এই কিছুদিন আগেও আমি মিররলেস ক্যামেরাকে ডিসিমিস করে দিয়েছিলাম এই বলে যে এটা শ্রেফ একটা টেকনোলজী স্টান্ট যা কিনা ব্যাবসায়ে নতুন মাত্রা আনার ধান্ধা। আমি ব্যাক্তিগতভাবে এটা এখনও বিশ্বাস করি। তারপরও দেখা যাচ্ছে প্রো-ফটোগ্রাফাররা বেশ ভালোমত মিররলেসের দিকে ঝুঁকছেন এবং এই পরিবর্তন পজিটিভলি নিয়েছে যা কিনা আমার কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয় নি। (প্রশ্ন হল, আমি কোন হনূ রে?)
অবশ্যই মিররলেস ক্যামেরার দাম ডিএসএলআর থেকে সস্তা হওয়া উচিত।
কিন্তু, না। প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডগুলো যেমন Nikon, Fuji, Sony & Canon, এদের সবার মিররলেস মডেলগুলো ডিএসএলআর এর তুলনায় বেশ দামী। তাছাড়া আরেকটা বড় সীমাবদ্ধতা হল মিররলেস ক্যামেরায় ডিএসএলআরের লেন্স ফিট হয় না, মানে এই দাঁড়ালো আপনি যদি মিররলেসে আপগ্রেড করতে চান আপনার বর্তমান ডিএসএলআরের এতগুলো লেন্স মিররলেসের সাথে কাজ করবেনা। বিষয়টা কেমন না? মিররলেস বানাতে গিয়ে দেখা গেলো নীশ্ (Niche) ব্র্যাণ্ডগুলো মিররলেস ক্যামেরা সিস্টেমের জন্য বিশেষ মাউন্ট বানিয়েছে যা তাদের গতাণুগতিক ফিল্ম বা DSLR ক্যামেরা লেন্স মাউন্ট এর তুলনায় ভিন্ন। নিকন SLR এর বয়স ৬৫ আর ক্যানন SLR এর বয়স ৩৭। Nikon এর লিজেণ্ডারি F মাউন্ট আর Canon এর EF মাউন্ট এর নাম ছিল ফটোগ্রাফারদের মুখে মুখে। যারা গত কুড়ি/পঁচিশ বছর ধরে এই ব্র্যান্ডগুলোর লেন্স ব্যাবহার করে আসছে তাদের কি হবে? হয়তো সেই কারনে Canon আর Nikon দয়া করে লেন্স মাউন্ট এ্যাডাপটার বানিয়েছে যাতে করে তাদের আগের লেন্সগুলো ব্যাবহার করতে পারে (Canon এর জন্য EOS-M এবং Nikon এর জন্য FTZ মাউন্ট এ্যাডাপটার) ।
এই লেন্স মাউন্ট এ্যাডাপটারের দাম প্রায় চৌদ্দ থেকে আটাশ হাজার টাকা (১২০ - ২০০ পাউন্ড)। তথাপি, দুনিয়ার সব হিসেব নিকেশ ছাপিয়ে ডিজিটাল/মিররলেস ক্যামেরার সর্বোচ্চ মার্কেট শেয়ার আপেক্ষাকৃত কম বয়েসী ক্যানন এর। আমি গরীব মানুষ নিকন দিয়া কাম চালাই।
কেন আমি মিররলেস মডেলগুলোকে ডিসমিস করে দিয়েছিলাম? সেটা বলতে গেলে কিছু ইতিহাস আর টেকনিক্যাল বিষয় বলতে হবে যা হয়তো আপনাদের কাছে বোরিং মনে হবে।
SLR, DSLR এবং MIRRORLESS ক্যামেরা:-
