নিজামী দোষ স্বীকার করলেই কি আর না করলেই কি??
যেহেতু আমরা জানি তারা চিহ্নিত রাজাকার, তাহলে আর দোষ স্বীকার নিয়ে এত উল্লাস কেনো??
নারায়নগঞ্জের নৃশংস সাত খুনের প্রধান আসামী ঠান্ডা মাথার খুনি নুর হোসেন আদালতে তার দোষ স্বীকার করলে কি এতটা হৈচৈ কিংবা উল্লাস হবে?? কখনোইনা। কারন সে যে দোষী এটা দিবালোকের মত পরিষ্কার এবং প্রমানিত। সে দোষ স্বীকার করলেও কিছু যায় আসেনা, না করলেও কিছু যায় আসে না।
কিন্তু নিজামীর ক্ষেত্রে এত উল্লাসকে আমরা কি ধরে নিবো?? তার অপরাধ কি অতটা পরিষ্কার নয়?? যে কারনে স্বীকার করায় বিরোধীপক্ষের এত উল্লাস??
সুনানিতে নিজামীর প্রধান আইনজীবি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘আমি বলেছি, নিজামীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ এনেছে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এগুলো সব শেখানো সাক্ষী। তারপরও যদি এসব সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নিজামীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তাহলে তাঁকে যেন চরম দণ্ড দেওয়া না হয়। বয়স ও ভালো আচরণ বিবেচনা করে যেন তাঁকে চরম দণ্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। (প্রথম আলো)
এই কথার ভিত্তিতে এটর্নি সাহেব সাংবাদিকদেরকে বললেন, ‘ওনাদের সাবমিশনে আমি যা বুঝেছি, তাতে আমার মনে হলো, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তাদের শীর্ষ আইনজীবীরা এই প্রথম তাঁদের অভিযুক্ত একজন নেতা যে অপরাধী, তা তারা স্বীকার করে নিলেন এবং শুধু মৃত্যুদণ্ডের হাত থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য আবেদন করলেন।’ (প্রথম আলো)
আইন বা বিচারের ক্ষেত্রে ‘যা বুঝেছি’ ‘যা মনে হলো’ বলে কি কোনো শব্দ আছে?? এখানে সব হবে চাক্ষুষ এবং দলিলভিত্তিক। তিনি ইচ্ছেকৃত সম্পুর্ণ মিথ্যাভাবে দোষ স্বীকারের কথা প্রচার করে আদালত এবং এই বিচারকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
নিজামীর দোষ স্বীকারের ড্রামা করতে গিয়ে যেনো রাষ্ট্রকর্তৃক বিচারপ্রক্রিয়ার দোষই স্বীকার করা হলো!!!
কারন আমি মনেকরি এসব মিথ্যা প্রচারণা কেবল তাদের ক্ষেত্রেই চালানো হয়, যাদের অপরাধ সম্পর্কে রাষ্ট্রের কাছে তেমন যুতসই কোনো প্রমাণ নেই, তাই কোনোভাবে তার মুখ থেকে স্বীকার করাতে পারলেই প্রমানের আর প্রয়োজন পড়বে না। দেশবাসী এবং বিশ্বকেও বুঝ দেয়া যাবে।
যুদ্ধাপরাধ বিচার নিয়ে সরকারের এসব কার্যকলাপ সত্যি সত্যি আমাদের মত তরুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছে। আমাদেরকে অন্যকিছু ভাবতে বাধ্য করে।
সকল প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি হোক আমরা অবশ্যই চাই। কিন্তু সেটা হতে হবে সুস্পষ্ট প্রমানের ভিত্তিতে।
মনে রাখতে হবে বিচার কিন্তু যুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বের জন্য হচ্ছেনা। বিচার হচ্ছে যুদ্ধের সময়কার মানবতাবিরোধী অপরাধ যেমন খুন ধর্ষন লুণ্টনের।
এজন্য শুধুই বিরোধীতার কারনে কাউকে মিথ্যাভাবে ফাঁসিতে ঝুলালে ইতিহাস কখনোই ক্ষমা করবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩২