( লেখিকা অবিবাহিত। সুতরাং অভিজ্ঞতার ব্যাপারে প্রশ্ন করা নিষেধ। এটি সম্পূর্ণ জরিপ ভিত্তিক লেখা। )
.
পুরুষের ক্ষেত্রে
ব্যাচেলর থাকতে প্রতি পদে পদে বউয়ের অভাব বোধ হয়। যখন একটানা আলুভর্তা কিংবা ডিমভাজি কিংবা মেসের বুয়ার খেতাব প্রাপ্ত রান্না খেতে খেতে জিহ্বায় আস্তর পড়ে যায় তখন যুবকের দিবাস্বপ্নে ভাসে একজন সুশ্রী রমণী, রান্না করা চমৎকার কিছু সুখাদ্য সঙ্গে মিষ্টি হাসি। তখন বাজার করার ঘোর দুঃস্বপ্ন মন থেকে হাজার মাইল দূরে থাকে। যখন যুবকের সাথে বিবাহ নামক ক্রিয়ার যোগ হয় তখন সেই দুঃস্বপ্নেরা প্রতিক্রিয়া হয়ে কানের চারিপাশে অসহ্য গোলাযোগ সৃষ্টি করে।
.
ময়লা কাপড়গুলো নানাবিধ উপায়ে পড়ার পর বাধ্য হয়ে একসময় যখন ধুইতে হয়, কিংবা বিনা মশারিতে ঘুমিয়ে মশার উপর্যুপুরি কামড় সহ্যের সীমা লঙ্ঘন করে তখন বউ চাইয়া বাপের নিকট চিঠি লিখতে মন চায়। বউ পাইবার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই কাজগুলি একসময় তাকেই করিতে হবে আগে জানলে মশার কামড়েই বরং যুবকের সুখনিদ্রা হইত।
.
আত্মীয়স্বজনের শপিং ব্যাগ বহন করা কিংবা ভাব লইবার জন্য যুবক যখন শপিং মলে ঘোরাঘুরি করে সেই মুহূর্তে কোন এক মায়াবিনী তার সামনে পড়ে যায়। কাজল টানা চোখ ঘুরিয়ে মিষ্টি হাসি হেসে সে তার বরের সঙ্গে হেঁটে যায়। যুবকের বুকে তখন বউয়ের হাহাকার। দিবাস্বপ্নে সে এক মায়াবিনীর কথাই ভাবে। যে তার হাত ধরে ঘোরাঘুরি করবে। মিষ্টি হাসি হেসে নানান বায়না করবে। দিবাস্বপ্নের ঘোরে সেই মুহূর্তে মায়াবিনীর পাশের অসহায় লোকটি যুবকের চোখে পড়ে না। অতঃপর যুবকের আকুল প্রার্থনায় বিরক্ত হইয়া সৃষ্টিকর্তা তার বিবাহ ক্রিয়া ঘটাইয়া দেন। নে যুবক, ভালো থাকিতে চাইলি না এইবার বোঝ মজা। ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে যুবক তখন শপিং আতঙ্কে ভুগিয়া মরে।
.
এইভাবে প্রতি পদে পদে যুবক বউ পাইবার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করে।
মেয়েদের ক্ষেত্রে
.
বর হিসেবে মেয়েরা রাজপুত্র ব্যতীত কিছু কল্পনাই করতে পারে না। যেই রাজপুত্র স্বভাবের দিক থেকে হবে কিছুটা আলাদীনের দৈত্য টাইপ। যাকে বলা মাত্র সমস্ত ইচ্ছা পূরণ হবে। কল্পনাবিলাসী মেয়েরা কল্পনাই করতে পারে না তার সেই সপ্নের দৈত্য থুক্কু রাজপুত্র একসময় মনিমুক্তার বদলে বাজারের শ্রেষ্ঠ পচা মাছ এনে হাজির করবে। ভাবতেই পারেনা শপিঙ্গের মত আনন্দদায়ক ব্যাপারে তার রাজ্যের অনীহা থাকবে। ভাবতেই পারেনা তাকে আলু বললে সে পটল নিয়ে হাজির হবে। ভাবতেই পারে না সেই রাজপুত্র যুদ্ধ দূরে থাক নিজে নিজে চাও বানিয়ে খেতে পারবে না।
.
রূপকথায় রাজকন্যা পাইবার জন্য রাজপুত্রকে যুদ্ধ জয় করতে হইত। বাস্তবে একজন অপদার্থ যুবককে রাজপুত্র হিসেবে তৈয়ার করার জন্য মেয়েদের বিষম খাটিতে হয়। কিন্তু যুবক রাজপুত্রতো হয়ই না বরং দিন দিন বিবাহ ক্রিয়ার প্রতক্রিয়ায় আরও বেশি অপদার্থ হইতে থাকে।
.
বিঃ দ্রঃ এটি একটি সার্বজনীন লেখা। ঘটনাচক্রে কারো সঙ্গে মিলে গেলে লেখক কিছু জানবেন না। তবে যুবক যুবতীরা হতাশ হইবেন না। সব ঘটনারই ব্যতিক্রম আছে। ভাগ্য সহায় হইলে আপনারা ব্যতিক্রমের কবলে পড়ে যেতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২১