১৬ ডিসেম্বর বাঙালির জাতীয় জীবনে এক অবিস্মরণীয় আনন্দ-বেদনায় শিহরিত উজ্জ্বল দিন।বাঙালিরা দীর্ঘ নয় মাস পাক হানাদার বাহিনীর সাথে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে বিজয় লাভ করেছে। এ বিজয় এমনে-এমনি আসেনি। এ বিজয় অর্জন করতে গিয়ে ত্রিশ লক্ষ শহিদের আত্মদান, দু লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত, অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা বিসর্জন করতে হয়েছে।
আমাদের স্বাধীন ভূ-খণ্ড বাংলাদেশকে বিশ্বের মানচিত্রে ঠাঁই করতে ত্রিশ লক্ষ শহীদের প্রাণ বিসর্জন করতে হয়েছে।অজস্র মুক্তিযোদ্ধাদের পঙ্গু হতে হয়েছে,অনেক ত্যাগ -তিতিক্ষা শিকার করতে হয়েছে।আজ আমরা বিজয় দিবসের নামে ১৬ ডিসেম্বর কী করছি? আজ আমরা বিজয় দিবসে গানবাজনা করছি,স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা করছি।অথচ গানবাজনা ও কোটি কোটি টাকার ফুল শহীদদের আত্মার তৃপ্তি দিতে পারেনি। এমনকি, দেশ ও জাতির কোন উন্নতি-অগ্রগতি হয়নি।তাহলে কেন আমরা এসব তামশা করছি? প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস পালন করা আমাদের কর্তব্য। কেননা,যেসব শহীদ জীবনের বিনিময়ে প্রিয় স্বদেশকে পরাধীনতার শিকল থেকে মুক্ত করেছেন,আমাদেরকে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড উপহার দিয়েছেন, তাদের কাছে আমরা চির ঋণী। তাদেরকে আমাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে হবে।তবে,গানবাজনা ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে নয়।বরং আমাদের উচিত, প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর ওয়াজ মাহফিল, কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামী রীতিনীতির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবস পালন করা।বিজয় দিবসে ফুলের প্রতি কোটি কোটি টাকা ব্যয় না করে,সে টাকা অসহায়,পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যয় করা উত্তম।বাংলাদেশে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা তিন বেলা তিন মোটা ভাত খেতে পারে নি,পেটের ক্ষুধায় মিটানোর জন্য ভিক্ষার থলে হাতে নিয়ে রাস্তায়-রাস্তায় ঘুরে।যা বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের চরম অপমান।আমরা প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর ফুলের প্রতি যে পরিমাণ টাকা ব্যয় করি,এই টাকা যদি অসহায়, পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি ব্যয় করি।তবে,একদিকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা শান্তি পাবে,অন্যদিকে দেশ ও জাতির উন্নয়ন অগ্রগতি হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫১