somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পবিত্র শবে বরাত পালন বিষয়ে সৌদি ওহাবীরা মুসলমানগণের জন্য দলীল নয়; ইসলামী শরীয়তই মুসলমানগণের দলীল ।

২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ৮:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইদানিং সৌদি ওহাবী মৌলভী এবং তাদের খুদ-কুড়া খাওয়া দেশী-বিদেশী উলামায়ে ছু গং পত্র-পত্রিকা মিডিয়াতে ব্যাপক অপপ্রচার করে বলছে, পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কে কোন কিছু উল্লেখ নেই। সৌদি গ্রান্ড মুফতি ও তাদের অনুসরণীয় মুরব্বী গং শবে বরাতের অস্তিত্ব কোথাও খুঁজে পায়নি। নাঊযুবিল্লাহ!


এখন আমরা যদি এদেরকে জিজ্ঞাসা করি, তোমরা রাজতন্ত্র, ছবি তোলা, ভিডিও করা, পবিত্র হারামাইন শরীফাইনে সিসিটিভি লাগানোর তরীকা, সৌদি আরবে হাজার দেড়েক অশ্লীল টিভি চ্যানেল বিস্তারের মওকা, বিধর্মী বিজাতীদের সাথে আন্ত;ধর্ম সম্মেলন করে বন্দুত্ব করার কথা, মুসলমান দেশে বাতিল কাফিরদের ঘাটি বসানোর উদাহরণ ইসলামের কোথায় খুঁজে পেলে- এছাড়া আরো অনেক প্রশ্ন করা যায় যার কোন শরীয়তসম্মত উত্তর তোমরা কস্মিনকালেও দিতে পারবে না। যেহেতু
মুসলমানগণ শবে বরাত পালন করলে রহমত বরকত হাসিল করে হিদায়েত হয়ে যাবে তাই শয়তানের শিং সৌদী ওহাবীদের একটাই ধ্যান খেয়াল কিভাবে মুসলমানগণকে এই রহমত বরকত থেকে মাহরুম রাখা যায়। কোন মুসলমান যদি এদের জাহিলী কথাবার্তা যুক্তি শুনে তবে তার বিভ্রান্ত হওয়াটা স্বাভাবিক। এজন্য মুসলমানগণ পবিত্র শবে বরাত এর দলীল কখনোই সৌদি ইহুদী প্ররোচিত ও হেমপার সৃষ্ট ওহাবী বা তাদের দালালদের কাছে তালাশ করবে না। তালাশ করতে হবে ইসলামী শরীয়তে।
আর ইসলামী শরীয়ত এর প্রধান দুটি উৎস পবিত্র কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ এ পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কে অত্যন্ত সুন্দরভাবে বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে। সেগুলো দেখেই প্রকৃত দ্বীনদার ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ প্রায় পনেরশত বৎসর যাবত খুব উত্তমভাবে পবিত্র শবে বরাত পালন করে আসছেন। আর সেগুলোর অপব্যাখ্যা করে ওহাবীরা লানতগ্রস্থ হয়েছে।


কুরআন শরীফ ও তাফসীরগ্রন্থে শবে বরাতঃ

কুরআন শরীফ-এ সূরা দুখান-এর ৩-৫ নম্বর আয়াত শরীফ-এ বর্ণিত লাইলাতুম মুবারাকাহ ও হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত লাইলাতুন নিছফি মিন শাবান যা মশহুর শবে বরাত।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আমি বরকতময় রজনীতে (শবে বরাতে) কুরআন শরীফ নাযিল করেছি। আর আমি সতর্ককারী বা ভয় প্রদর্শনকারী। উক্ত রাত্রিতে আমার পক্ষ থেকে সমস্ত প্রজ্ঞাময় কাজগুলো ফায়সালা করা হয়। আর নিশ্চয়ই আমি প্রেরণকারী। (সূরা দুখান : আয়াত শরীফ ৩-৫)

উক্ত আয়াত শরীফ-এ বর্ণিত লাইলাতুম মুবারাকাহ দ্বারা লাইলাতুন নিছফি মিন শাবান বা লাইলাতুল বরাত (শবে বরাত)কে বুঝানো হয়েছে তা সকল বিশ্বখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থেই বর্ণিত রয়েছে।
যেমন লাইলাতুম মুবারাকাহ এর ব্যাখ্যায় তাফসীরগ্রন্থ তাফসীরে মাযহারী-এর ৮ম খন্ড-এর ৩৬৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, লাইলাতুম মুবারাকাহ হচ্ছে মধ্য শাবানের রাত্রি অর্থাৎ বরাতের রাত্রি। এ রাতে সারা বছরের কাজ-কর্মের ফায়ছালা করা হয়।
অত্র আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি লাইলাতুম মুবারাকাহ অর্থাৎ বরকতময় রাত্রি বলতে মধ্য শাবানের রাত অর্থাৎ শবে বরাতকে বুঝিয়েছেন। (ছফওয়াতুত তাফাসীর)
এ প্রসঙ্গে মুফাসসিরকুল শিরোমনি, রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি স্বীয় তাফসীরে উল্লেখ করেন, মহান আল্লাহ পাক লাইলাতুম মুবারকাহ অর্থাৎ বরকতময় রাত্রি বলতে মধ্য শাবানের রাত বা শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত অর্থাৎ শবে বরাতকে বুঝিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি এ রাতে সকল প্রজ্ঞা সম্পন্ন বিষয়ের ফায়ছালা করে থাকেন। (ছফওয়াতুত তাফাসীর, তাফসীরে খাযীন ৪র্থ খণ্ড/১১২ পৃষ্ঠা, তাফসীরে ইবনে আব্বাস, তাফসীরে মাযহারী ৮ম খণ্ড ৩৬৮, তাফসীরে মাযহারী ১০ম খণ্ড, তাফসীরে ইবনে কাছীর, তাফসীরে খাযিন, বাগবী, কুরতুবী, কবীর, ইবনে কাছীর, মাযহারী, রুহুল বয়ান, রুহুল মায়ানী, আবী সউদ, বাইযাবী, দূররে মানছূর, জালালাইন, কামালাইন, তাবারী, লুবাব, নাযমুদ দুরার, গরায়িব, মাদারিক)



হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মধ্য শাবানের রাতে (শবে বরাতে) ইবাদত করবে তার জন্যই সুসংবাদ এবং তার জন্য সমস্ত কল্যাণ। কাজেই, শবে বরাতের ফযীলতকে অস্বীকার বা বিরোধিতা করা কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফকেই অস্বীকার করা।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×