মা-ছেলের মধুর সম্পর্ক নিয়ে উপলব্ধির ভিন্নতা না থাকলেও বাবা-ছেলের সম্পর্ক নিয়ে একেকজনের উপলব্ধি একেক রকম। কেউ বা বলবেন, ''আমার বাবা কঠিন হৃদয়ের, রাগী, সব সময় শাসনের উপর রাখার চেষ্টা করেন।" আবার কেউবা বলবেন ''মোটেও না, আমার বাবা আমার জীবনের সবচেয়ে কাছের মানুষ। আমি আমার বাবাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি।" যারা দ্বিতীয় মতের পক্ষে তারা সত্যিই অনেক ভাগ্যবান। তবে আমি আজকে বলছি প্রথম মতের বিষয়ে।
আসলে স্বাভাবিকভাবে বাবারা একটু বেশি শাসন করেন। রাগী রাগী কথা বলেন। কিশোর বয়সে সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি করি বাবার কঠোরতা। দুরন্তপনা, দস্যিপনা বাড়ার সাথে সাথে বাবার শাসনের মাত্রাটাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। এছাড়া শিশু কিশোর বয়সে আমাদের নানারকম চাহিদা থাকে। উদ্ভট মর্জি ও থাকে। বাবারা সব সময় সেটা হয়তো পূরণ করতে পারেন না বা করে না। যার ফলে আমাদের রাগ বা জেদ কাজ করে। তারা হয়তো আমাদের ভালোর জন্যই এটা করে থাকেন। কিন্তু এরকম আচরণের মাধ্যমে বাবা ছেলের সম্পর্কের ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়।
সেই দূরত্ব কে কেউ আজীবনেও আর কাছের করে নিতে পারেন না। আবার কেউবা বাবার জীবনের একবারে শেষ পর্যায়ে যেয়ে এই দূরত্বকে কিছুটা ঘোচাতে চান। কিন্তু বাবার প্রতি আমাদের দায়িত্বটা অপূর্ণই থেকে যায়।
বাবা তো আমাদের ভালোর জন্যই করেন, তিনি যদি আমাদের যখন তখন এর সব ইচ্ছা পূরণ করেন, তবে তো আমাদের বখে যেতে আর সময় লাগবে না। দিন দিন চাহিদা বাড়তেই থাকবে। আর সেটা পূরণ করতে না পারার কারণে আমরাই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে বসবো। আবার অপরদিকে আমাদেরও কিশোর বয়সের দুরন্তপনাকে দায়ী করতে পারব? এটাতো একটা স্বাভাবিক পরিস্থিতি। জীবনে হয়তো এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে আমি অন্যায় করেছি কম কিন্তু বাবা বেশি মেরেছে, বেশি রাগ করেছে, বকাঝকা করেছে। ফলে রাগ হওয়াটাই তো স্বাভাবিক ঠিক না? ছোট ছিলাম বলে কি আর আত্মসম্মানবোধ বলতে কিছু নেই নাকি??
তবে এখন অনেকটাই বুঝতে পারি। বাবাদের বকাঝকা, রাগ ইত্যাদি আমার জীবনের ভালোই করেছে। কিন্তু তবুও না কেন যেন বাবার থেকে দূরত্বটা কমিয়ে আনতে পারছি না। আসলে এটা কি লজ্জা নাকি অপমান বোধ নাকি অন্য কিছু???
যদি এ ব্যাপারে কারো সাজেশন থাকে তবে বলবেন প্লিজ।
যাযাকাল্লাহু খাইরান
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০৬