সিংগেল লেন্স রিফ্লেক্স (SLR) হচ্ছে, ক্যামেরার বডিতে একটা আয়না এবং প্রিজম থাকে যেখানে আয়না লেন্স দিয়ে যা দেখে সেটা প্রিজমের প্রতিফলনের (রিফ্লেকশন) মাধ্যমে ভিউফাইন্ডারে পাঠায়। ফটোগ্রাফাররা ভিউফাইন্ডারে যা দেখে সেটাই ছবিতে আসে। ক্যামেরার বডিতে আছে শাটার, ছবি তোলার সময় ‘ক্লিক’ শব্দে ‘অতিদ্রুত’ যে কালো পর্দা সরে গিয়ে ফিল্মে ছবি পাঠিয়ে সাথে সাথে সেই পর্দাটি আগের যায়গায় ফিরে আসে সেটাই শাটার। ধরুন আপনি শাটারস্পীড সেট করলেন ১/৫০০০, তার মানে এক সেকেন্ডের পাঁচ হাজার ভাগের এক ভাগ সময়ের জন্য শাটার খুলে বন্ধ হয়ে যাবে। ভাবা যায় কত দ্রুত? এ্যাপারচার হচ্ছে মানুষের চোখের আইরিসের মত আরেকটা পর্দা যা থাকে লেন্সে। এটা মাপা হয় ‘f’ নাম্বার দিয়ে। ‘f’ নাম্বার যত কম হবে ফিল্মে আলো তত বেশী ঢুকবে, ‘f’ নাম্বার যত বেশী হবে ফিল্মে আলো তত কম ঢুকবে। SLR টেকনোলজী বহু পুরোনো (১৯৫২ সাল থেকে) এবং সেটা গতানুগতিক ফিল্ম ক্যামেরায় বহু বছর ধরে ব্যাবহৃত হয়ে এসেছে। ফিল্ম ক্যামেরায় ISO (or ASA) সীমাবদ্ধ ছিলো ফিল্মের উপর, অর্থাৎ ফিল্ম কেনার সময় ISO100 film, ISO 400 film (ইত্যাদি) আলাদাভাবে কিনতে হত। প্রয়োজনমত শাটারস্পীড এবং এ্যাপারচার নাম্বার ফটোগ্রাফার সেট করে ছবি তুলতো । একসময় প্রযুক্তির উন্নতি হয়, সব অটোমেটিক হয়ে যায়। সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। FPS বা ফ্রেমস্ পার সেকেণ্ড বলতে বোঝায় প্রতি সেকেনণ্ডে কয়টা ছবি ওঠে। প্রফেশনাল ডিএসএলআর ক্যামেরায় স্পোর্টস মোডে সেকেণ্ডে ১৪ টা ছবি ওঠাতে পারে। অন্যদিকে প্রফেশনাল মিররলেস ক্যামেরায় স্পোর্টস মোডে সেকেণ্ডে ৬০ টা ছবি ওঠাতে পারে। হাই পারফরমেন্স ডিজিটাল এ্যাকশন ভিডিওক্যাম 1000FPS এর বেশী বেগেও ভিডিও রেকর্ড করতে পারে (5K ActionCam)।
SLR ক্যামেরায় ফিল্ম উঠে গিয়ে যখন সেন্সর বসে এবং ফিল্মের বদলে সেন্সরের মাধ্যমে মেমরী কার্ডে ছবি রেকর্ড হয় সেটা হয়ে যায় ডিজিটাল এসএলআর বা আজকের DSLR. (তখন কিন্তু লেন্স মাউন্ট পরিবর্তন করার দরকার হয় নি।) ফটোগ্রাফার এখন ইচ্ছামত ISO সেট করতে পারে যেটা ফিল্ম ক্যামেরায় সম্ভব হতনা। ডিজিটাল ক্যামেরায় আগের আমলের সেলুলয়েড ফিল্মের বদলে বসিয়ে দেওয়া হয় বিশেষ সেন্সর যেখানে ছবিগুলো বার্ণ হয়, তারপর সেখান থেকে শক্তিশালী কম্পিউটার প্রসেসর তাৎক্ষনাত ফটোগ্রাফারকে রেজাল্ট দেয়। অর্থাৎ ছবিটা মেমরী কার্ডে সেইভ হয় যেখন থেকে সাথে সাথে দেখতে পারি। অথচ ফিল্ম ক্যামেরায় সেটা ছিলো স্বপ্নের চেয়েও অবাস্তব কল্পনা।
ফিরে আসি মিররলেসে...
