somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরান শরীফ- হাদীস শরীফ সম্পর্কে অজ্ঞরাই শবে-বরাতের বিরোধীতা করে (একটি দলীলভিত্তিক আর্টিকেল) - ২

২০ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শবে বরাতকে কেন্দ্র করে আতশবাজি ও আলোকসজ্জা করা
শবে বরাতে আলোকসজ্জা ও আতশবাজি করা শরীয়ত সম্মত নয়। ইতিহাসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আলোকসজ্জা হচ্ছে গ্রীক ধর্মের একটি ধর্মীয় প্রথা। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে হিন্দু ধর্মের ধর্মীয় প্রথা হিসেবে রূপ লাভ করে, যা শেষ পর্যন্ত দেয়ালী পূজা নামে মশহূর হয়। আলোকসজ্জা সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে মুসলমানদের মধ্যে প্রবেশ করে যা প্রকৃতপক্ষে দ্বীন ইসলামের শেয়ার বা তর্জ-তরীক্বার অন্তর্ভুক্ত নয়। আর আতশবাজিও দ্বীন ইসলামের কোন শেয়ারের অন্তর্ভুক্ত নয়। প্রকৃতপক্ষে আতশবাজিও হিন্দু ধর্মের একটি ধর্মীয় প্রথার অন্তর্ভুক্ত। তাই মুসলমানের জন্য এসব করা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও নাজায়িয। কারণ হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

عن حضرت عبد الله بن عمر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من تشبه بقوم فهو منهم

অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল বা সাদৃশ্য রাখবে তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।” (আহমদ, আবূ দাউদ)

এ প্রসঙ্গে একটি ওয়াক্বিয়া বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, তা হলো হিন্দুস্তানে একজন জবরদস্ত আল্লাহ পাক-উনার ওলী ছিলেন। যিনি ইনতিকালের পর অন্য একজন বুযুর্গ ব্যক্তি উনাকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞেস করেন, “হে আল্লাহ পাক-উনার ওলী, আপনি কেমন আছেন?” আল্লাহ পাক-উনার ওলী জাওয়াবে বলেন, “আপাতত আমি ভালই আছি, কিন্তু আমার উপর দিয়ে এক কঠিন সময় অতিবাহিত হয়েছে, যা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আমার ইনতিকালের পর আমাকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সরাসরি আল্লাহ পাক উনার সম্মুখে পেশ করেন। আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের বলেন, “হে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম! আপনারা উনাকে কেন এখানে নিয়ে এসেছেন”? হযরত ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা বলেন, “আয় আল্লাহ পাক! আমরা উনাকে খাছ বান্দা হিসেবে আপনার সাথে সাক্ষাৎ করানোর জন্য নিয়ে এসেছি।” এটা শুনে আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “উনাকে এখান থেকে নিয়ে যান, উনার হাশর-নশর হিন্দুদের সাথে হওয়া উচিৎ। কেননা তিনি পুজা করেছেন। আল্লাহ পাক উনার ওলী তিনি বলেন, এটা শুনে আমি ভয় পেয়ে গেলাম এবং আমার সমস্ত শরীর ভয়ে কাঁপতে লাগলো। তখন আমি আল্লাহ পাক-উনার নিকট আরজু পেশ করলাম, “আল্লাহ পাক! আমার হাশর-নশর হিন্দুদের সাথে হবে কেন? আমি তো সবসময় আপনার এবং আপনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ফরমাবরদার ছিলাম। কখনো ইচ্ছাকৃত নাফরমানি করিনি এবং কখনো পূজা করিনি আর মন্দিরেও যাইনি।” আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “আপনি সেই দিনের কথা স্মরণ করুন, যেদিন হিন্দুস্তানে হোলি পুজা হচ্ছিলো। আপনার সামনে-পিছনে, ডানে-বামে, উপরে-নীচে সমস্ত গাছ-পালা, তরু-লতা, পশু-পাখী, কীট-পতঙ্গ সবকিছুকে রঙ দেয়া হয়েছিলো। এমতাবস্থায় আপনার সামনে দিয়ে একটি গর্দভ (গাধা) হেঁটে যাচ্ছিলো যাকে রঙ দেয়া হয়নি। তখন আপনি পান চিবাচ্ছিলেন, আপনি সেই গর্দভের গায়ে এক চিপটি পানের রঙ্গীন রস নিক্ষেপ করে বলেছিলেন, “হে গর্দভ! তোমাকে তো কেউ রং দেয়নি এই হোলি পুজার দিনে, আমি তোমাকে রং দিয়ে দিলাম। এটা কি আপনার পুজা করা হয়নি? আপনি কি জানেন না?”

من تشبه بقوم فهو منهم

অর্থ: “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে অর্থাৎ তার হাশর-নশর তাদের সাথে হবে।” কাজেই, “আপনার হাশর-নশর হিন্দুদের সাথে হওয়া উচিৎ।”

যখন আল্লাহ পাক এ কথা বললেন তখন আমি লা-জাওয়াব হয়ে গেলাম এবং ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বললাম, আয় আল্লাহ পাক! আমি এটা বুঝতে পারিনি, আমাকে কেউ বুঝিয়েও দেয়নি। দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। কিছুক্ষণ পর আল্লাহ পাক বললেন, “হ্যাঁ আপনাকে অন্যান্য আমলের কারণে ক্ষমা করা হলো।” কাজেই, মুসলমানদের জন্য শুধু শবে বরাতকেই কেন্দ্র করে নয় বরং কোন অবস্থাতেই আতশবাজি ও আলোকসজ্জা ইত্যাদি বিধর্মী বিজাতীয়দের কোন আমল করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

[দলীলসমূহ - (১) আহমদ, (২) আবূ দাউদ, (৩) বযলুল মাজহূদ, (৪) আউনুল মা’বূদ, (৫) মাছাবাতা বিসসুন্নাহ, (৬) গ্রীক জাতির ইতিহাস, (৭) হিন্দু ধর্মের ইতিহাস ইত্যাদি।]

১ম পর্ব
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×