মেয়ে কোন ছেলের গায়ে হাত তুলতে পারবে না বা চড় থাপ্পড় মারতে পারবে না। কথার জবাব কথা দিয়েই দিতে হবে। আর যদি কোন মেয়ে কোন ছেলেকে চড় মেরেই বসে, তবে ছেলেকেও সুযোগ দিতে হবে। মেয়েটাকে চড় মারার সুযোগ। তবেই না সম-অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
সাধে কি আমি নারীবাদের বিরোধীতা করি ? উপযুক্ত কারণ আছে বলেই বিরোধীতা করি। নারীদেরও নারীবাদের বিরোধীতা করা উচিত। পুরুষেরা পৌরষত্ব ছাড়ুন, নারীরা নারীত্ব ছাড়ুন। আসুন, সবাই মিলে মানুষ হই।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:০৭
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×