ঢাকা শহরে মানুষ হতে এসে উনমানুষ হলাম। আচার আচরণে অধঃপতন, সামজিকতায় প্রতিবন্ধী, বিচরনে সীমাবদ্ধ হয়ে গেলাম। প্রতিবেশি খেয়ে আছে না খেয়ে আছে জানিনা। নিজের বাড়িতে যখন জন্মদিনের তাণ্ডব নৃত্য পাশের বাসায় তখন মুত্যুর আহাজারী। ছুটছি তো ছুটছি, শ্বাস নেয়ার সময় নাই, আসে পাশে দেখার ইচ্ছা নাই। সুখ, দুঃখের স্বপ্ন বিলাস কেন্দ্রিক। মায়া মমতা চার দেয়ালে আবদ্ধ।
ত্রিমাত্রিক বিচরণের সীমানা সীমাবদ্ধ তাই ভার্চুয়াল জগতে সীমাহীন বিচরণ। ভার্চুয়াল নেশা ভঙ্গ হয়ে যখন দেখি চারদেয়ালে আবদ্ধ তখন দম বন্ধ হয়ে যায়। চেনা মানুষের মাঝে একটু স্বস্তি খুঁজে ফিরি। বৃথাই সে আয়োজন, সব চেনার গভীরেই অচেনা নগ্নের বিচরণ, রাক্ষসের বসবাস। দিক বিদিক ছুটে একটু দম নেয়ারও জো নাই। উত্তরে উত্তর পাড়া উন মানুষের প্রবেশ নিষেধ। দক্ষিণে দেশ দরদীদের আবাস স্থল প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। পশ্চিমে হাই সিকিউরিটি জোন সন্ত্রস্ত পদচারণা। পূর্বে যন্ত্রদানবের কর্কশ ধ্বনি।
অলিতে গলিতে সাইনবোর্ড "প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত, গার্ডকে আপনার পরিচয় দিন"। কি পরিচয় দিব? আমি উনমানুষ!!!! আমাকে একটু আপনাদের খাঁচায় ঢুকতে দিন!!! নিজের খাঁচায় থেকে থেকে আমি ক্লান্ত, বিষাদ গ্রস্থ!! আসলে আমরা সবাই ক্লান্ত , অবসাদ এবং বিষাদ গ্রন্থ উনমানুষ। তাই সবাই আবদ্ধ যার যার গলিতে , যার যার খাঁচায়। চিড়িয়াখানায় যেমন পশুরা আবদ্ধ থাকে । এক পশু আরেক পশুর কাছে নিরাপদ না। এ শহরে আমরা তেমনি এক শ্রেণীর মানুষ আরেক শ্রেণীর কাছে নিরাপদ না। তাই সবাই আবদ্ধ। কেউ বাষের খাঁচায়, কেউ হরিণের খাঁচায়, কেউ খাঁচায় বন্দী বানরের। নিজেরাই নিজেদের শহরটাকে উনমানুষের বন্দীশালা বানিয়ে ফেলেছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৪:২৫