মিররলেস ক্যামেরার ভিউফাইন্ডার অপটিক্যাল নয়, অর্থাৎ SLR ক্যামেরার মত প্রিজম না থাকায় খালি চোখে ভিউফাইন্ডারে কিছু দেখা সম্ভব নয় বিধায় সেখানে বসানো হয়েছে ডিজিটাল ভিউফাইন্ডার যা কিনা স্ফটিকস্বচ্ছ ছোট অর্গানিক এল.ই.ডি. স্ক্রীন বা OLED। দুটো পরিপূর্ন ইঞ্জিন DSLR ক্যামেরা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। শাটার ইউনিট এবং এসএলআর (Mirror & Prism) ইউনিট।
তাহলে কি দাঁড়ালো? অত্যন্ত দামী দুই সেট যন্ত্র সরিয়ে দিয়ে বিশাল অংকের আর্থিক সাশ্রয় করলো অথচ দাম কমালোনা (বরং বাড়লো)। আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, DSLR ছাড়া অন্য যে কোন ডিজিটাল ক্যামেরা (Point and shoot cameras) মানেই মিররলেস ক্যামেরা। গতানুগতিক (পয়েন্ট এণ্ড শুট) ডিজিটাল ক্যামেরায় শাটার, মিরর এবং প্রিজম থাকার প্রশ্নই ওঠেনা। সুতরাং মিররলেস ক্যামেরা এটা কোন বিশেষ বা নতুন টেকনোলজি নয়। তাই আমি একে বিজনেস স্টান্ট ছাড়া অন্যকিছু ভাবিনি। কিন্তু এটাও অস্বীকার করতে পারছিনা যে মিররলেসের সেনসর, প্রসেসর এবং OLED ভিউফাইন্ডার অত্যাধুনিক যার প্রতিটি ইউনিট প্রিমিয়াম এবং রিফাইনড্ যাদের সস্তা হবার সুযোগ নেই। দুর্দান্ত পারফরম্যান্স তার উপর ওজন অর্ধেকেরও বেশী নেমে যাওয়ায় প্রোফেশনালেরা হু হু করে মিররলেসের দিকে ঝুঁকছে।
তারপরও, মিররলেস ক্যামেরা সাইজে ছোট, ওজনে কম কিন্তু দাম এত বেশী কেন? সহজ উত্তর হল,
১. রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট, এই R&D’র পেছনে বড় বড় কোম্পানীগুলো যে পরিমান টাকা পয়সা ঢেলেছে সেটা দিয়ে প্রিজম, শাটার ইউনিটের পয়সা বাঁচিয়েও কুলোয় নি। সুতরাং মিররলেস ক্যামেরা সাশ্রয়ী দামে পেতে হলে লম্বা একটা সময় অপেক্ষা করতে হবে বৈকি। সমস্যা হল, অপেক্ষা করার টাইম কই?

২. ডিজিটাল ভিউফাইণ্ডার:- DSLR ক্যামেরায় থাকে অপটিকাল ভিউফাইণ্ডার (OVF) অন্যদিকে মিররলেসে থাকে ডিজিটাল ভিউফাইণ্ডার (DVF)। এই ডিজিটাল ভিউফাইণ্ডার গতাণুগতিক ডিএসএলআর ক্যামেরার মত প্রিজমের মাধ্যমে সরাসরি সাবজেক্টকে দেখায় না। ক্যামেরার লেন্সের মাধ্যমে যা দেখা যায় সেটাকে প্রসেস করে ডিজিটাল ভিউফাইণ্ডার (OLED DVF)-এ পাঠায়। এর মাধ্যমে ফটোগ্রাফার (বা ক্যামেরাপারসন) ছবি তোলার সময় বুঝতে পারে ছবি বা ভিডিওর আউটপুট কেমন হবে। অর্থাৎ ছবি তোলার সময় সেটিংএ টুইক করতে পারে।
আবারও বলছি DSLR এবং Mirrorless ক্যামেরার ক্ষেত্রে আমার ভাবনা একান্ত ব্যাক্তিগত। আমার ফটোগ্রাফী ফিল্ম ক্যামেরা দিয়ে শুরু সেই স্কুল জীবন থেকে। ছত্রিশ শটের কোডাক, আগফা বা ফুজি ফিল্ম দিয়ে ইয়াশিকা, নিকন, ক্যানন ইত্যাদি ফিল্ম ক্যামেরা দিয়ে কত ছবি তুলেছি। ক্যামেরা থেকে ফিল্ম বের করে ডেভেলপ করতে হত, তারপর প্রিন্ট। তখন প্রায়শ: মনে হত আচ্ছা এমন যদি হত, ছবি তুললাম আর সাথে সাথে দেখলাম। সেই স্বপ্নও পুরন হল ডিজিটাল ক্যামেরা আসার পর। এমনও হতে পারে যেহেতু film SLR আর Pro DSLR ইউজার আমি, এখন Mirrorless দেখে জেলাস। আবার এটাও অস্বীকার করতে পারিনা যে দলে দলে প্রফেশনালরা Mirrorless এর দিকে ঝুঁকছে।
