somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেকার মানেই বাতিল নয়!!

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছেলে তখন বেকার হয়নি। বেকার হওয়ার পথে আর কি। জীবনে ঝড়ের ঘনঘটা। পকেটে খুচরো খাচরা মিলিয়ে বোধহয় পঞ্চাশটা টাকা থাকত। বন্ধুতো দুরে থাক। একটা মশাও বসত না গায়ে। পাড়ার অদুরে একটা চিপায় বইসা বিড়ি টানত। মোটা মানিব্যাগওয়ালা বন্ধুরা সাই সাই করে হোন্ডা চালিয়ে ক্রস করার সময় হাল্কা থামাত
- কিরে খবর কি
- আপাতত নাই
- গত সপ্তাহে কক্সবাজার গেছিলাম। তুই তো গেলিনা। যে মজা করছি। মালের উপর শুইয়া ছিলাম দোস্ত
মুচকি হাসত ছেলে। তুই তো গেলিনা? তারে বলাই হয়নাই যাওয়ার কথা। বাজেটে ফিটিং ছিলনা। একসময় এই বন্ধুদের বাজেট টা নিজের থেকে দিয়ে সম্মানজনক পর্যায়ে আনত যে ছেলে,সেদিন তারেই ফাপড়? কত রঙ্গ দেখাইল যে সাই..
ছেলের ইয়ার ফাইনাল একজামের সময়ের ঘটনা। ফরম ফিলাপের লাস্ট ডেট। কিন্তু টাকা নাই। ফোন দিল বন্ধুদের্। একেক জনের এক একটা অজুহাত
- দোস্ত আমার কাছে তো নাই
- এক হাজার!!! এত টাকা কই পামু দোস্ত
সে বন্ধুরাই বিকালে তার সামনে হাজার টাকার ভদকার বোতল খুলল। ছেলে সেদিনও হেসেছিল। ভদকা গিলবার টাকা আছে। কিন্তু বন্ধুর ফর্ম ফিলাপের জন্য দেয়ার মত টাকা নাই ...মাল মানুষের মৌলিক অধিকার
এরপর ছেলে পাশ কইরা করল আরেক পাপ। বেকার মানেই অভিশাপ। সকালটা শুরু হয় মায়ের খোটা শুনে। দিনটা পার হয় চাকরির বিজ্ঞাপনে। এরই মধ্যে বন্ধুরা অনেক এগিয়ে গেছে। পোষ্টে এবং পার্টে। অলটাইম ফর্মাল ড্রেস। ফোন দিল সেইরকম পাওয়ারফুল এক বন্ধুলে। ভাল কোম্পানিতে ভাল জবে
- দোস্ত দেখ না একটা জব
- দোস্ত জব তো দিতে পারি ,কিন্তু বুঝিসই তো দেয়া নেয়ার ব্যাপারটা
- মানে
- ওকে তোর জন্য কনসিডার্। পাচ লাখ দিলেই হইব
ফোনটা রাইখা ধ্যানে বসছিল ছেলে। আজকের এই রিয়াদ না একদিন পাচ টাকার বেনসন দুই টাকা তার থেকে নিয়া মিলাইত। আজ সে রিয়াদের ডিমান্ড পাচ লক্ষ?
এদিকে বন্ধুরা দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে গেল। এস্টাবলিশড টাই টুই পড়া কর্পোরেট ডুডদের পাশে ক্ষেত কুচকানো শার্টের বেকার ছেলেটাকে মানায়না। ওকে মাইনাস কইরা দে। কেমন লাগে? দুরে বইসা সব খবর পাইত ছেলে। জি এফ দের নিয়ে পার্টি থ্রো, সিলেট ভ্রমন। বেকার গ্রুপে সে একলাই রইল
কিন্তু দিন কি পাল্টায় না? পাল্টায়। আল্লাহ যারে মাথা দেয় ,তারে কে ঠেকায়। এক বিখ্যাত কোম্পানির সিইও ঠিকই চিনে নেয় রত্ন। এপোয়েন্টমেন্ট লেটার টা হাতে ধরিয়ে বলে
- বেকার মানেই বাতিল নয়। তুমি জয়েন কর্।
সেদিনের সে বেকার ছেলে আজ এলিয়নে চড়ে। সকালে মা নিজের হাতে ডিমটা তুলে দেয় প্লেটে। সদ্য কুচিভাঙ্গা পিটার ইংল্যান্ডের শার্টটা থেকে লোমানির সুগন্ধ বেরোয়। একদিন ফোন দেয় সে বন্ধু। ভদকার বোতল খুলেছিল যে
-দোস্ত আমার তো বিদেশ যাওয়া দরকার্। ফ্যামিলির অবস্থা খারাপ জানিসই তো। তুই যদি দুই লাখটা টাকা ধার দেস। আমি শোধ করে দেব দোস্ত
ছেলে সেদিনও মুচকি হাসে। সে সন্ধ্যায় দুই লক্ষ টাকার একটা চেক আর একটা শিভাস রিগ্যালের বোতল পৌছে যায় বন্ধুর ঠিকানায়। চিরকুটে ছোট্ট করে লেখা ,বেকার মানেই বাতিল নয়।
আরেকদিন ফোন দেয় সেই হাই পোষ্টের হ্যাডমওয়ালা বন্ধু। ভাগ্যের হেরফেরে দুর্নিতীতে ধরা খেয়ে আজ সে চাকরী হারিয়ে পথের ফকির
- দোস্ত তোর তো অনেক লিঙ্ক দেখ না একটা জব। ছোটখাট হলেই চলবে
- জব তো আছে। তবে বুঝিসি তো দেয়া নেয়ার ব্যাপার্।
- মানে দোস্ত
- আচ্ছা তুই দোস্ত মানুষ। তোর লাইগা কনসিডারেশন। এক কাপ চা খাওয়াইলেই চলবে
ফোনটা কেটে মুচকি হেসে অফিস থেকে বের হয় একদার বেকার ছেলে। দিস ইজ কলড সুইট রিভেঞ্জ...মুখের উপর হাইসা হাইসা থাপ্পড়
দিন সবারই আসে রে পাগলা। বেকার মানেই বাতিল নয়। এই শীত তোমাদের্। এই শীতে তোমরা শহরের কোণায় মাথা নিচু করে বসে থাকা যে ছেলেটাকে গ্যারবেজ ভেবে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছ , আসছে শীতে সে হ্যাডম হবে..
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×