DSLR vs MIRRORLESS পর্যালোচনা:-
অনেকে বলছে ডিএসএলআরের দিন শেষ, ওজনে হাল্কা অথচ এ্যাডভান্সড টেকনোলজীর ছোটখাট মিররলেস ক্যামেরা হচ্ছে আগামীর ক্যামেরা যা ভবিষ্যতকে রিপ্রেজেন্ট করে। OLED ভিউফাইন্ডার হওয়ায় যা দেখা যায় প্রায় সেই কোয়ালিটির ছবিই রেকর্ড হয়। অন্যদিকে অনেকে বলছেন মিররলেসের বডি সাইজে ছোট, গ্রিপ স্বাচ্ছন্দ নয় তাই ধরে আরাম পাওয়া যায় না। ব্যাটারী লাইফ অনেক বেশী হবার কথা অথচ DSLR এর তুলনায় অনেক কম (আমার মিররলেস ক্যামেরার ক্ষেত্রে একথা সত্য নয়)। প্রো ফটোগ্রাফাররা অপটিকাল ভিউফাইন্ডার পছন্দ করেন কারন কাঁচ-আয়নার মাধ্যমে অরিজিনাল সাবজেক্ট দেখা যায়। যা ন্যাচারাল এবং প্রায় খালি চোখে দেখার মত।
DSLR ক্যামেরাগুলোর প্রচুর মডেল আছে, আর আছে প্রচুর লেন্স চয়েস। অন্যদিকে Mirrorless ক্যামেরায় মডেল/লেন্স এখনো সীমিত। ইতিমধ্যে কিছু ব্র্যান্ড যেমন Fuji আর Nikon কিছু ক্লাসিক মডেল বাজারে এনেছে যেগুলো দেখতে এবং হ্যান্ডলিং পুরোনো দিনের SLR ক্যামেরার মত।
DSLR vs MIRRORLESS সুবিধা/অসুবিধা:-
সুবিধা বা অসুবিধা এখানে মূল বিষয় নয়। পার্থক্য হচ্ছে আকৃতিতে আর টেকনলজিতে। হয়তো এমন হতে পারে আপনি নিকন ইউজার, সাথে অনেকগুলো নিকন-ফিট লেন্স আছে। এখন ক্যানন, সনি বা ফুজিতে সুইচ করতে চাচ্ছেন। তখন দেখা গেলো বাজেট একটা বড় ইস্যূ।
প্রফেশনালদের হয়েছে মহা জ্বালা। মিররলেস বা ডিএসএলআর যেটাতেই যান সেখানে ভিন্ন ভিন্ন লেন্স ইউজের কথা মাথায় রাখতে হয়। যথেষ্ঠ বাজেট থাকলে অবশ্য অন্য কথা। এত কিছুর পরও দাঁতে দাঁত চেপে স্বীকার করতে হয় মিররলেসের পারফরম্যান্স দুর্দান্ত। তাছাড়া DSLR-এর প্রোডাকশন আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে আসছে। একদিন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে তবে সেটা কালই হবে তা নয়।
বাস্তব সত্য হচ্ছে DSLR বা Mirrorless উভয়েরই পারফরম্যান্স দুর্দান্ত। অর্থাৎ আপনার স্বপ্নের ছবি এরা আপনাকে তুলে দেবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারেন। কারন ছবি তুলছেন আপনি।
বাংলাদেশের ফটোগ্রাফাররা নিকন আর ক্যাননের দুর্দান্ত ফ্যান। দেশে এই দুই ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের DSLR ক্যামেরার জয়জয়কার, তবে নতুন মডেলের DSLR খুব একটা আসছেনা কারন নীশ্ ব্র্যান্ডগুলো নতুন কোন মডেল আনছেনা। Sony সারা বিশ্বের প্রফেশনালদের মধ্যে দারুন সাড়া জাগিয়ে ফটোগ্রাফি জগতে জেঁকে বসেছে এবং কাস্টমাররাও খুশী। কিন্তু Mirrorless ক্যামেরা এখনও আমাদের দেশের শো রুমগুলোতে সেভাবে দেখা যাচ্ছেনা, যদিও প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডগুলো নতুন নতুন মডেলের Mirrorless বাজারে নিয়ে আসছে। আশা করছি দেশের শো রুমগুলোতেও আসবে সামনে। প্রশ্ন হল, দাম কত করে পড়বে?
২০১৮ সাল থেকে মিররলেস বিপ্লব শুরু। নিকনের Z মডেল, ক্যাননের EOS R মডেল, সনির Alpha, ফুজিফিল্মের X মডেল, প্যানাসনিকের S মডেল এবং নতুন আঙ্গিকে অলিম্পাসের OM-D মডেল, এরা প্রত্যেকেই বাজারে মোটামুটি ভালোভাবে বিরাজমান। প্রশ্ন হচ্ছে কোনটার দাম কাষ্টমারদের কাছে কতখানি স্বাশ্রয়ী। একজন সিরিয়াস ফটোগ্রাফার তিল লক্ষ টাকা দিয়ে মিররলেস ক্যামেরা কিনতে কার্পণ্য করবেন না যদি তিনি বিশ্বাস করেন এটাই ‘সেই’ ক্যামেরা, অন্যদিকে সেই একই ফটোগ্রাফার পঞ্চাশ হাজার টাকায়ও মিররলেস কিনবেন না যদিনা সেটা তাঁর কাছে যথার্থ মনে না হয়।
যারা ফুল ফ্রেম ফটোগ্রাফীর ব্যাপারে সিরিয়াস তারা অবশ্যই টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশনস্ যাচাই করে নেবেন। এ যাবত পর্যন্ত যতগুলো মিররলেস ক্যামেরা অপারেট করেছি সবগুলোতে কম আলোর (low ligth) ছবিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখেছি।
যারা ফটোগ্রাফীতে নতুন এবং প্রো লেভেলের ফটোগ্রাফী করতে আগ্রহী তাদের বলবো মিররলেস এর ব্যাপারে চিন্তা করতে কারন DSLR ধীরে ধীরে সীমিত হয়ে আসছে। নতুন ফটোগ্রাফার যাদের মিররলেসে আপত্তি নেই তারা এন্ট্রি লেভেল মডেল যেমন নিকনের Z50 বা ক্যানন এর EOS R100 মডেল দিয়ে শুরু করতে পারেন। (আমার কথা পাত্তা দেবেন না, আপনার বিবেচনাই হোক চুড়ান্ত।)
মোদ্দা কথা মিররলেস ক্যামেরার সাইজ ছোটখাট এবং ওজনে হাল্কা হওয়াতে প্রচুর ফটোগ্রাফার ডিএসএলআর থেকে মিররলেসে সুইচ করেছে। অবশ্যই মিররলেস ক্যামেরা বহুক্ষেত্রে ডিএসএলআর ক্যামেরার তুলনায় ভালো রেজাল্ট দিতে সক্ষম এবং এতে কিছু বাড়তি সুবিধাও আছে। তারপরও, নতুন থেকে শুরু করে প্রো লেভেলের ফটোগ্রাফাররা এখনও ভাবছে কেন তারা এক্সপেনসিভ মিররলেস মডেল কিনতে যাবে যেখানে ডিএসএলআর ক্যামেরায় রয়েছে প্রচুর ভ্যারাইটি এবং দামেও মিররলেস থেকে অনেক সস্তা।
অল্পদামী একটা ডিএসএলআর দিয়ে প্রথমে হাঁটি হাঁটি পা পা করে পরে সিরিয়াস ফটোগ্রাফির দিকে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয় কি? সেই সিদ্ধান্তও আপনার। আমার নয়।
ভালো ছবি দামী ক্যামেরায় হয় না, যে তোলে তাকে দিয়ে হয়। - গ্রীক দার্শনিক ঈশপ (খ্রিস্টপূর্ব ৬২০-৫৬৪)
ভালো থাকুন, সুখী হোন। হ্যাপী ফটোগ্রাফী।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০০